০৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শনিবার থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডিউটিতে ফিরবেন নার্সিং শিক্ষার্থীরা

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ডিউটিরত নার্সিং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন ও মারমুখি আচরণের ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাত থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে পুরো হাসপাতালজুড়ে ডিউটি থেকে কর্মবিরতিতে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রতিটা ওয়ার্ডের রোগী ও সরকারি স্টাফরা।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসানের আশ্বাস পেয়ে শনিবার থেকে আবারো ডিউটিতে ফিরবেন বলে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর ফরিদা ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের তত্বাবধায়কের কক্ষে আলোচনা করে নার্সিং শিক্ষার্থীসহ সকলের নিরাপত্তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। হাসপাতালে পুলিশ বক্স, আনসার সদস্য নিয়োগ করা হবে বলে একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এই আশ্বাস পেয়ে নার্সিং শিক্ষার্থীরা শনিবার থেকে আবারো ডিউটিতে ফিরবেন। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শনিবার থেকে ফিরবে।

অশালীন ও মারমুখী আচরণ : চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সিং শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতি

এর আগে, গত মঙ্গলবার রাতে গাইনি ওয়ার্ডে ১৩ নাম্বার বেডে রিমা নামের এক নারী রক্তশূণ্যতা নিয়ে ভর্তি হন। ডিউটিরতদের মধ্যে কেউ ওই রোগীর প্রেসক্রিপশনে অনুযায়ী ছোট কাগজে একটি ইনজেকশনের নাম লিখে কিনে আনতে বলেছিলেন। রাতে রোগীর স্বজন ফার্মেসি থেকে ইনজেকশন ক্রয় করতে গেলে পুনরায় ইনজেকশনের পাওয়ার লিখে আনতে বলেন। যেহেতু ওয়ার্ডে দিনে ৩ টা শিফটে ডিউটি করা হয়। সকালের যারা ডিউটিতে ছিলেন তারা রাতে ছিলেন না। এ নিয়েই ওই নারী রোগীর স্বামী ও স্বজনরা রাতে ডিউটির‍ত নার্স ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই খারাপ আচরন করেন। তারা নারী নার্সিং শিক্ষার্থীর মুখের মাস্ক খুলে দেন এবং অশালিন ও মারমুখি আচরণ করেন।

এ দিকে, সদর হাসপাতালের ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, পুরুষ-নারী মেডিসিন ওয়ার্ডে ডিউটি করছেন একজন সিনিয়র নার্স। নার্সিং শিক্ষার্থীরা না থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। এতে রোগীরা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়ার্ডের কয়েকজন সিনিয়র স্টাফ নার্সরা বলেন, নার্সিং শিক্ষার্থীরা না থাকায় একজন নার্স দিয়ে ওয়ার্ডে সেবা দিতে চরম কষ্টকর হয়ে হচ্ছে। দুই মেডিসিন ওয়ার্ডে দিনে ১৫০-২০০ রোগী ভর্তি হয়। এতে একজন নার্সের দ্বারা চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়।

তারা আরও বলেন, শুধু নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সাথেই না। প্রতিনিয়তই আমাদের সঙ্গে রোগীর স্বজনরা খারাপ আচরণ করেন। এর কোন প্রতিকার নেই। আমরা নিরাপত্তাহীনভাবে ডিউটি করছি। দ্রুত এর প্রতিকার চান তারা।

এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সার্জাৎ হাসানের সরকারি নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলে তার নাম্বারটি ব্যস্ত থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

আলমডাঙ্গায় ‘সমতায় তারুণ্য’ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

শনিবার থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডিউটিতে ফিরবেন নার্সিং শিক্ষার্থীরা

প্রকাশের সময় : ০১:৪১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ডিউটিরত নার্সিং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন ও মারমুখি আচরণের ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাত থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে পুরো হাসপাতালজুড়ে ডিউটি থেকে কর্মবিরতিতে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রতিটা ওয়ার্ডের রোগী ও সরকারি স্টাফরা।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসানের আশ্বাস পেয়ে শনিবার থেকে আবারো ডিউটিতে ফিরবেন বলে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর ফরিদা ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের তত্বাবধায়কের কক্ষে আলোচনা করে নার্সিং শিক্ষার্থীসহ সকলের নিরাপত্তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। হাসপাতালে পুলিশ বক্স, আনসার সদস্য নিয়োগ করা হবে বলে একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এই আশ্বাস পেয়ে নার্সিং শিক্ষার্থীরা শনিবার থেকে আবারো ডিউটিতে ফিরবেন। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শনিবার থেকে ফিরবে।

অশালীন ও মারমুখী আচরণ : চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সিং শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতি

এর আগে, গত মঙ্গলবার রাতে গাইনি ওয়ার্ডে ১৩ নাম্বার বেডে রিমা নামের এক নারী রক্তশূণ্যতা নিয়ে ভর্তি হন। ডিউটিরতদের মধ্যে কেউ ওই রোগীর প্রেসক্রিপশনে অনুযায়ী ছোট কাগজে একটি ইনজেকশনের নাম লিখে কিনে আনতে বলেছিলেন। রাতে রোগীর স্বজন ফার্মেসি থেকে ইনজেকশন ক্রয় করতে গেলে পুনরায় ইনজেকশনের পাওয়ার লিখে আনতে বলেন। যেহেতু ওয়ার্ডে দিনে ৩ টা শিফটে ডিউটি করা হয়। সকালের যারা ডিউটিতে ছিলেন তারা রাতে ছিলেন না। এ নিয়েই ওই নারী রোগীর স্বামী ও স্বজনরা রাতে ডিউটির‍ত নার্স ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই খারাপ আচরন করেন। তারা নারী নার্সিং শিক্ষার্থীর মুখের মাস্ক খুলে দেন এবং অশালিন ও মারমুখি আচরণ করেন।

এ দিকে, সদর হাসপাতালের ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, পুরুষ-নারী মেডিসিন ওয়ার্ডে ডিউটি করছেন একজন সিনিয়র নার্স। নার্সিং শিক্ষার্থীরা না থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। এতে রোগীরা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়ার্ডের কয়েকজন সিনিয়র স্টাফ নার্সরা বলেন, নার্সিং শিক্ষার্থীরা না থাকায় একজন নার্স দিয়ে ওয়ার্ডে সেবা দিতে চরম কষ্টকর হয়ে হচ্ছে। দুই মেডিসিন ওয়ার্ডে দিনে ১৫০-২০০ রোগী ভর্তি হয়। এতে একজন নার্সের দ্বারা চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়।

তারা আরও বলেন, শুধু নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সাথেই না। প্রতিনিয়তই আমাদের সঙ্গে রোগীর স্বজনরা খারাপ আচরণ করেন। এর কোন প্রতিকার নেই। আমরা নিরাপত্তাহীনভাবে ডিউটি করছি। দ্রুত এর প্রতিকার চান তারা।

এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সার্জাৎ হাসানের সরকারি নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলে তার নাম্বারটি ব্যস্ত থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।