চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এর মধ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীদের সংখ্যা।
এতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেও প্রতিদিন অসংখ্যহারে ভর্তি হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে তিল পরিমান জায়গা নেই। অন্যদিকে চাপ রয়েছে হাসপাতালের বহিঃবিভাগেও। প্রতিদিন জ্বর, ঠান্ডা, কাশি আক্রান্ত হয়ে ৫০০-১০০০ শিশু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, আবহাওয়াও পরিবর্তণ এর কারণে শিশুদের অতিরিক্ত যত্ন ও অভিভাবকদের সচেতনতার বিকল্প নেই।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড সুত্রে জানা গেছে, গত ৮ দিনে অর্থাৎ ৭ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডের মোট ভর্তি হয়েছে ৪০৪ শিশু রোগী। এরমধ্যে ৫০ শতাংশই নিউমোনিয়া আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ও রাতে সদর হাসপাতালের পুরনো ভবন ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে তিল পরিমান পা ফেলার জায়গা নেই। এমনকি পুরনো ভবনের কপালসিবল গেট পর্যন্ত পাটি বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশু রোগীরা৷ একদিকে শিশু রোগীদের যেমন চাপ, তেমনই লোকবল সঙ্কটের কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকরা৷ তবে নার্সদের অক্লান্ত পরিশ্রমে রোগীর স্বজনদের সন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ রেহেনা পারভিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে এবার অতিরিক্ত হারে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পা ফেলার জায়গা নেই। একদিকে লোকবল সঙ্কট অপরদিকে রোগীদের চাপ সামলাতে প্রচুর বেগ পেতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদরের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের বেল্টু রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গত ৪দিন আগে হঠাৎ করেই আমার ছেলের প্রচণ্ড জ্বর ও ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়। বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা করেও কম না হলে দুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ছেলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, আগের তুলনায় চিকিৎসা সেবা ভালো হয়েছে। বাচ্চাদের কোনো সমস্যা হলে নার্সের ডাকার সঙ্গে সঙ্গেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসককে জানানো হলে তিনিও তাৎক্ষণিক এসে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

ইখলাস নামে এক ব্যক্তি রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আমার নাতী জ্বর ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়। অবস্থা বেগতিক হলে গতকাল সোমবার সকালে ভর্তি করি। ওয়ার্ডে কোন জায়গা নেই ওয়ার্ডে। নাতীকে নিয়ে মেঝেই চিকিৎসা দিচ্ছি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে সদর হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে৷ এরমধ্যে ৫০ শতাংশই নিউমোনিয়া আক্রান্ত। এ সময় বাচ্চাদের সতর্ক রাখতে হবে। বাচ্চাদের মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। ৬ মাসের বড় বাচ্চাদের অন্যান্য খাবার দিতে হবে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। এসময় শিশুদের যত্ন বা অভিভাবকরা সচেতন না হলে শিশুদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের ঝুকি থাকে।
এএইচ