১২:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রসূতির মৃত্যু : চুয়াডাঙ্গায় এ.আর হাসপাতালের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ, তদন্ত কমিটি গঠন

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সার্জ্জাৎ হাসান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ. আর হাসপাতালের সকল কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র গাইনি কনসালটেন্ট ডা. হোসনা জারি তাহমিনা আঁখি ও সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. শামীমা ইয়াসমিন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এর আগে চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ বিভিন্ম প্রিন্ট দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসেন। গতকাল সোমবার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে একটি টিম এ.আর হাসপাতালে পরিদর্শন করেন। এরপরই সিভিল সার্জন ওই প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন। এবং তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটির অনুমোদন দেন।

শনিবার (৮ জুন) সকাল ১০ টার দিকে কোন সার্জন এবং অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়াই প্রসূতি রুপালী খাতুন (২৮) নামের এক প্রসূতির অস্ত্রোপচার (সিজারিয়ান অপারেশন) করেছেন অভিযোগ উঠে এ.আর হাসপাতালের মালিক ডা. রফি উদ্দিন রফিকের বিরুদ্ধে। এরপর প্রসূতির অবস্থা বেগতিক হলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডেকে কুষ্টিয়ায় পাঠানো হয়। পথের মধ্যেই ওই নারীর মৃত্যু হয়।

মৃত রুপালী খাতুন চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা গ্রামের ফরজ আলীর স্ত্রী।

রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে নারাজ। অভিযোগ করলে রুপালী খাতুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হতে পারে বলে কোন অভিযোগ করবেন না বলে গত রোববার মাথাভাঙ্গাকে জানিয়েছিলেন রুপালী খাতুনের এক স্বজন।

অপর দিকে রুপালী খাতুনের মৃত্যুর পরই হাসপাতাল এলাকায় গুঞ্জন উঠে এই অস্ত্রোপচারটি করেছেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এই বিষয়ে ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, এই অস্ত্রোপচার আমি করিনি। উনি (ডা. রফি উদ্দিন রফিক) কোন সার্জন চিকিৎসক নয়। তিনি অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়াই রোগীদের অস্ত্রোপচার করেন বলে জেনেছি। এছাড়াও ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, আমার নাম করে তিনি অস্ত্রোপচার করেন। এক কথায় চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন সেজে তিনি নিজেই রোগীদের অস্ত্রোপচার করেন বলে একাধিক অভিযোগ আছে। এতে আমার মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ জন্য আমি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।

তিনি আরও বলেন, যে প্রসূতি মারা গেছেন ওই রোগীর তৃতীয় সিজার ছিল। আর তৃতীয় সিজারের জন্য অবশ্যই একজন সার্জন থাকতে হবে। তিনি একাই অস্ত্রোপচার করেছেন, এতো দুঃসাহস কিভাবে হয় তার। গাফলতির কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করি।

এদিকে, ডা. রফি উদ্দিন রফিকের নাম্বারে একাধিক কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

গত রোববার প্রসূতির এক স্বজন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেছিলেন, অভিযোগ করে কি হবে? আমরা কি তাকে ফিরে পাব? অভিযোগ করলে মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে হবে। আমরা চাইনা লাশ কাটাকাটি হোক। গত শনিবার রাতেই রুপালী খাতুনের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।”

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ট্রাক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষে ভ্যানচালক নি হ ত

প্রসূতির মৃত্যু : চুয়াডাঙ্গায় এ.আর হাসপাতালের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশের সময় : ১২:১৪:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সার্জ্জাৎ হাসান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ. আর হাসপাতালের সকল কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র গাইনি কনসালটেন্ট ডা. হোসনা জারি তাহমিনা আঁখি ও সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. শামীমা ইয়াসমিন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এর আগে চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ বিভিন্ম প্রিন্ট দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসেন। গতকাল সোমবার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে একটি টিম এ.আর হাসপাতালে পরিদর্শন করেন। এরপরই সিভিল সার্জন ওই প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন। এবং তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটির অনুমোদন দেন।

শনিবার (৮ জুন) সকাল ১০ টার দিকে কোন সার্জন এবং অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়াই প্রসূতি রুপালী খাতুন (২৮) নামের এক প্রসূতির অস্ত্রোপচার (সিজারিয়ান অপারেশন) করেছেন অভিযোগ উঠে এ.আর হাসপাতালের মালিক ডা. রফি উদ্দিন রফিকের বিরুদ্ধে। এরপর প্রসূতির অবস্থা বেগতিক হলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডেকে কুষ্টিয়ায় পাঠানো হয়। পথের মধ্যেই ওই নারীর মৃত্যু হয়।

মৃত রুপালী খাতুন চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা গ্রামের ফরজ আলীর স্ত্রী।

রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে নারাজ। অভিযোগ করলে রুপালী খাতুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হতে পারে বলে কোন অভিযোগ করবেন না বলে গত রোববার মাথাভাঙ্গাকে জানিয়েছিলেন রুপালী খাতুনের এক স্বজন।

অপর দিকে রুপালী খাতুনের মৃত্যুর পরই হাসপাতাল এলাকায় গুঞ্জন উঠে এই অস্ত্রোপচারটি করেছেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এই বিষয়ে ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, এই অস্ত্রোপচার আমি করিনি। উনি (ডা. রফি উদ্দিন রফিক) কোন সার্জন চিকিৎসক নয়। তিনি অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়াই রোগীদের অস্ত্রোপচার করেন বলে জেনেছি। এছাড়াও ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, আমার নাম করে তিনি অস্ত্রোপচার করেন। এক কথায় চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন সেজে তিনি নিজেই রোগীদের অস্ত্রোপচার করেন বলে একাধিক অভিযোগ আছে। এতে আমার মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ জন্য আমি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।

তিনি আরও বলেন, যে প্রসূতি মারা গেছেন ওই রোগীর তৃতীয় সিজার ছিল। আর তৃতীয় সিজারের জন্য অবশ্যই একজন সার্জন থাকতে হবে। তিনি একাই অস্ত্রোপচার করেছেন, এতো দুঃসাহস কিভাবে হয় তার। গাফলতির কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করি।

এদিকে, ডা. রফি উদ্দিন রফিকের নাম্বারে একাধিক কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

গত রোববার প্রসূতির এক স্বজন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেছিলেন, অভিযোগ করে কি হবে? আমরা কি তাকে ফিরে পাব? অভিযোগ করলে মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে হবে। আমরা চাইনা লাশ কাটাকাটি হোক। গত শনিবার রাতেই রুপালী খাতুনের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।”