০৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ার রশিদিয়া দরবার শরিফে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

কুষ্টিয়ার রশিদিয়া দরবার শরিফে বার্ষিক অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে ভাঙচুরের পর আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে কুমারখালী উপজেলার চর সাদিপুর ইউনিয়নের সাদিপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ভয়ে দরবার শরিফের লোকজন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না ।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়েন এবং সাদিরপুর আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও ইউনিয়ন জামায়েতের আমির আবু তালেবের নেতৃত্বে এ হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

এলাকাবাসী ও দরবার শরিফের লোকজন জানান, প্রায় ৭ বছর ধরে হযরত খাজা শাহসুফিয়া দেওয়ান আব্দুর রশিদ আল চিশতি নিজামি (রা.) এর স্মরণে প্রতিবছর ১৩ আশ্বিন সাদিপুর রশিদিয়া দরবার শরিফে বার্ষিক ওয়াজ ও মোনাজাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দরবার শরিফখানা পরিচালনা করেন স্থানীয় মৃত করিম মিস্ত্রির ছেলে মো. জিল্লুর রহমান (৬০)। প্রতিবারের ন্যায় রোববার এশার নামাজের পর শুরু হয় ওয়াজ মাহফিল।

মাহফিলের বক্তব্য শেষে হুজুর যখন মোনাজাত শুরু করেন তখন এক দল নানা বয়সী লোকজন এসে প্রথমে দরবার শরিফে ভাঙচুর করেন। এরপর আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যান। এসময় তবারক ফেলে ভয়ে পালিয়ে যান দরবার শরিফের পরিচালক ও উপস্থিত ভক্তরা।

আতঙ্কে পালিয়েছেন রশিদিয়া দরবার শরিফের পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান। যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পরিচালকের ছেলে রাসেল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৭ বছর ধরে আমরা ১৩ আশ্বিন বার্ষিক ওয়াজ ও মোনাজাতের আয়োজন করে আসছি। প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ ভক্ত উপস্থিত হতেন। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে মাত্র ১৫০ জনের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত হয়েছিল ৮০ জনের মতো।

আরও পড়ুন

তার ভাষ্য, হুজুর ওয়াজ শেষে মোনাজাত শুরু করতে না করতেই শতাধিক লোকজন এসে প্রথমে ভাঙচুর করল। পরে দরবার শরিফে আগুন লাগিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের নাম পরিচয় আমি জানি। তবে এখনই প্রকাশ করতে চাচ্ছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে সাদিপুর বাজারের একাধিক ব্যক্তি বলেন, চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়েন এবং সাদিরপুর আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও ইউনিয়ন জামায়েতের আমির আবু তালেবের নেতৃত্বে দরবার শরিফে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন

চুয়াডাঙ্গায় যুবলীগ নেতা সাইফুলকে কুপিয়ে জখম, ঢাকায় রেফার্ড

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়েন। তিনি বলেন, দরবার শরিফের নামে সেখানে মাদকের আড্ডা চলে। সেজন্য স্থানীয় ছেলে পেলে তা ভেঙে দিয়েছে। আমি ছেলেপেলেদের সে সময় ভাঙতে নিষেধ করেছি। এ ঘটনায় আমি জড়িত নই। আর সেখানে কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।

অভিযোগ অস্বীকার করে সাদিপুর মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আবু তালেব বলেন, ঘটনার সময় আমি অন্য একটি বাজারে ছিলাম। দরবারে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ফেসবুক থেকে জেনেছি।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

এক চাকা নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করলো বিমানের ফ্লাইট, নিরাপদে ৭১ যাত্রী

কুষ্টিয়ার রশিদিয়া দরবার শরিফে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

প্রকাশের সময় : ১০:৫৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কুষ্টিয়ার রশিদিয়া দরবার শরিফে বার্ষিক অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে ভাঙচুরের পর আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে কুমারখালী উপজেলার চর সাদিপুর ইউনিয়নের সাদিপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ভয়ে দরবার শরিফের লোকজন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না ।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়েন এবং সাদিরপুর আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও ইউনিয়ন জামায়েতের আমির আবু তালেবের নেতৃত্বে এ হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

এলাকাবাসী ও দরবার শরিফের লোকজন জানান, প্রায় ৭ বছর ধরে হযরত খাজা শাহসুফিয়া দেওয়ান আব্দুর রশিদ আল চিশতি নিজামি (রা.) এর স্মরণে প্রতিবছর ১৩ আশ্বিন সাদিপুর রশিদিয়া দরবার শরিফে বার্ষিক ওয়াজ ও মোনাজাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দরবার শরিফখানা পরিচালনা করেন স্থানীয় মৃত করিম মিস্ত্রির ছেলে মো. জিল্লুর রহমান (৬০)। প্রতিবারের ন্যায় রোববার এশার নামাজের পর শুরু হয় ওয়াজ মাহফিল।

মাহফিলের বক্তব্য শেষে হুজুর যখন মোনাজাত শুরু করেন তখন এক দল নানা বয়সী লোকজন এসে প্রথমে দরবার শরিফে ভাঙচুর করেন। এরপর আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যান। এসময় তবারক ফেলে ভয়ে পালিয়ে যান দরবার শরিফের পরিচালক ও উপস্থিত ভক্তরা।

আতঙ্কে পালিয়েছেন রশিদিয়া দরবার শরিফের পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান। যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পরিচালকের ছেলে রাসেল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৭ বছর ধরে আমরা ১৩ আশ্বিন বার্ষিক ওয়াজ ও মোনাজাতের আয়োজন করে আসছি। প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ ভক্ত উপস্থিত হতেন। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে মাত্র ১৫০ জনের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত হয়েছিল ৮০ জনের মতো।

আরও পড়ুন

তার ভাষ্য, হুজুর ওয়াজ শেষে মোনাজাত শুরু করতে না করতেই শতাধিক লোকজন এসে প্রথমে ভাঙচুর করল। পরে দরবার শরিফে আগুন লাগিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের নাম পরিচয় আমি জানি। তবে এখনই প্রকাশ করতে চাচ্ছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে সাদিপুর বাজারের একাধিক ব্যক্তি বলেন, চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়েন এবং সাদিরপুর আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও ইউনিয়ন জামায়েতের আমির আবু তালেবের নেতৃত্বে দরবার শরিফে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন

চুয়াডাঙ্গায় যুবলীগ নেতা সাইফুলকে কুপিয়ে জখম, ঢাকায় রেফার্ড

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়েন। তিনি বলেন, দরবার শরিফের নামে সেখানে মাদকের আড্ডা চলে। সেজন্য স্থানীয় ছেলে পেলে তা ভেঙে দিয়েছে। আমি ছেলেপেলেদের সে সময় ভাঙতে নিষেধ করেছি। এ ঘটনায় আমি জড়িত নই। আর সেখানে কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।

অভিযোগ অস্বীকার করে সাদিপুর মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আবু তালেব বলেন, ঘটনার সময় আমি অন্য একটি বাজারে ছিলাম। দরবারে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ফেসবুক থেকে জেনেছি।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।