১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় স্বামীর মোবাইলে স্ত্রীর গোপন ছবি পাঠালেন প্রেমিক , বিয়ের ১ মাস পর লাশ হলেন নববধূ

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বিয়ের এক মাসের মাথায় রেশমা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। 

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে আলমডাঙ্গার ডাউকি গ্রামে নিজ শ্বশুর বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

নিহত রেশমা খাতুন চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি গ্রামের রফিকুল ইসলাম ওরফে রিপনের স্ত্রী এবং আলমডাঙ্গার জামজামি ইউনিয়নের পুরাতন পাঁচলিয়া এলাকার রেজাউল হকের মেয়ে। 

নিহত রেশমা খাতুনের ছোট ভাই রাজিব রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, ১ মাস আগে পারিবারিকভাবে আমার বড় বোন রেশমার বিবাহ হয় পাশ্ববর্তী গ্রাম ডাউকিতে। সে কুষ্টিয়ায় একটি কোচিং সেন্টারে কর্মরত ছিল। আমরা একটি চিরকুটের কথা জেনেছি। যেখানে আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ি নয় বলে লেখা আছে৷ হাতের লেখা দেখে মনে হয়েছে এটি আমার বোনের নয়।

আত্মহত্যার কারণ কি জানতে চাইলে রাজিব রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, একটি বাইরের নাম্বার থেকে রেশমার একটি অশ্লীল ছবি তারই স্বামীর নাম্বারে একটি অশ্লীল ছবি পাঠিয়েছে কেউ। আমি ছবিটা দেখেনি। তবে বর্তমানে প্রযুক্তির মাধ্যমে ছবি তৈরি করা হতে পারে বলে দাবি করেন তিনি। এমনও হতে পারে আমার বোনকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে জানা যাবে। এছাড়া স্বামী বা শ্বশুর বাড়ির কোনো সদস্যের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এমন তথ্য জানাননি তিনি।

একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, রেশমা খাতুনের বিয়ের আগে মালয়েশিয়া প্রবাসী এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ওই প্রেমিকের কাছে থানা রেশমার ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি তার স্বামীর নিকট পাঠিয়েছে। এর ফলে লোকলজ্জার ভয়ে নিজ শ্বশুর বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মো. আফাজ উদ্দিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আমি যতদূর জানি, তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন সমস্যা ছিল না। থাকলে জানতে পারতাম। আশপাশের লোকজনের থেকে জেনেছি তাদের মধ্যে কোন ঝগড়াঝাঁটিও হয়নি।

তিনি আরও বলেন, লোক মারফতে শুনেছি বিয়ের আগে কোন ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল রেশমার। সেই ছেলে রেশমার স্বামীর নাম্বারে মেসেজ করছে। এ নিয়ে রেশমার আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তবে পুলিশের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে৷

এ বিষয়ে জানতে নিহত রেশমা খাতুনের স্বামী রিপন ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা সম্ভব না হওয়ায় তাদের মন্তব্য জানা জায়নি।

রেশমার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সনজিত সাহা বলেন, লোকমুখে শুনেছি, বিয়ের আগে একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। সেই ছেলে বর্তমানে মালেশিয়া প্রবাসী। এই বিষয়টি সামনে এসেছে। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয় বলে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রেম সংক্রান্ত নাকি অন্য কোন ঘটনা এটি এখনো স্পষ্ট নয়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার জুমার পর জানাযার নামায শেষে নিজ গ্রাম পুরাতন পাঁচলিয়া গ্রামের কবরস্থানে রেশমার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

জনপ্রিয় গায়ক নোবেল গ্রেপ্তার

আলমডাঙ্গায় স্বামীর মোবাইলে স্ত্রীর গোপন ছবি পাঠালেন প্রেমিক , বিয়ের ১ মাস পর লাশ হলেন নববধূ

প্রকাশের সময় : ০১:৪৯:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বিয়ের এক মাসের মাথায় রেশমা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। 

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে আলমডাঙ্গার ডাউকি গ্রামে নিজ শ্বশুর বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

নিহত রেশমা খাতুন চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি গ্রামের রফিকুল ইসলাম ওরফে রিপনের স্ত্রী এবং আলমডাঙ্গার জামজামি ইউনিয়নের পুরাতন পাঁচলিয়া এলাকার রেজাউল হকের মেয়ে। 

নিহত রেশমা খাতুনের ছোট ভাই রাজিব রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, ১ মাস আগে পারিবারিকভাবে আমার বড় বোন রেশমার বিবাহ হয় পাশ্ববর্তী গ্রাম ডাউকিতে। সে কুষ্টিয়ায় একটি কোচিং সেন্টারে কর্মরত ছিল। আমরা একটি চিরকুটের কথা জেনেছি। যেখানে আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ি নয় বলে লেখা আছে৷ হাতের লেখা দেখে মনে হয়েছে এটি আমার বোনের নয়।

আত্মহত্যার কারণ কি জানতে চাইলে রাজিব রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, একটি বাইরের নাম্বার থেকে রেশমার একটি অশ্লীল ছবি তারই স্বামীর নাম্বারে একটি অশ্লীল ছবি পাঠিয়েছে কেউ। আমি ছবিটা দেখেনি। তবে বর্তমানে প্রযুক্তির মাধ্যমে ছবি তৈরি করা হতে পারে বলে দাবি করেন তিনি। এমনও হতে পারে আমার বোনকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে জানা যাবে। এছাড়া স্বামী বা শ্বশুর বাড়ির কোনো সদস্যের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এমন তথ্য জানাননি তিনি।

একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, রেশমা খাতুনের বিয়ের আগে মালয়েশিয়া প্রবাসী এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ওই প্রেমিকের কাছে থানা রেশমার ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি তার স্বামীর নিকট পাঠিয়েছে। এর ফলে লোকলজ্জার ভয়ে নিজ শ্বশুর বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মো. আফাজ উদ্দিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আমি যতদূর জানি, তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন সমস্যা ছিল না। থাকলে জানতে পারতাম। আশপাশের লোকজনের থেকে জেনেছি তাদের মধ্যে কোন ঝগড়াঝাঁটিও হয়নি।

তিনি আরও বলেন, লোক মারফতে শুনেছি বিয়ের আগে কোন ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল রেশমার। সেই ছেলে রেশমার স্বামীর নাম্বারে মেসেজ করছে। এ নিয়ে রেশমার আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তবে পুলিশের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে৷

এ বিষয়ে জানতে নিহত রেশমা খাতুনের স্বামী রিপন ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা সম্ভব না হওয়ায় তাদের মন্তব্য জানা জায়নি।

রেশমার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সনজিত সাহা বলেন, লোকমুখে শুনেছি, বিয়ের আগে একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। সেই ছেলে বর্তমানে মালেশিয়া প্রবাসী। এই বিষয়টি সামনে এসেছে। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয় বলে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রেম সংক্রান্ত নাকি অন্য কোন ঘটনা এটি এখনো স্পষ্ট নয়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার জুমার পর জানাযার নামায শেষে নিজ গ্রাম পুরাতন পাঁচলিয়া গ্রামের কবরস্থানে রেশমার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।