ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার দাবিতে দেশব্যাপী সকল হাসপাতালে চিকিৎসকরা কর্মবিরতি (কমপ্লিট শাটডাউন) পালন করছেন। তবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দেখা মিলল ভিন্ন চিত্র। জরুরি বিভাগে চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন রোগীদের।
খোজ নিয়ে জানা যায়, রোববার (০১ আগস্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রাইভেট চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করতে দেখা যায়নি। প্রতিদিনের ন্যায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকরা রোগী দেখছেন। আবার কোন কোন চিকিৎসক জানেনই না কর্মবিরতির বিষয়টি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সকাল থেকেই নিয়মিতভাবে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যেতে দেখা যায় চিকিৎসকদের।
চিকিৎসকরা বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) থেকে কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তাই কর্মবিরতির বিষয়টি জানা নেই।
জানা গেছে, শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনা ঘটে। হামলার বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে রোববার (০১ আগস্ট) সকাল থেকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। পরে সমস্যা সমাধানে আলোচনায় বসলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এরপর চিকিৎসকরা চার দফা দাবি আদায়ে সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং ঢামেক পরিচালকের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে এ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছিল।
তবে, আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বলছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষ না করেই কর্মসূচি স্থগিতের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের মুখপাত্র ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, ঢামেকে যত চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করবেন তাদের প্রত্যেকের বিপরীতে তত নিরাপত্তাকর্মী না দেওয়া পর্যন্ত আমরা কাজে ফিরব না। আর আগামী সাত দিনের মধ্যে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন না করলে রুটিন ওয়ার্কেও ফিরব না।
এর আগে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, চিকিৎসকরা জরুরি চিকিৎসাসেবা চালু করবেন। তাদের নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। চিকিৎসক মারধরের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আটক বা গ্রেপ্তার করার পরপরই তারা সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসাসেবা দেবেন। আপাতত এখন থেকে জরুরি চিকিৎসাসেবা শুরু হচ্ছে।
চিকিৎসকরা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমপ্লিট শাটডাউন আর নেই। এটা থেকে চিকিৎসকরা সরে এসেছেন। তারা এখনই জরুরি সেবা চালু করছেন। যে নিশ্চয়তা তারা চেয়েছিল সেই নিশ্চয়তা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তাদের দিয়েছেন। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং সিভিলে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। চার বাহিনী মিলিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ওয়ার্ডে, আইসিইউতে যেসব রোগী ভর্তি আছে তাদের চিকিৎসা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া ক্যাজুয়ালিটি, নিউরো সার্জারি এবং জরুরি বিভাগ চালু হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে রোগীদের সেবা দিয়ে গেছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) থেকে কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি।
এএইচ