০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জীবননগরের দৌলতগঞ্জে প্রস্তাবিত সুইপার কলোনি স্থাপনের প্রতিবাদ: বৃহৎ কর্মসূচির হুশিয়ারি

জীবননগর পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ড ঐতিহ্যবাহী দৌলতগঞ্জ গ্রামে প্রস্তাবিত সুইপার কলোনি স্থাপনের প্রতিবাদে মৌন মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে এই মৌন মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মৌন মিছিলে শেষে এলাকাবাসী বলেন, জীবননগর পৌরসভার সুইপাররা দীর্ঘদিন ধরে শহরের মাংসপট্টিতে বসবাস করছেন। কিন্তু হঠাৎ করে সেখান থেকে সুইপার কলোনি স্থানান্তর করে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড দৌলতগঞ্জে কালীমন্দিরের পেছনে ভৈরব নদীর সরকারি খাস জমিতে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যার তীব্র প্রতিবাদ আমরা জানাচ্ছি।

এলাকাবাসী আরও বলেন, দৌলৎগঞ্জ একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। এক সময় জীবননগর শহরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দৌলতগঞ্জের নামে থাকলেও কালের পরিক্রমায় বর্তমানে শহরের প্রধান প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রধান বাজার, পোস্ট অফিস এখনও দৌলতগঞ্জের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এখানকার জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ও সরকারি বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। সর্বোপরি মহল্লার ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধন, ঐতিহ্য, ভ্রাতৃত্ববোধ ও ধর্মীয় আচার ও মূল্যবোধ অত্যন্ত প্রখর-যা প্রস্তাবিত সুইপার পল্লীর জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার সম্পূর্ণ বিপরীত।

তাছাড়া সুইপারদের শুকর পালন, নিয়মিত মদ্যপান, মাতাল অবস্থায় রাস্তায় চলাচল সবকিছুর নেতিবাচক প্রভাব মহল্লার ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর জীবনযাপনে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে; যা আগামী প্রজন্ম তথা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত ধ্বংসের শামিল যা অত্র মহল্লার দীর্ঘদিনের ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করবে।

এদিকে ৪নং ওয়ার্ড এলাকাবাসী নিজ এলাকা থেকে মৌন মিছিল করে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে উপস্থিত হয়ে মানববন্ধন পালন করেন।

ওই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জীবননগর পৌর বিএনপি সভাপতি শাহজাহান কবির, দৌলৎগঞ্জ সেবা সমিতি সভাপতি আব্দুস সবুর, ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইমরান হোসেন পলাশ, দৌলৎগঞ্জ সেবা সমিতি উপদেষ্টা আখতার-উজ-জামান মিঠু, উপদেষ্টা ফজলুর রহমান মাস্টার, সহ-সভাপতি একে আজাদ বিটু, সহ-সভাপতি আবুল কাশেম, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান মিন্টু, মিজানুর রহমান শুনুসহ ৪নং ওয়ার্ডের সকল নারী ও পুরুষ।

মানববন্ধনে জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবির বলেন, সুইপার সম্প্রদায় একটি আলাদা সংস্কৃতি। তাদের মদ্যপান, মাতাল অবস্থায় রাস্তায় চলাচলসহ বেশ কিছু ইসলাম পরিপন্থী কাজ যা দৌলতগঞ্জ গ্রামের মূল সংস্কৃতির অন্তরায়। বিশেষ করে তাদের উন্মুক্ত মদ্যপান করে; যা এই গ্রামের উঠতি বয়সী যুবকদের মাদকের দিকে উৎসাহিত করতে পারে। সেই সাথে নষ্ট হয়ে যেতে পারে সম্পূর্ণ যুবসমাজ।

৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইমরান হোসেন পলাশ বলেন, প্রশাসনের নিকট আমরা দাবি জানাচ্ছি জীবননগর শহরে আরো অনেক জায়গায় খাস জমে রয়েছে তাদেরকে সেখানে পুর্নবাসন করা যেতে পারে। আমরা হরিসম্প্রদায়কে ঘৃণা করছি না তবে তাদের সংস্কৃতির আর আমাদের সংস্কৃতি সম্পূর্ণ ভিন্ন; তাই তাদের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে শহরের কোনো ফাকা বা নির্জন খাস জায়গায় স্থানান্তর অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

মানববন্ধনে তারা আরও বলেন, আমরা ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট সুইপার কলোনি পরিবর্তন করে সুবিধাজনক স্থানে স্থানান্তর বিষয়ে দরখাস্তসহ গণস্বাক্ষর প্রদান করেছি। আশাকরি তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন; আর তা না হলে আমরা পরবর্তীতে বৃহৎ কর্মসূচি গ্রহণ করবো।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

দর্শনা থানা পুলিশের অভিযানে ৬ কেজি গাজাসহ দুজন আটক

জীবননগরের দৌলতগঞ্জে প্রস্তাবিত সুইপার কলোনি স্থাপনের প্রতিবাদ: বৃহৎ কর্মসূচির হুশিয়ারি

প্রকাশের সময় : ১১:৩৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

জীবননগর পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ড ঐতিহ্যবাহী দৌলতগঞ্জ গ্রামে প্রস্তাবিত সুইপার কলোনি স্থাপনের প্রতিবাদে মৌন মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে এই মৌন মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মৌন মিছিলে শেষে এলাকাবাসী বলেন, জীবননগর পৌরসভার সুইপাররা দীর্ঘদিন ধরে শহরের মাংসপট্টিতে বসবাস করছেন। কিন্তু হঠাৎ করে সেখান থেকে সুইপার কলোনি স্থানান্তর করে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড দৌলতগঞ্জে কালীমন্দিরের পেছনে ভৈরব নদীর সরকারি খাস জমিতে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যার তীব্র প্রতিবাদ আমরা জানাচ্ছি।

এলাকাবাসী আরও বলেন, দৌলৎগঞ্জ একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। এক সময় জীবননগর শহরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দৌলতগঞ্জের নামে থাকলেও কালের পরিক্রমায় বর্তমানে শহরের প্রধান প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রধান বাজার, পোস্ট অফিস এখনও দৌলতগঞ্জের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এখানকার জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ও সরকারি বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। সর্বোপরি মহল্লার ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধন, ঐতিহ্য, ভ্রাতৃত্ববোধ ও ধর্মীয় আচার ও মূল্যবোধ অত্যন্ত প্রখর-যা প্রস্তাবিত সুইপার পল্লীর জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার সম্পূর্ণ বিপরীত।

তাছাড়া সুইপারদের শুকর পালন, নিয়মিত মদ্যপান, মাতাল অবস্থায় রাস্তায় চলাচল সবকিছুর নেতিবাচক প্রভাব মহল্লার ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর জীবনযাপনে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে; যা আগামী প্রজন্ম তথা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত ধ্বংসের শামিল যা অত্র মহল্লার দীর্ঘদিনের ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করবে।

এদিকে ৪নং ওয়ার্ড এলাকাবাসী নিজ এলাকা থেকে মৌন মিছিল করে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে উপস্থিত হয়ে মানববন্ধন পালন করেন।

ওই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জীবননগর পৌর বিএনপি সভাপতি শাহজাহান কবির, দৌলৎগঞ্জ সেবা সমিতি সভাপতি আব্দুস সবুর, ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইমরান হোসেন পলাশ, দৌলৎগঞ্জ সেবা সমিতি উপদেষ্টা আখতার-উজ-জামান মিঠু, উপদেষ্টা ফজলুর রহমান মাস্টার, সহ-সভাপতি একে আজাদ বিটু, সহ-সভাপতি আবুল কাশেম, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান মিন্টু, মিজানুর রহমান শুনুসহ ৪নং ওয়ার্ডের সকল নারী ও পুরুষ।

মানববন্ধনে জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবির বলেন, সুইপার সম্প্রদায় একটি আলাদা সংস্কৃতি। তাদের মদ্যপান, মাতাল অবস্থায় রাস্তায় চলাচলসহ বেশ কিছু ইসলাম পরিপন্থী কাজ যা দৌলতগঞ্জ গ্রামের মূল সংস্কৃতির অন্তরায়। বিশেষ করে তাদের উন্মুক্ত মদ্যপান করে; যা এই গ্রামের উঠতি বয়সী যুবকদের মাদকের দিকে উৎসাহিত করতে পারে। সেই সাথে নষ্ট হয়ে যেতে পারে সম্পূর্ণ যুবসমাজ।

৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইমরান হোসেন পলাশ বলেন, প্রশাসনের নিকট আমরা দাবি জানাচ্ছি জীবননগর শহরে আরো অনেক জায়গায় খাস জমে রয়েছে তাদেরকে সেখানে পুর্নবাসন করা যেতে পারে। আমরা হরিসম্প্রদায়কে ঘৃণা করছি না তবে তাদের সংস্কৃতির আর আমাদের সংস্কৃতি সম্পূর্ণ ভিন্ন; তাই তাদের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে শহরের কোনো ফাকা বা নির্জন খাস জায়গায় স্থানান্তর অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

মানববন্ধনে তারা আরও বলেন, আমরা ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট সুইপার কলোনি পরিবর্তন করে সুবিধাজনক স্থানে স্থানান্তর বিষয়ে দরখাস্তসহ গণস্বাক্ষর প্রদান করেছি। আশাকরি তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন; আর তা না হলে আমরা পরবর্তীতে বৃহৎ কর্মসূচি গ্রহণ করবো।