ঈশ্বরদীতে দুই মালবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে । তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর থেকে ঢাকা-খুলনা রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
রাতেই ঈশ্বরদীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ কুমার দাস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) টি এম রাহসান কবীর ও ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সংঘর্ষের ঘটনা তদন্ত করতে ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কার্যালয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহ সূফী নুর মোহাম্মদ।
তিনি জানান, ট্রেন দুর্ঘটনায় অসতর্কতার জন্য প্রাথমিকভাবে এ ট্রেনের চালক, সহকারী চালক এবং অন-ডিউটি সহকারী স্টেশন মাস্টারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের থেকে লিখিত জবাব চাওয়া হবে।

দুর্ঘটনার কারণ গভীরভাবে তদন্ত করতে সিনিয়র সহকারী সংকেত প্রকৌশলী, সহকারী পরিবহণ কর্মকর্তা, সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে ৪ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ট্রেন দুর্ঘটনার পর সেহরিতে বিপদেপড়া যাত্রীদের ‘পকেট কাটল’ দোকানিরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ও অসচেতনতার কারণে যাত্রীদের এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। উপায় না পেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে খাবার ক্রয় করেই সেহরি খেতে হয়েছে।
সীমান্ত এক্সপ্রেসের যাত্রীর আশিক রানা, রাশেদুজ্জামানসহ কয়েকজন ৩ দিনের ছুটিতে চুয়াডাঙ্গার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসছিলেন। তারা জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে শুনি ঈশ্বরদীতে ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। এখানে এসে সেহরির সময় হয়। দোকানে গিয়ে দেখি খাবারের দাম তিনগুনেরও বেশি নিচ্ছে। দাম এতো কেন জানতে চাইলে দোকানিরা বলছেন, নিলে নেন না নিলে কেটে পড়েন। লোকের অভাব নেই। খাবারের কমতি তাই দাম বেশি নিচ্ছি। আসলে আমরা তো অসহায় হয়ে পড়েছি। বাধ্য হয়ে বেশি দাম হলেও খাবার কিনেছি।
চিত্রা এক্সপ্রেসের যাত্রী মহুয়া আক্তার মীম বলেন, ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম ভেবেছিলাম বাড়িতে গিয়ে সেহরি খাব। কাছে তেমন টাকাও নেই। যে টাকা ছিল সেই টাকা দিয়ে খাবার কিনতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি দাম বেশি। অল্প করে খাবার কিনে সেহরি করলাম।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে ঈশ্বরদী রেল ইয়ার্ড থেকে মালবাহী ট্রেনের শানটিং চলছিল। ইতোমধ্যে ঈশ্বরদী রেলইয়ার্ড থেকে অপর আরেকটি তেলবাহী ট্রেন (ফাঁকা) পশান অর্ডার মনে করে ভুলবশত (লাইন ক্লিয়ার পেয়েছে মনে করে) খুলনা অভিমুখে যাত্রা করে।
এতে মালবাহী দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে মালবাহী ট্রেনের একটি ওয়াগনের চার চাকা তেলবাহী ট্রেনের লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের ছয় চাকা লাইনচ্যুত হয়। ঈশ্বরদী লোকোমোটিভ থেকে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। উদ্ধার কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে। কিছু লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে মেরামত হয়ে যাবে।
এএইচ
Hello, I have a question