১১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় দেড় হাজার কোটি টাকার পশু কেনাবেচার আশা

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সুত্রে গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলায় প্রায় ১ হাজার ৬১ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হতে পারে। জেলায় ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৬টি চাহিদার বিপরীতে পশু রয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৮০৭টি। জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১০ হাজার ৯১৭টি খামার রয়েছে।

এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২ হাজার ৬৭৬টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩ হাজার ৫৯৯টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ১ হাজার ৯২৮টি এবং জীবননগর উপজেলায় ২ হাজার ৭১৪টি। এসব খামারে কোরবানি উপলক্ষে ২ লাখ ১১ হাজার ৮৭৯টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৫৪ হাজার ৮৯১টি, মহিষ ১৬০টি, ছাগল ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬ টি, ভেড়া ৩ হাজার ৯২ টি এবং অন্যান্য ৭টি।


এ বছর কোরবানির জন্য জেলায় ২ লাখ ১১ হাজার ৮০৭টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। তবে চাহিদার সংখ্যা ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৬টি পশু। যা থেকে প্রায় ৫২ হাজার ৯৫১টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৫৪ হাজার ৮১৯টি, মহিষ ১৬০টি, ছাগল ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬টি ও ভেড়া ৩ হাজার ৯২৫টি।

চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে আলমডাঙ্গায় ৭৯ হাজার ৭০৫টি। এ উপজেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৫৯ হাজার ৭৭৯টি। যা থেকে ১৯ হাজার ৯২৬টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৪১ হাজার ৬২৭টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩১ হাজার ২২০টি। অবিক্রিত থাকবে প্রায় ১০ হাজার ৪০৭টি পশু। দামুড়হুদা উপজেলায় ৪২ হাজার ৭৮টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩১ হাজার ৫৫৯টি। যা থেকে উদ্বৃত্ত থাকবে ১০ হাজার ৫১৯টি পশু। এবং জীবননগর উপজেলায় ৪৮ হাজার ৩৯৭টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩৬ হাজার ২৯৮টি। অবিক্রিত থাকবে প্রায় ১২ হাজার ৯৯টি পশু।

চুয়াডাঙ্গা জেলার মোট ১১টি পশুহাটের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট বসে ডুগডুগি ও শিয়ালমারিতে। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার এই দুই হাটে কয়েক হাজার পশু কেনাবেচা হয়। এসব হাটে দেশীয় প্রজাতির বহু সংখ্যাক গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল ওঠে। কিন্তু এবার কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও বিক্রি সেভাবে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গরুর খামারী ও ব্যবসায়ীরা।

জেলার অন্যতম দামুড়হুদার ডুগডুগির পশুহাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপারীরা এসেছেন হাটে। হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যাক পশু থাকলেও বিক্রি তুলনামূলকভাবে বেশ কম। দাম বেশি হওয়ায় মধ্যবিত্তরা এবার ঝুঁকছেন ছোট বা মাঝারি সাইজের পশু ক্রয়ের দিকে। যে কারণে এবারের কোরবানিতে বড় সাইজের গরুর চাহিদা একটু কম। তবে মাঝারি সাইজের গরু ও ছাগলের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক সংকটের কারণে সাধ্যের মধ্যে না থাকায় সাধারণ ক্রেতারা এবার ছোট গরু ও ছাগল কিনতে বেশি আগ্রহী।

স্থানীয় খামারীরা বলছেন, পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় পালনে খরচ অনেক বেড়েছে। তাই কোরবানির পশুর দাম এবার বেশি হবে।

ডুগডুগি পশুহাটে গরু কিনতে আসা নোমান নামের এক ক্রেতা বলেন, প্রতি ঈদে এই হাট থেকেই পশু কিনে কুরবানি দেয়া হয়। এবার তুলনামূলকভাবে গরুর দাম অনেকটাই বেশি। এ জন্য খাসী কিনতে হচ্ছে।

বগুড়া থেকে আসা সৈয়দ আলী নামের এক ব্যাপারি জানান, পশু খাদ্যের অতিরিক্ত দাম বেড়ে যাওয়ায় পশুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি এই হাটে ২৪ টা গরু নিয়ে এসেছি। অনেকেই দাম শুনে চলে যাচ্ছেন, তবে যাদের সাম্যর্থ আছে তারা গরু কিনছেন। গতকাল সোমবারেই এই হাটে ৯ টি গরু বিক্রি হয়েছে আমার।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শামীমুজ্জামান শামীম জানান, চলতি মৌসুমে জেলার হাটগুলোতে প্রায় ১ হাজার ৬১ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবার আশা করছি। খামারীরা যাতে লাভবান হতে পারে, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জেলার চারটি বড় পশুহাটে আমাদের পক্ষ থেকে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম থাকবে। এখান থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই যেকোনো পরামর্শ নিতে পারবে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি ইশরাকের

চুয়াডাঙ্গায় দেড় হাজার কোটি টাকার পশু কেনাবেচার আশা

প্রকাশের সময় : ০১:৪০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সুত্রে গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলায় প্রায় ১ হাজার ৬১ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হতে পারে। জেলায় ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৬টি চাহিদার বিপরীতে পশু রয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৮০৭টি। জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১০ হাজার ৯১৭টি খামার রয়েছে।

এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২ হাজার ৬৭৬টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩ হাজার ৫৯৯টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ১ হাজার ৯২৮টি এবং জীবননগর উপজেলায় ২ হাজার ৭১৪টি। এসব খামারে কোরবানি উপলক্ষে ২ লাখ ১১ হাজার ৮৭৯টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৫৪ হাজার ৮৯১টি, মহিষ ১৬০টি, ছাগল ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬ টি, ভেড়া ৩ হাজার ৯২ টি এবং অন্যান্য ৭টি।


এ বছর কোরবানির জন্য জেলায় ২ লাখ ১১ হাজার ৮০৭টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। তবে চাহিদার সংখ্যা ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৬টি পশু। যা থেকে প্রায় ৫২ হাজার ৯৫১টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৫৪ হাজার ৮১৯টি, মহিষ ১৬০টি, ছাগল ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬টি ও ভেড়া ৩ হাজার ৯২৫টি।

চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে আলমডাঙ্গায় ৭৯ হাজার ৭০৫টি। এ উপজেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৫৯ হাজার ৭৭৯টি। যা থেকে ১৯ হাজার ৯২৬টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৪১ হাজার ৬২৭টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩১ হাজার ২২০টি। অবিক্রিত থাকবে প্রায় ১০ হাজার ৪০৭টি পশু। দামুড়হুদা উপজেলায় ৪২ হাজার ৭৮টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩১ হাজার ৫৫৯টি। যা থেকে উদ্বৃত্ত থাকবে ১০ হাজার ৫১৯টি পশু। এবং জীবননগর উপজেলায় ৪৮ হাজার ৩৯৭টি পশুর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৩৬ হাজার ২৯৮টি। অবিক্রিত থাকবে প্রায় ১২ হাজার ৯৯টি পশু।

চুয়াডাঙ্গা জেলার মোট ১১টি পশুহাটের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট বসে ডুগডুগি ও শিয়ালমারিতে। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার এই দুই হাটে কয়েক হাজার পশু কেনাবেচা হয়। এসব হাটে দেশীয় প্রজাতির বহু সংখ্যাক গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল ওঠে। কিন্তু এবার কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও বিক্রি সেভাবে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গরুর খামারী ও ব্যবসায়ীরা।

জেলার অন্যতম দামুড়হুদার ডুগডুগির পশুহাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপারীরা এসেছেন হাটে। হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যাক পশু থাকলেও বিক্রি তুলনামূলকভাবে বেশ কম। দাম বেশি হওয়ায় মধ্যবিত্তরা এবার ঝুঁকছেন ছোট বা মাঝারি সাইজের পশু ক্রয়ের দিকে। যে কারণে এবারের কোরবানিতে বড় সাইজের গরুর চাহিদা একটু কম। তবে মাঝারি সাইজের গরু ও ছাগলের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক সংকটের কারণে সাধ্যের মধ্যে না থাকায় সাধারণ ক্রেতারা এবার ছোট গরু ও ছাগল কিনতে বেশি আগ্রহী।

স্থানীয় খামারীরা বলছেন, পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় পালনে খরচ অনেক বেড়েছে। তাই কোরবানির পশুর দাম এবার বেশি হবে।

ডুগডুগি পশুহাটে গরু কিনতে আসা নোমান নামের এক ক্রেতা বলেন, প্রতি ঈদে এই হাট থেকেই পশু কিনে কুরবানি দেয়া হয়। এবার তুলনামূলকভাবে গরুর দাম অনেকটাই বেশি। এ জন্য খাসী কিনতে হচ্ছে।

বগুড়া থেকে আসা সৈয়দ আলী নামের এক ব্যাপারি জানান, পশু খাদ্যের অতিরিক্ত দাম বেড়ে যাওয়ায় পশুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি এই হাটে ২৪ টা গরু নিয়ে এসেছি। অনেকেই দাম শুনে চলে যাচ্ছেন, তবে যাদের সাম্যর্থ আছে তারা গরু কিনছেন। গতকাল সোমবারেই এই হাটে ৯ টি গরু বিক্রি হয়েছে আমার।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শামীমুজ্জামান শামীম জানান, চলতি মৌসুমে জেলার হাটগুলোতে প্রায় ১ হাজার ৬১ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবার আশা করছি। খামারীরা যাতে লাভবান হতে পারে, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জেলার চারটি বড় পশুহাটে আমাদের পক্ষ থেকে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম থাকবে। এখান থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই যেকোনো পরামর্শ নিতে পারবে।