০৯:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রিয়নবী সা.-এর মোহরে নবুওয়ত যেমন ছিল

মোহরে নবুওয়ত প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই কাঁধের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত একটি গোশতের টুকরা ছিল। নবীজির এই পবিত্র মোহর-এ নবুয়ত একাধিক সাহাবি দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেকের বর্ণনাও ভিন্ন ভিন্ন। তবে বর্ণনা ভিন্ন হলেও পারস্পরিক কোনো বিরোধ নেই। কারণ মূল জিনিস একটাই আর তা হলো একটি স্ফীত গোশতের টুকরা।

তবে সবাই তার দেখা ও উপলব্ধি অনুযায়ী বর্ণনা করেছেন এবং পরবর্তী সময়ে লোকদের বুঝাতে গিয়ে কোনো উপমা পেশ করেছেন। কোনো সাহাবির বর্ণনা হলো, এটি দেখতে কবুতরের ডিমের মতো। আবার কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় গোশতের টুকরার মতো। কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় একগুচ্ছ কেশের মতো।

পর্যায়ক্রমে সেগুলো উল্লেখ করা হলো—

পাখির ডিমের মতো

সায়িব ইবনে ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, একদা আমার খালা আমাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন। এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার ভাগ্নে অসুস্থ। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দোয়া করলেন। তারপর তিনি অজু করলেন। আমি তার অজুর অবশিষ্ট পানি পান করলাম এবং তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম।

সহসা তার দুই কাঁধের মধ্যস্থ মোহর-এ নবুয়তের প্রতি আমার দৃষ্টি পড়ে, যা দেখতে পাখির (কবুতরের) ডিমের মতো। (শামায়েলে তিরমিজি, ১২)

আবু নজর আওয়াকি (রহ.) বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মোহর-এ নবুয়ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বলেন, তা ছিল তাঁর পৃষ্ঠদেশের ওপর এক টুকরা বাড়তি গোশত। (শামায়েলে তিরমিজি, ১৭)

একগুচ্ছ কেশের মতো

আবু জায়েদ আমর বিন আখতাব আনসারি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেন, হে আবু জায়েদ! আমার কাছে এসো এবং আমার পৃষ্ঠদেশে হাত বুলাও। তখন আমি তার পিঠে হাত বুলাতে থাকলাম। এক পর্যায়ে আমার আঙুলগুলো মোহর-এ নবুওয়তের ওপর লেগে গেল। বর্ণনাকারী আমর বিন আখতাব রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বললেন, খাতাম (মোহর-এ নবুয়ত) কী জিনিস? তিনি বলেন, এক গুচ্ছ কেশ। (শামায়েলে তিরমিজি, ১৫)

পর্দার ঘুণ্টির মতো

সায়িব ইবন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমার খালা আমাকে নিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার ভাগিনা অসুস্থ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং বরকতের দোয়া করলেন। অতঃপর অজু করলেন। আমি তাঁর অজুর (অবশিষ্ট) পানি পান করলাম। তারপর তাঁর পেছনে দাঁড়ালাম। তখন আমি তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে নবুয়তের মোহর দেখতে পেলাম। তা ছিল পর্দার ঘুণ্টির মতো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০, ৩৫৪১)

লাল গোশতপিণ্ডের মতো

জাবির ইবনে সামুরা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে মোহর-এ নবুয়ত দেখেছি। আর তা যেন ছিল ডিমের মতো লাল গোশতপিণ্ড। (শামায়েলে তিরমিজি, ১৩)

One thought on “প্রিয়নবী সা.-এর মোহরে নবুওয়ত যেমন ছিল

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

চুয়াডাঙ্গায় মা ক্লিনিকের নার্স বিপাশার লা শ উদ্ধার

প্রিয়নবী সা.-এর মোহরে নবুওয়ত যেমন ছিল

প্রকাশের সময় : ০৮:২৮:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মোহরে নবুওয়ত প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই কাঁধের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত একটি গোশতের টুকরা ছিল। নবীজির এই পবিত্র মোহর-এ নবুয়ত একাধিক সাহাবি দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেকের বর্ণনাও ভিন্ন ভিন্ন। তবে বর্ণনা ভিন্ন হলেও পারস্পরিক কোনো বিরোধ নেই। কারণ মূল জিনিস একটাই আর তা হলো একটি স্ফীত গোশতের টুকরা।

তবে সবাই তার দেখা ও উপলব্ধি অনুযায়ী বর্ণনা করেছেন এবং পরবর্তী সময়ে লোকদের বুঝাতে গিয়ে কোনো উপমা পেশ করেছেন। কোনো সাহাবির বর্ণনা হলো, এটি দেখতে কবুতরের ডিমের মতো। আবার কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় গোশতের টুকরার মতো। কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় একগুচ্ছ কেশের মতো।

পর্যায়ক্রমে সেগুলো উল্লেখ করা হলো—

পাখির ডিমের মতো

সায়িব ইবনে ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, একদা আমার খালা আমাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন। এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার ভাগ্নে অসুস্থ। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দোয়া করলেন। তারপর তিনি অজু করলেন। আমি তার অজুর অবশিষ্ট পানি পান করলাম এবং তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম।

সহসা তার দুই কাঁধের মধ্যস্থ মোহর-এ নবুয়তের প্রতি আমার দৃষ্টি পড়ে, যা দেখতে পাখির (কবুতরের) ডিমের মতো। (শামায়েলে তিরমিজি, ১২)

আবু নজর আওয়াকি (রহ.) বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মোহর-এ নবুয়ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বলেন, তা ছিল তাঁর পৃষ্ঠদেশের ওপর এক টুকরা বাড়তি গোশত। (শামায়েলে তিরমিজি, ১৭)

একগুচ্ছ কেশের মতো

আবু জায়েদ আমর বিন আখতাব আনসারি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেন, হে আবু জায়েদ! আমার কাছে এসো এবং আমার পৃষ্ঠদেশে হাত বুলাও। তখন আমি তার পিঠে হাত বুলাতে থাকলাম। এক পর্যায়ে আমার আঙুলগুলো মোহর-এ নবুওয়তের ওপর লেগে গেল। বর্ণনাকারী আমর বিন আখতাব রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বললেন, খাতাম (মোহর-এ নবুয়ত) কী জিনিস? তিনি বলেন, এক গুচ্ছ কেশ। (শামায়েলে তিরমিজি, ১৫)

পর্দার ঘুণ্টির মতো

সায়িব ইবন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমার খালা আমাকে নিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার ভাগিনা অসুস্থ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং বরকতের দোয়া করলেন। অতঃপর অজু করলেন। আমি তাঁর অজুর (অবশিষ্ট) পানি পান করলাম। তারপর তাঁর পেছনে দাঁড়ালাম। তখন আমি তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে নবুয়তের মোহর দেখতে পেলাম। তা ছিল পর্দার ঘুণ্টির মতো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০, ৩৫৪১)

লাল গোশতপিণ্ডের মতো

জাবির ইবনে সামুরা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে মোহর-এ নবুয়ত দেখেছি। আর তা যেন ছিল ডিমের মতো লাল গোশতপিণ্ড। (শামায়েলে তিরমিজি, ১৩)