চুয়াডাঙ্গায় টেন্ডার বাদেই গণপূর্ত বিভাগের কোয়ার্টারে সামনে একটি বাবলা গাছ কাটার অভিযোগে জড়িত চার স্টাফকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয়া হয়েছে। তবে তাদের নাম প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনার পুরো অফিসজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
রোববার (১৮ মে) সকালে স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে থাকা বাবলা গাছ কাটার ঘটনা ঘটে। এরপর দুপুরে তাদেরকে শোকজ করা হয়। তবে যাদের শোকজ করা হয়েছে তাদের নাম জানাইনি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্তরা ও কর্তৃপক্ষ পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা বলছেন, গাছ কাটার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে আগেই মৌখিকভাবেই অবগত করা হয়েছিল।
তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা মৌখিক বিষয় নয়। গাছ কাটার বিষয়টি তারা অবগত নয়। টেন্ডারের মাধ্যমে ছাড়া গাছ কাটা যায় না।
অভিযুক্তরা হলেন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার (বড়বাবু) বিরাট কুমার বিশ্বাস, সিনিয়র হিসাব সহকারী (ক্যাশিয়ার) বায়েজিত বোস্তামি, গার্ড আমিনুল ইসলাম, কার্য সহকারী শামীম ফেরদৌস, অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর কবীর।
অভিযুক্ত বিরাট কুমার বিশ্বাস রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আমাদের কোয়ার্টারের সামনে পুকুরের পাশে দীর্ঘদিন যাবত গাছটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এখন বৃষ্টি বাদলের সময় বাচ্চারা খেলাধুলার তারা পড়ে যায়। এতে চলাচলে বিঘ্ন হওয়ায় কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানিয়েই আমরা আমিসহ ৫ জন স্টাফ বায়েজিদ বোস্তামি, আমিনুল ইসলাম, শামীম ফেরদৌস ও জাহাঙ্গীর কবীর মিলে গাছটি কাটার সিদ্ধান্ত নিই।
তিনি আরও বলেন, সকালে কয়েকজন লেবারের মাধ্যমে গাছটি কেটে আমরা অফিসের হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত নিই। তবে একজন লেবার বলেন, কাটপট্টির মধ্যে স’মিলে নিয়ে গাছটি কাটলে অনেক খরচ কমবে। এরপর তারাই নিয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ না জানলে অফিস চলাকালীন সময়ে আমাদের গাছ কাটার সাহস হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অভিযুক্ত শামীম ফেরদৌস রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বিরাট কুমার বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে গাছটি কাটা হচ্ছে। আমি বিরাট কুমারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে জানান, আমরা যে কয়জন স্টাফ আছি তারা সবাই এই বাবলার খড়ি ভাগাভাগি করে নেবো। আর পাশাপাশি পুকুরটাও পরিস্কার হয়ে যাবে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তবে বায়োলজি ও বিরাট কুমার বিশ্বাস স্বয়ংপূর্ণভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে আমি লোকমুখে শুনেছি।
অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর কবীর রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গাছটি দীর্ঘদিন যাবত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছি তাই কাটা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বায়েজিদ বোস্তামি ও আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা এ ঘটনায় সম্পর্কে কিছুই জানিনা। কারা গাছ কেটেছে সেটাও আমার জানা নেই।
চুয়াডাঙ্গা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মহসিন গণমাধ্যমকে বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। আমরা গাছ কাটার বিষয়টি অবগত ছিলাম না। তারা গাছ কেটে বাইরে স’মিলে নিয়ে গিয়েছিল। আবার নিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় চারজনকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। তবে চারজনের নাম জানতে চাইলে তিনি তা বলেননি।
এএইচ