সোহেল রানা। পেশায় কসাইয়ের কাজ করেন। এ কাজ করেই নিজের সংসার সাজিয়েছিলেন। ঈদকে সামনে রেখে পরিবারের জন্য কেনাকাটাও করেন। তবে, নিজের সব কিছু শেষ হয়ে গেছে আগুনে। এমনকি আগুনে ইফতার করার মতো খাবারটুকুও অবশিষ্ট নেই।
রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শহরের পৌর কলেজপাড়ায় সোহেলের বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে তার বাড়ির সবকিছু পুড়ে গেছে।
খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তারা জানায়, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোহেল তার স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে টিনশেড ঘরে বসবাস করতেন। ঋণ নিয়ে ফ্রিজ, খাটসহ যাবতীয় আসবাবপত্র কিনেছিলেন। কিন্তু আগুনে টিনের ঘরটির সব জিনিসপত্র পুড়ে যায়। স্বর্ণালংকার, ঈদে সন্তানের জন্য নতুন পোশাকসহ মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। এতে তাদের ২ লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। সব কিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন পরিবারটি।
রোববার বিকেলে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোহেলের মা, স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে শারমিন পুড়ে যাওয়া ঘরের পাশে বসে কাঁদছেন।
পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া সোহেলের মেয়ে শারমিন খাতুন কাঁদতে কাঁদতে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আগুনে আমাদের সব কিছু পুড়ে গেছে। গোসল করে জামা পরিধান করব সেই কাপড়ও নেই। আমরা সবাই রোজা আছি। ইফতার করব সেই জিনিসও নেই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে শারমিন।
সোহেলের মা রেখা খাতুন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, লোকের বাড়ি কাজ করে এবং লোন তুলে যাবতীয় আসবাবপত্র কিনে দিয়েছি ছেলেকে। নগদ ২০ হাজার টাকা, নাতির জন্য বানানো স্বর্ণালংকার, ঈদের পোশাক, বাজারঘাট সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন আমরা কি করব?
চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গির আলম সরকার রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করছি।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা তুজ জোহরা রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। ঘটনাস্থলে টিম পরিদর্শন করেছেন। আজকের মধ্যে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
এএইচ