১০:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদাবাজি-ক্ষমতার অপব্যবহার : দামুড়হুদা মডেল মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

রবিবার (১৮ আগস্ট) রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার উকতো গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল আওয়াল বিপ্লবী বাদি হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলার আবেদন করেন।

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ বলছে, মামলার আবেদন নয়, লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।

মামলার আবেদনে আব্দুল আওয়াল উল্লেখ করেছেন, ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট একটি দোয়া মাহফিলে বক্তব্যে আওয়ামীলীগের হয়ে প্রকাশ্যে ভোট চান দামুড়হুদা মডেল মসজিদের ইমাম মামুনুর রশীদ। তার এই বক্তব্য শুনে আমার পরিচিত সহকর্মী সাইফুল ইসলাম নিজের ফেসবুক একাউন্টে এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদী সেই পোস্টে আমি সম্মতি জানিয়ে মন্তব্য করায় অভিযুক্ত মামুনুর রশীদ আমাকে এবং আমার পরিবারকে ব্যাপকভাবে হয়রানী করেন। এছাড়াও আমাকে সহ আমার পরিবারকে মামলার হুমকি দিয়ে দামুড়হুদা থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার নিকট হইতে প্রতারণার মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এই একই ঘটনাকে কেন্দ্র করিয়া আমার সহকর্মী মোঃ সাইফুল ইসলাম, সালমান সাদি ও তাদের পরিবারকে বিভিন্ন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদেরকে দিয়ে ভয়- ভীতি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি সহ মোটা অঙ্কের টাকা পয়সা দাবী করতে থাকেন। ইহা ছাড়াও অভিযুক্ত মামুনুর রশীদ ঐ বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এবং আমরা অভিযুক্তের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় আমাদের নামে রাষ্ট্র বিরোধী মামলা করারও হুমকি প্রদান করেন। উল্লেখিত বিষয়কে কেন্দ্র করিয়া আসামী আমার উপর চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। আমি আসামীকে গালাগালি দিতে নিষেধ করলে অভিযুক্ত ইমাম মামুনুর রশীদ আমার উপর মারমুখী আচরণ করেন এবং বিভিন্ন ধরণের ভয়-ভীতি প্রদান করেন।

মাওলানা আব্দুল আউয়াল বিপ্লবী রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, দামুড়হুদা মডেল মসজিদের ইমাম মামুনুর রশীদ গত বছরের ১৫ আগস্ট আওয়ামীলীগের এক দোয়া অনুষ্ঠানের বক্তব্যে আওয়ামীলীগের হয়ে প্রকাশ্যে ভোট চান। ওই বক্তব্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইসলামের সরকার বলেও দাবী করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন সম্মিলিত উলামা কল্যাণ পরিষদের মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম। আমি সেই প্রতিবাদী পোস্টে সম্মতি জানিয়ে মন্তব্য করায় মামুনুর রশীদ আমাকে এবং আমার পরিবারকে ব্যাপকভাবে হয়রানি করেন। এছাড়াও আমাকে এবং আমার পরিবারকে মামলার হুমকি দিয়ে দামুড়হুদা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমীর চন্দ্র দাসের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। টাকা না দিলে মামলার হুমকি দেয়ায় আমি আমার বাবার চিকিৎসার টাকা থেকে এনে ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হই। টাকা দেওয়ার পর মডেল মসজিদের ইমাম মামুনুর রশীদের কাছে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য করে পুলিশ।

এ বিষয়ে সম্মিলিত উলামা কল্যাণ পরিষদের মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, এই বিষয়ে আমি ফেসবুকে প্রতিবাদ জানালে আমাকে এবং আমার পরিবারকে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ দিয়ে নানানভাবে হয়রানি করে। বাড়িতে পুলিশ এসে আমাকে না পেয়ে আমার মা’কে তুলে নেওয়ারও হুমকি দেয়া হয়। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিভাদে অসংখ্য আলেম উলামা ফেসবুকে এবং বিবৃতির মাধ্যমেও নিন্দা জানান।

তিনি আরো বলেন, মামুনুর রশীদ শুধু আমাদেরকে হয়রানি করেছেন তা-ই নয় বরং সেই বক্তব্যে শেখ হাসিনা সরকারকে ইসলামের সরকার বলে চরমভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত হানেন। আমরা আলেম সমাজ এর বিচার চাই।

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) হিমেল রানা রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, মামলার আবেদন নয়, এক বছর আগের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

জনপ্রিয় গায়ক নোবেল গ্রেপ্তার

চাঁদাবাজি-ক্ষমতার অপব্যবহার : দামুড়হুদা মডেল মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

রবিবার (১৮ আগস্ট) রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার উকতো গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল আওয়াল বিপ্লবী বাদি হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলার আবেদন করেন।

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ বলছে, মামলার আবেদন নয়, লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।

মামলার আবেদনে আব্দুল আওয়াল উল্লেখ করেছেন, ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট একটি দোয়া মাহফিলে বক্তব্যে আওয়ামীলীগের হয়ে প্রকাশ্যে ভোট চান দামুড়হুদা মডেল মসজিদের ইমাম মামুনুর রশীদ। তার এই বক্তব্য শুনে আমার পরিচিত সহকর্মী সাইফুল ইসলাম নিজের ফেসবুক একাউন্টে এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদী সেই পোস্টে আমি সম্মতি জানিয়ে মন্তব্য করায় অভিযুক্ত মামুনুর রশীদ আমাকে এবং আমার পরিবারকে ব্যাপকভাবে হয়রানী করেন। এছাড়াও আমাকে সহ আমার পরিবারকে মামলার হুমকি দিয়ে দামুড়হুদা থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার নিকট হইতে প্রতারণার মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এই একই ঘটনাকে কেন্দ্র করিয়া আমার সহকর্মী মোঃ সাইফুল ইসলাম, সালমান সাদি ও তাদের পরিবারকে বিভিন্ন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদেরকে দিয়ে ভয়- ভীতি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি সহ মোটা অঙ্কের টাকা পয়সা দাবী করতে থাকেন। ইহা ছাড়াও অভিযুক্ত মামুনুর রশীদ ঐ বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এবং আমরা অভিযুক্তের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় আমাদের নামে রাষ্ট্র বিরোধী মামলা করারও হুমকি প্রদান করেন। উল্লেখিত বিষয়কে কেন্দ্র করিয়া আসামী আমার উপর চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। আমি আসামীকে গালাগালি দিতে নিষেধ করলে অভিযুক্ত ইমাম মামুনুর রশীদ আমার উপর মারমুখী আচরণ করেন এবং বিভিন্ন ধরণের ভয়-ভীতি প্রদান করেন।

মাওলানা আব্দুল আউয়াল বিপ্লবী রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, দামুড়হুদা মডেল মসজিদের ইমাম মামুনুর রশীদ গত বছরের ১৫ আগস্ট আওয়ামীলীগের এক দোয়া অনুষ্ঠানের বক্তব্যে আওয়ামীলীগের হয়ে প্রকাশ্যে ভোট চান। ওই বক্তব্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইসলামের সরকার বলেও দাবী করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন সম্মিলিত উলামা কল্যাণ পরিষদের মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম। আমি সেই প্রতিবাদী পোস্টে সম্মতি জানিয়ে মন্তব্য করায় মামুনুর রশীদ আমাকে এবং আমার পরিবারকে ব্যাপকভাবে হয়রানি করেন। এছাড়াও আমাকে এবং আমার পরিবারকে মামলার হুমকি দিয়ে দামুড়হুদা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমীর চন্দ্র দাসের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। টাকা না দিলে মামলার হুমকি দেয়ায় আমি আমার বাবার চিকিৎসার টাকা থেকে এনে ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হই। টাকা দেওয়ার পর মডেল মসজিদের ইমাম মামুনুর রশীদের কাছে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য করে পুলিশ।

এ বিষয়ে সম্মিলিত উলামা কল্যাণ পরিষদের মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, এই বিষয়ে আমি ফেসবুকে প্রতিবাদ জানালে আমাকে এবং আমার পরিবারকে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ দিয়ে নানানভাবে হয়রানি করে। বাড়িতে পুলিশ এসে আমাকে না পেয়ে আমার মা’কে তুলে নেওয়ারও হুমকি দেয়া হয়। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিভাদে অসংখ্য আলেম উলামা ফেসবুকে এবং বিবৃতির মাধ্যমেও নিন্দা জানান।

তিনি আরো বলেন, মামুনুর রশীদ শুধু আমাদেরকে হয়রানি করেছেন তা-ই নয় বরং সেই বক্তব্যে শেখ হাসিনা সরকারকে ইসলামের সরকার বলে চরমভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত হানেন। আমরা আলেম সমাজ এর বিচার চাই।

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) হিমেল রানা রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, মামলার আবেদন নয়, এক বছর আগের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।