১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় শিক্ষকের বাড়িতে মল ও পটকা নিক্ষেপ, শাস্তির মুখে ৯ শিক্ষার্থী

গতকাল রোববার (২৪ মার্চ) রাতে সদরের খাড়াগোদা গ্রামের শিক্ষক হারুন আর রশিদের বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি অত্র বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক। এঘটনায় আজ সোমবার (২৫ মার্চ) থেকে অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস থেকে সাসপেন্ড করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, এঘটনায় গ্রামজুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী শিক্ষক হারুন আর রশিদ রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গতকাল রোববার স্কুল চলাকালিন সময়ে শ্রেণী কক্ষের (ভোকেশনাল ট্রেড) মধ্যে পটকা ফুটানোর শব্দ শুনতে পাই। এসময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন আমাকে সহ তিন শিক্ষককে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য মৌখিক নির্দেশনা দেন।

এরপর আমরা শিক্ষার্থীদের ব্যাগ তল্লাশি করে পটকার উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়ায় ৯ শিক্ষার্থীকে ম্যানিজিং কমিটির সভাপতির নিকট হাজির করি। এরা দশম ও নবম শ্রেনির একজন করে এবং বাকি ৭জন অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। তারা সকলে নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে সভাপতি তাদের সাধারন ক্ষমা করে দেন। এছাড়া প্রায়ই বিদ্যালয় ছুটি হলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে পটকা ছুড়ে তারা।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার দিন রাত ৯টা থেকে ১০ টার মধ্যে ওই ৯ শিক্ষার্থী আমার বাড়ীতে কচুপাতায় নিয়ে আসা নিজেদের মল ও গোবর নিক্ষেপ করে। এছাড়া অসংখ্য পটকা এক সঙ্গে ধরিয়ে আমার বাড়িতে ছুড়লে আমার পরিবার অতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এরপরই আমি স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প ও আমার বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানায়। পরে ওই শিক্ষার্থীরা আবারো তাদের দোষ স্বীকার করেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম এই ৯ শিক্ষার্থীকে কিশোর গ্যাং উল্লেখ করে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, এই কিশোর গ্যাং বিদ্যালয়ের ভকেশনাল ট্রেড কক্ষে বিকট জোরে পটকা ফোটায়। এতে বিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে পড়ে। পরে নির্দেশনা অনুযায়ী হারুন আর রশিদ সহ তিন শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সনাক্ত করে হাজির করে। তারা ভুল শিকার করলে ক্ষমা করে দেয়া হয়। এরপরই রাতে শিক্ষক হারুনের বাড়িরে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায় এই ৯ শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ সোমবার ৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাচ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসলে সভাপতির মৌখিত নির্দেশনা অনুযায়ী তাদেরকে ক্লাস সাসপেন্ড করা করেছি। পরবর্তী অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীর শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আগামীকাল এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গতকাল রোববার আমি বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকাকালিন সময়ে পটকা ফোটানোর ঘটনা ঘটে। আমি তিন শিক্ষককে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য মৌখিক নির্দেশনা দিলে তারা অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীকে আমার সামনে নিয়ে আসেন।

তারা ভুল শিকার করলে আমি তাদের সাধারণ ক্ষমা করে দিই। এরপরই ওই শিক্ষার্থীদের চার্জ করা শিক্ষক হারুন আর রশিদের বাড়ীতে রাতে নিজেদের মল-গোবর, পটকা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটিয়েছে। এটা আসলে ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এ বিষয়ে আমরা আগামীকাল বিদ্যালয়ে একটি সভা করব। এরপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

One thought on “চুয়াডাঙ্গায় শিক্ষকের বাড়িতে মল ও পটকা নিক্ষেপ, শাস্তির মুখে ৯ শিক্ষার্থী

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

জনপ্রিয় গায়ক নোবেল গ্রেপ্তার

চুয়াডাঙ্গায় শিক্ষকের বাড়িতে মল ও পটকা নিক্ষেপ, শাস্তির মুখে ৯ শিক্ষার্থী

প্রকাশের সময় : ১০:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

গতকাল রোববার (২৪ মার্চ) রাতে সদরের খাড়াগোদা গ্রামের শিক্ষক হারুন আর রশিদের বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি অত্র বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক। এঘটনায় আজ সোমবার (২৫ মার্চ) থেকে অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস থেকে সাসপেন্ড করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, এঘটনায় গ্রামজুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী শিক্ষক হারুন আর রশিদ রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গতকাল রোববার স্কুল চলাকালিন সময়ে শ্রেণী কক্ষের (ভোকেশনাল ট্রেড) মধ্যে পটকা ফুটানোর শব্দ শুনতে পাই। এসময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন আমাকে সহ তিন শিক্ষককে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য মৌখিক নির্দেশনা দেন।

এরপর আমরা শিক্ষার্থীদের ব্যাগ তল্লাশি করে পটকার উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়ায় ৯ শিক্ষার্থীকে ম্যানিজিং কমিটির সভাপতির নিকট হাজির করি। এরা দশম ও নবম শ্রেনির একজন করে এবং বাকি ৭জন অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। তারা সকলে নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে সভাপতি তাদের সাধারন ক্ষমা করে দেন। এছাড়া প্রায়ই বিদ্যালয় ছুটি হলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে পটকা ছুড়ে তারা।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার দিন রাত ৯টা থেকে ১০ টার মধ্যে ওই ৯ শিক্ষার্থী আমার বাড়ীতে কচুপাতায় নিয়ে আসা নিজেদের মল ও গোবর নিক্ষেপ করে। এছাড়া অসংখ্য পটকা এক সঙ্গে ধরিয়ে আমার বাড়িতে ছুড়লে আমার পরিবার অতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এরপরই আমি স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প ও আমার বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানায়। পরে ওই শিক্ষার্থীরা আবারো তাদের দোষ স্বীকার করেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম এই ৯ শিক্ষার্থীকে কিশোর গ্যাং উল্লেখ করে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, এই কিশোর গ্যাং বিদ্যালয়ের ভকেশনাল ট্রেড কক্ষে বিকট জোরে পটকা ফোটায়। এতে বিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে পড়ে। পরে নির্দেশনা অনুযায়ী হারুন আর রশিদ সহ তিন শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সনাক্ত করে হাজির করে। তারা ভুল শিকার করলে ক্ষমা করে দেয়া হয়। এরপরই রাতে শিক্ষক হারুনের বাড়িরে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায় এই ৯ শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ সোমবার ৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাচ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসলে সভাপতির মৌখিত নির্দেশনা অনুযায়ী তাদেরকে ক্লাস সাসপেন্ড করা করেছি। পরবর্তী অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীর শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আগামীকাল এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গতকাল রোববার আমি বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকাকালিন সময়ে পটকা ফোটানোর ঘটনা ঘটে। আমি তিন শিক্ষককে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য মৌখিক নির্দেশনা দিলে তারা অভিযুক্ত ৯ শিক্ষার্থীকে আমার সামনে নিয়ে আসেন।

তারা ভুল শিকার করলে আমি তাদের সাধারণ ক্ষমা করে দিই। এরপরই ওই শিক্ষার্থীদের চার্জ করা শিক্ষক হারুন আর রশিদের বাড়ীতে রাতে নিজেদের মল-গোবর, পটকা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটিয়েছে। এটা আসলে ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এ বিষয়ে আমরা আগামীকাল বিদ্যালয়ে একটি সভা করব। এরপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।