চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার নিশ্চিন্তপুরে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক পোল থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত মাদরাসাছাত্র তাসলিম উদ্দিন (২৩) মারা গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রজিউন।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। এর আগে রাতে অবস্থার অবনতি হলে ছেলেকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সকালে মারা যান তিনি।
নিহত তাসলিম উদ্দিন জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া গ্রামের মীরপাড়ার সেনেরহুদা জান্নাতুল খাদরা দাখিল মাদরাসার সহকারি শিক্ষক রকিব উদ্দিনের ছেলে। তিনি খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থী ফাজিল ২য় বর্ষের ছাত্র। তিন ভাইবোনের মধ্যে তাসলিম উদ্দিন ছিলেন সবার বড়।
নিহত তাসলিম উদ্দিনের বাবা রকিব উদ্দিন নিজেই তার ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন
জীবননগরে সহযোগিতা করতে গিয়ে একটি হাত হারাতে বসেছে মাদরাসা শিক্ষার্থী
এর আগে রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিশ্চিন্তপুর গ্রামে একটি বাড়ির দ্বিতীয়তলার জানালায় থাই গ্লাস লাগানোর সময় তাসলিম সহযোগিতা করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। পরদিন তার ডান হাতটি কেটে ফেলা হয়।
তাসলিমের বাবা রকিব উদ্দিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, রাতে অবস্থার অবনতি হলে ছেলেকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সকালে ছেলে মারা যায়। তার ডান হাতের তালু থেকে একদম পুড়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে শিরা শুকিয়ে যাওয়ায় হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়েছিল। কিডনি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
ঘটনার দিন রকিব উদ্দিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেছিলেন, কেউ তাকে সকালে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল এক বাড়ির জানালায় থাই গ্লাস লাগাতে সহযোগিতা করার জন্য। এ সময় অ্যালুমিনিয়ামের ফ্রেম অসাবধানতাবশত পাশের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক পোলের তারে ঠেকলে বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত হন।
আরও পড়ুন
জীবননগরে পানি আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল বৃদ্ধার
রকিব উদ্দিনের সহকর্মী শিক্ষক এফএ আলমগীর রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, ঘটনার পর থেকে ছেলের সঙ্গেই ছিলেন বাবা রকিব উদ্দিন। গতরাতে জরুরিভাবে ট্রেনযোগে চুয়াডাঙ্গাতে আসেন তিনি। আসার আগে ছেলে তাসলিম তার বাবাকে বলেছিলেন জরুরি কাজ না হলে বাড়িতে না যেতে। দ্রুতই আবার ফিরবেন বলে জানিয়েছিলেন বাবা রকিব উদ্দিন। এ সময় ছেলেকে নিজ হাতে পানি পান করিয়ে বাড়িতে ফেরেন। এটিই ছিল তার বাবার সঙ্গে ছেলের শেষ স্মৃতি।
আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা হাকিবুর রহমান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আজ রোববার সকালে তাসলিম উদ্দিন মারা গেছে বলে শুনেছি। মরদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে।
এএইচ