চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক রাতে পৃথকস্থানে সাপের কামড়ে এক স্কুলছাত্রসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে দুইজন নারী সাপের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে সদর হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে।
আহতরা হলেন, জীবননগর উপজেলার পেয়ারাতলা এলাকার আশরাফ আলীর মেয়ে ইভা খাতুন (২১) ও দর্শনা পৌরসভাধীন প্রতাবপুর গ্রামের জাহিদ হাসানের স্ত্রী কনিকা খাতুন (২৬)।
নিহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ডিঙ্গেদহের হাটখোলা এলাকার মাটিকাটা শ্রমিক জয়দেব পালের ছেলে ষষ্ট শ্রেনির শিক্ষার্থী দেবাশীষ পাল (১২) ও কুতুবপুর ইউনিয়নের ভুলটিয়া গ্রামের বুলা মিয়ার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী রাজন হোসেন (১৬)।
নিহত দেবাশীষ পালের মা কিরণ মালা মুঠোফোনে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, বুধবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাত অনুমানিক আড়াইটার দিকে ছেলে হঠাৎ করেই কয়কেবার বমি করে। জিজ্ঞাসা করলে ছেলে জানায় তাকে কিছুতে কামড়িয়েছে। এরপর ক্ষতস্থানে দেখেই সাপে কামড়িয়েছে বলে নিশ্চিত হয়। পরে স্থানীয় ওঝার নিকট নিলে আরও অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে ৪টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সকাল ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলে মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, তিন ছেলের মধ্যে দেবাশীষ পাল ছিল মেজো ছেলে। সে অত্যান্ত মেধাবী ছিল। রাতে প্রথমে আরশোলায় কামড় দিয়েছে ভেবে ছেলে ঘুমিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর বমি শুরু হলে বিষয়টি টের পায়। আজ দুপুর ২টার দিকে মৃতদেহের সৎকার সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।
অপর দিকে, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মানিকুজ্জামান নিহত রাজনের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে মুঠোফোনে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, রাজন ছিল বাকপ্রতিবন্ধী। সে কানে শুনতো না, কথাও বলতে পারতো না। রাত ৩টার দিকে সাপের কামড় দিলে সেই সাপ নিজেই পিটিয়ে হত্যা করে রাজন। পরে পরিবারের সদস্যরা টের পেলে তাকে স্থানীয় ওঝার নিকট নিয়ে গেলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেখান থেকে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে, এর ১০ মিনিট পর চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. নাজমুস সাকিব রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, দুজনের শরীরে সাপের কামড়ের ক্ষত চিহৃ পাওয়া গেছে। এবং প্রাথমিক আলামত দেখে দুজনকেই সাপের কামড়ে শিকার হয়েছে বলে মনে হয়েছে। তবে তাদেরকে অনেক দেরিতে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনার পরই হাসপাতালে নিয়ে আসলে হয়তো তাদেরকে বাঁচানো সম্ভব হতো।
এএইচ