মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভালোবাসেন। তাই তাঁর বান্দাদের ছোট ছোট আমলের বিনিময়ে অফুরন্ত সওয়াব দান করেন। মুমিনের কয়েক সেকেন্ডের আমলের বিনিময়ে তিনি তাদের জন্য জান্নাতকে সাজিয়ে তোলেন। মানুষ প্রতিদিন কত আমল করে কোনো কবুল হয় কোনোটা হয় না, তবে কিছু আমল আছে যাতে অনেক হওয়া লাভ হয়। প্রিয়নবী (সা.) উম্মতকে এমনই একটি আমল শিক্ষা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তোমাদের জন্য কি দৈনিক এক হাজার নেকি লাভ করা কঠিন কিছু? তখন এক সাহাবি বলেন, আল্লাহর রাসুল! কী করলে এক হাজার নেকি লাভ করা যাবে? তখন নবীজী বলেন, ‘এক শ বার সুবহানাল্লাহ বললে এক হাজার নেকি লেখা হবে অথবা (কোনো কোনো বর্ণনায়) এক হাজার গোনাহ মোচন হবে। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৮; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৮২৫)
এ ছাড়া হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর দশবার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু। লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু।
ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’ পড়বে, এর বিনিময়ে তার আমলনামায় চারজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হবে, ১০টি নেকি লেখা হবে, ১০টি গোনাহ মাফ হবে, ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং এ কালিমাগুলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য শয়তান থেকে রক্ষার কারণ হবে।
মাগরিবের পর পড়লে অনুরূপ সওয়াব মিলবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান থেকে হেফাজতে থাকবে।(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫১৮; তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৩৪)।
আরও পড়ুন
কারো মৃত্যুতে আলহামদুলিল্লাহ বলা যাবে?
বিভিন্ন বর্ণনায় রয়েছে, নামাজের বৈঠক থেকে ওঠার আগে, কোনো কথা বলার আগেই এই দোয়া পড়বে। কোনো বর্ণনায় শুধু নামাজের পর পড়ার কথা এসেছে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৩৪, ৩৪৭৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৭৯৯০)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘…তার আমলনামায় এক নেকি লেখা হবে, এক শ গোনাহ মাফ হবে এবং একজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮৭১৯)
অন্য হাদিসে এসেছে, ইসমাঈল (আ.)-এর বংশধরের একজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাওয়া যাবে।
রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি (একবার) বলে ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়াবিহামদিহি’, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুরগাছ লাগানো হয়। ” (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬৪)
ছোট এই বাক্য পড়তে তিন সেকেন্ডের কম সময় লাগে। কিন্তু আল্লাহ এতই মহান যে তিনি এর বিনিময়ে তাঁর প্রিয় বান্দার জন্য জান্নাতে খেজুরগাছ লাগিয়ে দেন। এমন ছোট ছোট আমলের মাধ্যমে মানুষ জান্নাতের মেহমান হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করতে পারে।
আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তাকে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো কিছু (জান্নাতে যেতে) বাধা দিতে পারে না।
সুবহানাল্লাহ! এভাবেই মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের পাপমুক্ত করে জান্নাতে প্রবেশ করানোর জন্য অবারিত সুযোগ রেখে দিয়েছেন।
আমাদের দায়িত্ব সেগুলো লুফে নেওয়া। আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন।
এএইচ