০৬:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফুলবাড়িতে বাসর রাতেই স্বামীর মৃত্যু

শুক্রবার (২ মে) বিকেলে মেহেদী মাখা হাত, পরনে লাল শাড়ি ও অশ্রু ভেজা চোখের অপলক দৃষ্টিতে শেষবারের মতো মৃত স্বামীকে বিদায় জানান লাভলী আক্তার।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার কবিরমামুদ গ্রামের শাহ জামালের মেয়ে লাভলীর সঙ্গে একই উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের আছিয়ার বাজার এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে খালেকুজ্জামান ডিউটের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার সারাদিন দুই পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে খাওয়া-দাওসহ নানা আনন্দ-উৎসব চলছিল। বরের বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব এবং পাড়া প্রতিবেশীদের খাওয়া-দাওয়া শেষে আত্মীয়-স্বজনরাও অনেকেই বিদায় নিয়েছেন।

আরও জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে নববধূ মেহেদী মাখা হাত, লাল শাড়ি পরে বাসর (ফুলশয্যা) রাতে বিছানায় বসে বরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বর খালেকুজ্জামান ডিউট বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা শেষে রাত ১২টার দিকে বাসর ঘরে প্রবেশ করেন। এ

সময় নববধূর কাছে এক গ্লাস পানি চান এবং মুহূর্তে চিৎকার দিয়ে মেঝেতে পড়ে যান। পরে নববধূর আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে বর ডিউটকে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ পাননি। পরে বাড়ির লোকজন নিশ্চিত হন হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে।

নববধূর চাচা সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শাহ আলম বলেন, জামাই খালেকুজ্জামান প্রায় ১৮ বছর আগে প্রথম বিয়ে করেছেন। তার পূর্বের স্ত্রী জান্নাতি আক্তার মুক্তা। তার ঘরে ১ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজির সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়। কে জানতো বিয়ের রাতেই জামাইয়ের মৃত্যু হবে। অল্প বয়সে আমার ভাতিজি বিধবা হলো। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, সবই নিয়তির খেলা।

শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম মিয়া শোহেল খালেকুজ্জামান ডিউটের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিয়তির ওপরে তো কারো হাত নেই। তবে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা খুবই কম দেখা যায়। বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা! খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

ঋণের দায়ে গাভি কেড়ে নিলেন বিএনপি নেতা, বাছুর নিয়ে আদালতে নারগিস

ফুলবাড়িতে বাসর রাতেই স্বামীর মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১১:২৫:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

শুক্রবার (২ মে) বিকেলে মেহেদী মাখা হাত, পরনে লাল শাড়ি ও অশ্রু ভেজা চোখের অপলক দৃষ্টিতে শেষবারের মতো মৃত স্বামীকে বিদায় জানান লাভলী আক্তার।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার কবিরমামুদ গ্রামের শাহ জামালের মেয়ে লাভলীর সঙ্গে একই উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের আছিয়ার বাজার এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে খালেকুজ্জামান ডিউটের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার সারাদিন দুই পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে খাওয়া-দাওসহ নানা আনন্দ-উৎসব চলছিল। বরের বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব এবং পাড়া প্রতিবেশীদের খাওয়া-দাওয়া শেষে আত্মীয়-স্বজনরাও অনেকেই বিদায় নিয়েছেন।

আরও জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে নববধূ মেহেদী মাখা হাত, লাল শাড়ি পরে বাসর (ফুলশয্যা) রাতে বিছানায় বসে বরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বর খালেকুজ্জামান ডিউট বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা শেষে রাত ১২টার দিকে বাসর ঘরে প্রবেশ করেন। এ

সময় নববধূর কাছে এক গ্লাস পানি চান এবং মুহূর্তে চিৎকার দিয়ে মেঝেতে পড়ে যান। পরে নববধূর আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে বর ডিউটকে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ পাননি। পরে বাড়ির লোকজন নিশ্চিত হন হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে।

নববধূর চাচা সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শাহ আলম বলেন, জামাই খালেকুজ্জামান প্রায় ১৮ বছর আগে প্রথম বিয়ে করেছেন। তার পূর্বের স্ত্রী জান্নাতি আক্তার মুক্তা। তার ঘরে ১ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজির সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়। কে জানতো বিয়ের রাতেই জামাইয়ের মৃত্যু হবে। অল্প বয়সে আমার ভাতিজি বিধবা হলো। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, সবই নিয়তির খেলা।

শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম মিয়া শোহেল খালেকুজ্জামান ডিউটের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিয়তির ওপরে তো কারো হাত নেই। তবে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা খুবই কম দেখা যায়। বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা! খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা।