০৯:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা শহরে দিনেদুপুরে নারীকে মারধর করে ৫৭ হাজার টাকা ছিনতাই, অবশেষে ধরা

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ইজিবাইক থেকে নারীর ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার অভিযোগে সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে আব্দুস সালাম মল্লিক নামে এক ছিনতাইকারীকে আটক করেছে।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার জাফরপুরের নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আয়োজিত এক সাংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় পুলিশ।

আটক আব্দুস সালাম মল্লিক ওই এলাকার মৃত চাঁদ আলী মল্লিকের ছেলে। এসময় তার লুঙ্গির কোমরে ছিনতাই করা ভাগের ১৫ হাজার টাকা ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) কনক কান্তি দাস বলেন, রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাধীন ভিমরুল্লা গ্রামের আরিফুল ইসলামের মেয়ে আরিফা খাতুন তার শাশুড়ির সাথে নিয়ে শহরের ঈদগাহপাড়ায় অবস্থিত একটি এনজিও থেকে লোন নেয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন।

এরপর ৩টা ১০ মিনিটের দিকে তারা দুজন ওই এনজিও থেকে লোনের ৬০ হাজার টাকা নিয়ে পাখিভ্যানযোগে বড়বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

পথিমধ্যে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভুক্তভোগী আরিফা খাতুন তার স্বামী চুয়াডাঙ্গার সাহিদ প্যালেসে কর্মরত আকাশ আলীকে ওই টাকার মধ্যে ৩ হাজার টাকা দেন। বাকী ৫৭ হাজার টাকাসহ একটি ব্যাগ আরিফা তার শাশুড়ির হাতে দেন।

এরপর ওই ভ্যানযোগে তিনি বড়বাজার হয়ে কোর্ট মোড় এলাকায় নামেন। সেখান থেকে একটি ইজিবাইকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনাকালে পথিমধ্যে নতুন বাজারের সন্নিকটে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছান। স্কুলের সামনের রাস্তায় গতিরোধক থাকায় ইজিবাইকটির গতি কমে আসে। ওই সুযোগে একটি মোটরসাইকেলে দুজন ছিনতাইকারী আরিফার শাশুড়ির নিকট থাকা টাকার ব্যাগটি ধরে টান দেন। এতে তিনি টাকার ব্যাগসহ ইজিবাইক থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে আহত হন। মোটরসাইকেলে থাকা দুজন ছিনতাইকারীর মধ্যে একজন আরিফার শাশুড়িকে কিল-ঘুষি মেরে টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আরিফার ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। ততক্ষণে কালো রংয়ের মোটরসাইকেলে থাকা দুজন ছিনতাইকারী টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে ভুক্তভোগী আরিফা খাতুন অজ্ঞাতনামা দুজনকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগের পর সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এরপর চুয়াডাঙ্গা সদর থানা এলাকায় বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। যাচাই বাছাইয়ের পর ছিনতাইকারীদেক ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মূল মালিককে খুঁজে বের করা হয়।

পুলিশ জানতে পারে আটককৃত আব্দুস সালাম মল্লিক (৪৫) মেয়ের বাড়িতে যাবে বলে ওই মোটরসাইকেলটি চালানোর জন্য নেয়। এরপর অভিযুক্ত আব্দুল সালাম মল্লিককে সোমবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কান্তি দাস জানান, ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দায়েরের পর গোপন সংবাদ ও ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল মালিককে খুঁজে বের করা হয়। এরপর তার মাধ্যমে জানা যায় আটককৃত ছিনাতাইকারীর নাম ও ঠিকানা। সোমবার ভোররাতে পুলিশ আসামির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। ওই সময় আসামি কোমরে থাকা তার ভাগের ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে। ছিনতাই কাজে অংশ নেয়া অপর আসামিকে ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। আশা করি শিগগিরই তাকে আটক করা হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃত আব্দুস সালাম মল্লিক ভুক্তভোগী আরিফা খাতুনের স্বামী আকাশ আলীর পূর্বপরিচিত। এনজিও থেকে লোন তোলার বিষয়টি ছিনতাইকারী আব্দুস সালাম মল্লিক আগে থেকেই জানতেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেন সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাস, এসআই মহাদেব বাছাড়, মানজারুল ইসলাম, বাদশা আলমগীর ও এএসআই শামিম রেজাসহ সঙ্গীয় ফোর্স।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

ঢাকায় ডুসাকের শিক্ষাবৃত্তি ও নবীনবরণ অনুষ্ঠান: চুয়াডাঙ্গার ৭০ শিক্ষার্থী পেলেন মেধাবৃত্তি

চুয়াডাঙ্গা শহরে দিনেদুপুরে নারীকে মারধর করে ৫৭ হাজার টাকা ছিনতাই, অবশেষে ধরা

প্রকাশের সময় : ০৭:১৫:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ইজিবাইক থেকে নারীর ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার অভিযোগে সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে আব্দুস সালাম মল্লিক নামে এক ছিনতাইকারীকে আটক করেছে।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার জাফরপুরের নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আয়োজিত এক সাংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় পুলিশ।

আটক আব্দুস সালাম মল্লিক ওই এলাকার মৃত চাঁদ আলী মল্লিকের ছেলে। এসময় তার লুঙ্গির কোমরে ছিনতাই করা ভাগের ১৫ হাজার টাকা ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) কনক কান্তি দাস বলেন, রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাধীন ভিমরুল্লা গ্রামের আরিফুল ইসলামের মেয়ে আরিফা খাতুন তার শাশুড়ির সাথে নিয়ে শহরের ঈদগাহপাড়ায় অবস্থিত একটি এনজিও থেকে লোন নেয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন।

এরপর ৩টা ১০ মিনিটের দিকে তারা দুজন ওই এনজিও থেকে লোনের ৬০ হাজার টাকা নিয়ে পাখিভ্যানযোগে বড়বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

পথিমধ্যে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভুক্তভোগী আরিফা খাতুন তার স্বামী চুয়াডাঙ্গার সাহিদ প্যালেসে কর্মরত আকাশ আলীকে ওই টাকার মধ্যে ৩ হাজার টাকা দেন। বাকী ৫৭ হাজার টাকাসহ একটি ব্যাগ আরিফা তার শাশুড়ির হাতে দেন।

এরপর ওই ভ্যানযোগে তিনি বড়বাজার হয়ে কোর্ট মোড় এলাকায় নামেন। সেখান থেকে একটি ইজিবাইকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনাকালে পথিমধ্যে নতুন বাজারের সন্নিকটে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছান। স্কুলের সামনের রাস্তায় গতিরোধক থাকায় ইজিবাইকটির গতি কমে আসে। ওই সুযোগে একটি মোটরসাইকেলে দুজন ছিনতাইকারী আরিফার শাশুড়ির নিকট থাকা টাকার ব্যাগটি ধরে টান দেন। এতে তিনি টাকার ব্যাগসহ ইজিবাইক থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে আহত হন। মোটরসাইকেলে থাকা দুজন ছিনতাইকারীর মধ্যে একজন আরিফার শাশুড়িকে কিল-ঘুষি মেরে টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আরিফার ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। ততক্ষণে কালো রংয়ের মোটরসাইকেলে থাকা দুজন ছিনতাইকারী টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে ভুক্তভোগী আরিফা খাতুন অজ্ঞাতনামা দুজনকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগের পর সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এরপর চুয়াডাঙ্গা সদর থানা এলাকায় বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। যাচাই বাছাইয়ের পর ছিনতাইকারীদেক ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মূল মালিককে খুঁজে বের করা হয়।

পুলিশ জানতে পারে আটককৃত আব্দুস সালাম মল্লিক (৪৫) মেয়ের বাড়িতে যাবে বলে ওই মোটরসাইকেলটি চালানোর জন্য নেয়। এরপর অভিযুক্ত আব্দুল সালাম মল্লিককে সোমবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কান্তি দাস জানান, ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দায়েরের পর গোপন সংবাদ ও ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল মালিককে খুঁজে বের করা হয়। এরপর তার মাধ্যমে জানা যায় আটককৃত ছিনাতাইকারীর নাম ও ঠিকানা। সোমবার ভোররাতে পুলিশ আসামির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। ওই সময় আসামি কোমরে থাকা তার ভাগের ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে। ছিনতাই কাজে অংশ নেয়া অপর আসামিকে ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। আশা করি শিগগিরই তাকে আটক করা হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃত আব্দুস সালাম মল্লিক ভুক্তভোগী আরিফা খাতুনের স্বামী আকাশ আলীর পূর্বপরিচিত। এনজিও থেকে লোন তোলার বিষয়টি ছিনতাইকারী আব্দুস সালাম মল্লিক আগে থেকেই জানতেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেন সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাস, এসআই মহাদেব বাছাড়, মানজারুল ইসলাম, বাদশা আলমগীর ও এএসআই শামিম রেজাসহ সঙ্গীয় ফোর্স।