০৬:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জীবননগরে সাংবাদিকদের উপর হামলা : সেই ইউপি সদস্য কারাগারে

আব্দুর রশিদ জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

জীবননগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার হামলার শিকার একজন সাংবাদিক জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযোগ শুক্রবার মামলায় রেকর্ড করা হয়। এরপরই মামলার প্রধান আসামী ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে, শুক্রবার বিকেলে ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের বাড়িতে পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসিনা মমতাজ ও জীবননগর থানার পুলিশ। তারা ঘটনাটির প্রাথমিক তদন্ত করেন। এসময় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের স্ত্রীর কাছে ইউএনও জানতে চান, তার বাড়ির রান্নাঘরে পাওয়া টিসিবির দুই বস্তা চাল কোথায়? উত্তরে তার স্ত্রী বলেন, ওই চাল গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও হাসিনা মমতাজ রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে যদিও অভিযোগটা আমাদের দপ্তরে করা হয়নি, তবুও টিসিবির বিষয়টা আমাদের দপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট।

এ জন্য ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের বাসায় গিয়েছিলাম সরকারি মালামাল আছে কি না দেখার জন্য। সেখানে কিন্তু মালামালগুলো নেই, আমরা কিছু পাইনি। তারপরও আমরা এটি অধিকতর তদন্ত করব। এবং তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। একটা প্রসেসের মধ্যে অলরেডি আছে।’

জীবননগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, তিন সাংবাদিকের ওপর হামলায় ঘটনায় মো. মিঠুন মাহমুদ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। পরে সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে মামলার এক নম্বর আসামি ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত আছে।

তিনি আরও জানান, ‘প্রতারণামূলক সরকারি চাল আত্মসাৎ করার ঘটনায় আরেকটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এটি আমরা দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহে প্রেরণ করব। বিষয়টি তারা তদন্ত করবেন।’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়। ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ ভুয়া নামে কার্ড তৈরি করে টিসিবির পণ্য আত্মসাৎ করেছেন বলে খবর পান সাংবাদিকরা।

বিকেলে সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক মিঠুন মাহমুদ, আজিজুর রহমান ডাবুল ও তুহিনুজ্জামান তুহিন। এ সময় ইউপি সদস্যের বাড়ির রান্নাঘরে টিসিবির দুই বস্তা চাল ও বেশ কয়েক বোতল তেল পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি গালাগালি শুরু করে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। পরে তার নেতৃত্বে তার ভাই তরিকুল ইসলাম তরি (৪৬), আব্দুর রশিদের ছেলে আমির হামজা অঙ্কন (২৫), মৃত মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে মো. হাসিবুর রহমান সুমনসহ (৩০) অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়।

এ সময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত ক্যামেরা, মাইক্রোফোন বুম ও মোবাইল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই মিঠুন মাহমুদ বাদী হয়ে ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদসহ চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরদিন সেটি মামলায় রেকর্ড করা হয়।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

এক চাকা নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করলো বিমানের ফ্লাইট, নিরাপদে ৭১ যাত্রী

জীবননগরে সাংবাদিকদের উপর হামলা : সেই ইউপি সদস্য কারাগারে

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

আব্দুর রশিদ জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

জীবননগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার হামলার শিকার একজন সাংবাদিক জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযোগ শুক্রবার মামলায় রেকর্ড করা হয়। এরপরই মামলার প্রধান আসামী ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে, শুক্রবার বিকেলে ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের বাড়িতে পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসিনা মমতাজ ও জীবননগর থানার পুলিশ। তারা ঘটনাটির প্রাথমিক তদন্ত করেন। এসময় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের স্ত্রীর কাছে ইউএনও জানতে চান, তার বাড়ির রান্নাঘরে পাওয়া টিসিবির দুই বস্তা চাল কোথায়? উত্তরে তার স্ত্রী বলেন, ওই চাল গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও হাসিনা মমতাজ রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে যদিও অভিযোগটা আমাদের দপ্তরে করা হয়নি, তবুও টিসিবির বিষয়টা আমাদের দপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট।

এ জন্য ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের বাসায় গিয়েছিলাম সরকারি মালামাল আছে কি না দেখার জন্য। সেখানে কিন্তু মালামালগুলো নেই, আমরা কিছু পাইনি। তারপরও আমরা এটি অধিকতর তদন্ত করব। এবং তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। একটা প্রসেসের মধ্যে অলরেডি আছে।’

জীবননগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, তিন সাংবাদিকের ওপর হামলায় ঘটনায় মো. মিঠুন মাহমুদ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। পরে সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে মামলার এক নম্বর আসামি ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত আছে।

তিনি আরও জানান, ‘প্রতারণামূলক সরকারি চাল আত্মসাৎ করার ঘটনায় আরেকটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এটি আমরা দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহে প্রেরণ করব। বিষয়টি তারা তদন্ত করবেন।’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়। ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ ভুয়া নামে কার্ড তৈরি করে টিসিবির পণ্য আত্মসাৎ করেছেন বলে খবর পান সাংবাদিকরা।

বিকেলে সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক মিঠুন মাহমুদ, আজিজুর রহমান ডাবুল ও তুহিনুজ্জামান তুহিন। এ সময় ইউপি সদস্যের বাড়ির রান্নাঘরে টিসিবির দুই বস্তা চাল ও বেশ কয়েক বোতল তেল পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি গালাগালি শুরু করে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। পরে তার নেতৃত্বে তার ভাই তরিকুল ইসলাম তরি (৪৬), আব্দুর রশিদের ছেলে আমির হামজা অঙ্কন (২৫), মৃত মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে মো. হাসিবুর রহমান সুমনসহ (৩০) অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়।

এ সময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত ক্যামেরা, মাইক্রোফোন বুম ও মোবাইল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই মিঠুন মাহমুদ বাদী হয়ে ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদসহ চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরদিন সেটি মামলায় রেকর্ড করা হয়।