দীর্ঘ ১১ বছর পর আগামীকাল শনিবার (৩ আগস্ট) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
তফসিল অনুযায়ী, এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে সংগঠনটির নিজস্ব ভবনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এরই মধ্যে প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশনারসহ ভোট গ্রহনকারীরা।
এ নির্বাচনে দুটি প্যানেলের মাধ্যমে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন ২৭ ব্যবসায়ী। অপর একজন ভোট করছেন স্বতন্ত্র হিসেবে।
নির্বাচন কমিশন সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১১ বছর পর চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভোট হচ্ছে। এ নির্বাচন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আগ্রহ ও উদ্দীপনার ঘাটতি ছিল না।
গত ১৫ মে নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মো. আশরাফ আলী। এরপর থেকেই নানা ঘটনাকে কেন্দ্র এই নির্বাচন রয়েছে আলোচনার তুঙ্গে।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরিষদই বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছে। ওই পরিষদের পাশাপাশি আরও একটি প্যানেল এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
মোট ২৮ জন ব্যবসায়ী চেম্বার নির্বাচনের ভোটযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে সাধারন ভোটার হিসেবে বৈধ হয়েছেন ৫৮৭ জন ও সহযোগী সদস্য হিসেবে ভোটার রয়েছেন ২১৬ জন।
দুটি প্যানেলের মধ্যে ইয়াকুব হোসেন মালিকের নেতৃত্বাধীন ‘প্রগতিশীল ও উন্নয়ন পরিষদ’ প্যানেলে প্রার্থী হয়েছেন মোট ১৯ জন।
এর মধ্যে সাধারন সদস্য পদে ১৪ জন ও সহযোগী সদস্য পদে ৫ জন অংশ নিয়ে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এ প্যানেল থেকে সাধারন সদস্য পদে যারা আছেন- ইয়াকুব হোসেন মালিক, শাহারিন হক মালিক, মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ, সালাউদ্দীন মো. মতুর্জা, এস এম তসলিম আরিফ বাবু, একেএম সালাউদ্দীন মিঠু, আরিফ হোসেন জোয়ার্দ্দার সোনা, তাজুল ইসলাম তাজু, সেলিম আহমেদ, হারুন অর রশীদ, কিশোর কুমার কুন্ডু, এনামুল হক শাহ মুকুল, মতিয়ার রহমান ও শামসুজ্জামান খোকন।
আর সহযোগী সদস্যরা হলেন- নাসির আহাদ জোয়ার্দ্দার, সুরেশ কুমার আগরওয়ালা, এএনএম আরিফ, কামরুল ইসলাম হিরা ও পবিত্র কুমার আগরওয়ালা।
নির্বাচনের শুরু থেকেই ‘প্রগতিশীল ও উন্নয়ন পরিষদ’ এর প্যানেল ঘিরে বাড়তি আগ্রহ ছিল ভোটারদের। কেননা, দীর্ঘদিন ধরে এই প্যানেলের নেতৃবৃন্দ চেম্বারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
এবারও তারা পূর্ণাঙ্গ প্যানেল প্রকাশ করেন। যেকোন ঘটনা-দুর্ঘটনা আর ব্যবসায়ীদের সুখে দুঃখে পাশে থাকার অঙ্গীকার জ্ঞাপন করে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন প্যানেলের প্রার্থীরা।
অপরদিকে, প্রার্থীদের আরেকটি প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্যানেলে সাধারন সদস্য হিসেবে আছেন- আব্দুল হাকিম মুন্সী, মফিজুর রহমান, ইমতিয়াজ আহমেদ মিঠুন, শহিদুল ইসলাম, মকলেছুর রহমান ও গোলাম মোস্তফা বাদল।
আর সহযোগী সদস্য হিসেবে লড়ছেন রোকনুজ্জামান ও সালাউদ্দীন বিশ্বাস মিলন। এই প্যানেলর প্রার্থীরাও ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। তারাও নতুন নেতৃত্বের আশ্বাস দিয়ে নানা ধরনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করছেন।
এছাড়া, সাধারন সদস্য পদে হাবিবুল্লা জোয়ার্দ্দার ছটি স্বতন্ত্র হয়ে ভোট করছেন। তিনিও ভোটযুদ্ধে বেশ জোরেসোরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে চেম্বার অব কমার্সের এই নির্বাচ স্থগিত করতে রিট করেন ভোটার আলাউদ্দীন হেলা। তখন ৬ মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিতের আদেশ আসে।
এর প্রেক্ষিতে ইয়াকুব হোসেন মালিক আদেশের ব্যাপারে আপিল করলে মাননীয় জজ-ইন-চেম্বার ৮৯০০নম্বর রিট পিটিশনটির অন্তবর্তীকালীন ওই আদেশটি স্থগিত করে পুনরায় আদেশ দেন।
ফলে, আগামীকাল ৩ আগস্টই ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়।
এ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. আশরাফ আলী বলেন, সকল প্রক্রিয়া ও বৈধতা মেনে তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের কার্যক্রম শেষের পথে। আগামীকাল সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ও ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
সুত্র – দৈনিক আকাশ খবর
এএইচ