১১:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
দামুড়হুদায় সড়ক দুর্ঘটনা

এক সঙ্গে বেড়ে উঠা, একই সঙ্গে ঝরল প্রাণ, পাশাপাশি হলো দুই বন্ধু দাফন

দুই বন্ধু নাহিদ ও সুইট। এক গ্রামে বসবাস। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে খেলেছেন। একই বিদ্যালয়ে পড়েছেন। মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁরা পৃথিবী ছেড়ে চলেও গেলেন একসঙ্গে। স্বজনেরা দুই বন্ধুকে পাশাপাশি কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পুরাতন বাস্তপুর গ্রামের কবরস্থানে দুই বন্ধুর পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে।

এর আগে, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে পুরাতন বাস্তপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে নাহিদ ও একই এলাকার সেলিম উদ্দিনের ছেলে সুইট দুই বন্ধু মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন। এ সময় পুরাতন বাস্তপুর গ্রামে একটি ট্রাক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে দুই বন্ধু মারা যান।

এদিকে, ওই রাতেই খবর পেয়ে দামুড়দা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুজনের মরদহ উদ্ধার করে। আইনের প্রক্রিয়া শেষে দুজনের মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

অপরদিকে, বাস্তবপুর গ্রামে দুই বন্ধুর একসাথে মৃত্যুতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহত দুইজনের বাবা-বাবা যেন পাগল প্রায়।

গতকাল রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে দুই বন্ধুকে পাশাপাশি দাফন করা হয়। তাদের অকাল মৃত্যুতে দুই পরিবার ও স্বজনদের কান্নায় এলাকা ভারী হয়ে ওঠে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, নাহিদ চার ভাই-বোনের মধ্যে মেজো। তিনি এবার পুরাতন বাস্তুপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। পরিবারের স্বপ্ন ছিল ছেলেকে নিয়ে, কিন্তু মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে যায়।

অপরদিকে, সুইট ছিলেন দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়। ছয় মাস আগে তিনি সৌদি আরব থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এরই মধ্যে তার মৃত্যু তার পরিবারে শোক নামিয়ে এনেছে। নাহিদের ছোট ভাইও প্রবাসে থাকেন।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা জানায়, সুইট ও নাহিদ দুজন খুব ভালো বন্ধু। ছোট থেকেই দুজন একসাথে বেড়ে উঠেছে৷ সেখানে যেত দুজন একসাথে যেতো। দুজনই খুব ভালো ছেলে ছিল। সবার সঙ্গে ভালো আচরণ করতো। তাঁদের বেড়ে ওঠা, চলাফেরা, পড়াশোনা একই সঙ্গে ও একই প্রতিষ্ঠানে। এভাবে দুজন একসঙ্গে চলে যাবেন, কেউ ভাবতে পারেননি তাঁরা। তাদের মৃত্যু গ্রামবাসি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, অভিযোগ না থাকায় আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।। তবে ট্রাক্টরটি পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

বাংলাদেশে যাত্রা শুরু স্টার লিংকের : খরচ কত, কিভাবে পাওয়া যাবে?

দামুড়হুদায় সড়ক দুর্ঘটনা

এক সঙ্গে বেড়ে উঠা, একই সঙ্গে ঝরল প্রাণ, পাশাপাশি হলো দুই বন্ধু দাফন

প্রকাশের সময় : ১১:১৫:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দুই বন্ধু নাহিদ ও সুইট। এক গ্রামে বসবাস। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে খেলেছেন। একই বিদ্যালয়ে পড়েছেন। মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁরা পৃথিবী ছেড়ে চলেও গেলেন একসঙ্গে। স্বজনেরা দুই বন্ধুকে পাশাপাশি কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পুরাতন বাস্তপুর গ্রামের কবরস্থানে দুই বন্ধুর পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে।

এর আগে, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে পুরাতন বাস্তপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে নাহিদ ও একই এলাকার সেলিম উদ্দিনের ছেলে সুইট দুই বন্ধু মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন। এ সময় পুরাতন বাস্তপুর গ্রামে একটি ট্রাক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে দুই বন্ধু মারা যান।

এদিকে, ওই রাতেই খবর পেয়ে দামুড়দা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুজনের মরদহ উদ্ধার করে। আইনের প্রক্রিয়া শেষে দুজনের মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

অপরদিকে, বাস্তবপুর গ্রামে দুই বন্ধুর একসাথে মৃত্যুতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহত দুইজনের বাবা-বাবা যেন পাগল প্রায়।

গতকাল রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে দুই বন্ধুকে পাশাপাশি দাফন করা হয়। তাদের অকাল মৃত্যুতে দুই পরিবার ও স্বজনদের কান্নায় এলাকা ভারী হয়ে ওঠে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, নাহিদ চার ভাই-বোনের মধ্যে মেজো। তিনি এবার পুরাতন বাস্তুপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। পরিবারের স্বপ্ন ছিল ছেলেকে নিয়ে, কিন্তু মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে যায়।

অপরদিকে, সুইট ছিলেন দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়। ছয় মাস আগে তিনি সৌদি আরব থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এরই মধ্যে তার মৃত্যু তার পরিবারে শোক নামিয়ে এনেছে। নাহিদের ছোট ভাইও প্রবাসে থাকেন।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা জানায়, সুইট ও নাহিদ দুজন খুব ভালো বন্ধু। ছোট থেকেই দুজন একসাথে বেড়ে উঠেছে৷ সেখানে যেত দুজন একসাথে যেতো। দুজনই খুব ভালো ছেলে ছিল। সবার সঙ্গে ভালো আচরণ করতো। তাঁদের বেড়ে ওঠা, চলাফেরা, পড়াশোনা একই সঙ্গে ও একই প্রতিষ্ঠানে। এভাবে দুজন একসঙ্গে চলে যাবেন, কেউ ভাবতে পারেননি তাঁরা। তাদের মৃত্যু গ্রামবাসি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, অভিযোগ না থাকায় আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।। তবে ট্রাক্টরটি পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।