০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
দামুড়হুদায় রঞ্জুকে কুপিয়ে হত্যা

ছেলের জন্য নিয়ে যাওয়া ভাত খাওয়াতে পারলেন না বাবা, কান্না থামছেনা অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীর

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় উপজেলার বদনপুরে মাসুদ হাসান রঞ্জু (২৫) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছেন।

এর আগে, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ৭টার দিকে বদনপুর গ্রামের একটি কৃষি ক্ষেত থেকে রঞ্জুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত রঞ্জু বদনপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে। তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করে চাকুরী প্রত্যাশি ছিলেন। তার স্ত্রীর এক মাসের অন্ত:সত্ত্বা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয়রা বলছেন, রঞ্জুর খুবই সহজ সরল ছিলেন। পড়াশোনা শেষে চাকরি প্রত্যাশী ছিলেন। কে বা কারা পরিকল্পিতভাবে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একজন শিক্ষিত ছেলেকে এভাবে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে এটা এলাকার জন্য খুব দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি করছেন তারা।

নিহত রঞ্জুর বাবা আজিজুর রহমান জানান, আমার ছেলে নিজেই কৃষি কাজ করতেন। আমার ছেলের সঙ্গে
কারোর কোন শক্রতা নেই। গতকাল রোববার ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করছিল ছেলে। দুপুরে ছেলের জন্য খাবার নিয়ে মাঠে গিয়ে তাকে খুঁজে না পেয়ে বাড়ি ফিরে যায়। সন্ধ্যায় মাগরিবের পরেও বাড়ি না ফেরায় কয়েকজনকে সাথে নিয়ে মাঠে খোঁজাখুঁজির সময় ছেলের কোপানো ক্ষত-বিক্ষত লাশ পড়ে থাকতে দেখি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

নিহত রনজুর পিতা আজিজুল রহমান আরও বলেন, ‘ ছেলের জন্য নিয়ে যাওয়া ভাত খাওয়াতে পারলাম না। জীবিত অবস্থায় শেষ দেখাটাও দেখতে পেলাম না। এতই অভাগা বাবা আমি। কখনো ভাবতেই পারিনি আমার ছেলেকে এভাবে কে বা কারা হত্যা করবে। আমি এবং আমার ছেলের কারো সাথে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তাহলে কেন এমন হলো। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।’

স্থানীয় একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, নারীঘটিত অর্থাৎ কারোর অবৈধ পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক জেনে যাওয়ায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশের সঠিক তদন্তে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার স্ত্রী এক মাসের অন্ত:সত্ত্বা বলে জেনেছি। প্রাথমিকভাবে এই হত্যাকান্ডের কারণ জানা যায়নি। পুলিশ তদন্ত করছে৷ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার সকালে সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

One thought on “ছেলের জন্য নিয়ে যাওয়া ভাত খাওয়াতে পারলেন না বাবা, কান্না থামছেনা অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীর

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

চুয়াডাঙ্গায় মা ক্লিনিকের নার্স বিপাশার লা শ উদ্ধার

দামুড়হুদায় রঞ্জুকে কুপিয়ে হত্যা

ছেলের জন্য নিয়ে যাওয়া ভাত খাওয়াতে পারলেন না বাবা, কান্না থামছেনা অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীর

প্রকাশের সময় : ০৯:১৩:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় উপজেলার বদনপুরে মাসুদ হাসান রঞ্জু (২৫) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছেন।

এর আগে, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ৭টার দিকে বদনপুর গ্রামের একটি কৃষি ক্ষেত থেকে রঞ্জুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত রঞ্জু বদনপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে। তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করে চাকুরী প্রত্যাশি ছিলেন। তার স্ত্রীর এক মাসের অন্ত:সত্ত্বা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয়রা বলছেন, রঞ্জুর খুবই সহজ সরল ছিলেন। পড়াশোনা শেষে চাকরি প্রত্যাশী ছিলেন। কে বা কারা পরিকল্পিতভাবে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একজন শিক্ষিত ছেলেকে এভাবে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে এটা এলাকার জন্য খুব দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি করছেন তারা।

নিহত রঞ্জুর বাবা আজিজুর রহমান জানান, আমার ছেলে নিজেই কৃষি কাজ করতেন। আমার ছেলের সঙ্গে
কারোর কোন শক্রতা নেই। গতকাল রোববার ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করছিল ছেলে। দুপুরে ছেলের জন্য খাবার নিয়ে মাঠে গিয়ে তাকে খুঁজে না পেয়ে বাড়ি ফিরে যায়। সন্ধ্যায় মাগরিবের পরেও বাড়ি না ফেরায় কয়েকজনকে সাথে নিয়ে মাঠে খোঁজাখুঁজির সময় ছেলের কোপানো ক্ষত-বিক্ষত লাশ পড়ে থাকতে দেখি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

নিহত রনজুর পিতা আজিজুল রহমান আরও বলেন, ‘ ছেলের জন্য নিয়ে যাওয়া ভাত খাওয়াতে পারলাম না। জীবিত অবস্থায় শেষ দেখাটাও দেখতে পেলাম না। এতই অভাগা বাবা আমি। কখনো ভাবতেই পারিনি আমার ছেলেকে এভাবে কে বা কারা হত্যা করবে। আমি এবং আমার ছেলের কারো সাথে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তাহলে কেন এমন হলো। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।’

স্থানীয় একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, নারীঘটিত অর্থাৎ কারোর অবৈধ পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক জেনে যাওয়ায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশের সঠিক তদন্তে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার স্ত্রী এক মাসের অন্ত:সত্ত্বা বলে জেনেছি। প্রাথমিকভাবে এই হত্যাকান্ডের কারণ জানা যায়নি। পুলিশ তদন্ত করছে৷ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার সকালে সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।