০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে একজনের শরীরে সনাক্ত হলো চীনে আতঙ্ক ছড়ানো এইচএমপিভি ভাইরাস

ভারত, জাপান ও মালেশিয়ার পর এবার বাংলাদেশেও শনাক্ত হলো চীনে আতঙ্ক ছড়ানো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত রোগী।

বাংলাদেশে একজন আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি নারী। যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায়।

রোববার (১২ জানুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, শনিবার (১১ জানুয়ারি) আমরা নতুন করে একজনের দেহে এইচএমপিভি সংক্রমণের একটা রিপোর্ট পেয়েছি। তিনি এইচএমপিভিতে আক্রান্তের পাশাপাশি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত। তিনি রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শারীরিক অবস্থা যতটুকু জেনেছি আগের চেয়ে খানিকটা ভালো।

তিনি বলেন, তিনি দেশেই আক্রান্ত হয়েছেন, কারণ তার কোনো বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। এটা খুবই স্বাভাবিক। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই আছে। সুতরাং এটা নিয়ে নতুন করে আতঙ্কের কিছু নেই।

নতুন করে ২০২৫ সালে এসে আতঙ্ক ছড়ালেও এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন।

তিনি বলেন, হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এটা শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আরও আগে থেকেই আমরা পেয়েছি। কাজেই এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়।

তাহমিনা শিরীন আরও বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন সর্বপ্রথম এই পরীক্ষাটি করেছি, তখনই কয়েকজন শনাক্ত পেয়েছিলাম। হয়তো এর আগেই যদি পরীক্ষা করা হতো, তাহলে আগেই শনাক্ত হতো। সুতরাং ঠিক কবে এই ভাইরাসটি দেশে এসেছে, সেটি বলা সম্ভব নয়। তবে প্রতিবছরই কমবেশি শনাক্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে এইচএমপিভির চিকিৎসার জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি নেই এবং এইচএমপিভি প্রতিরোধ করার জন্য কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই রোগের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এখন এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে।

ভয় ছড়ানো ‘এইচএমপিভি’ আক্রান্ত আছে দেশেও
বিশেষজ্ঞদের দাবি,এইচএমপিভি ২০০১ সাল থেকেই বাংলাদেশে আছে। এমনকি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে যথেষ্ট অ্যান্টিবডিও তৈরি হয়েছে। যে কারণে করোনাভাইরাসের মতো এই ভাইরাস নিয়ে এতো ভয়ের কিছু নেই।

সিডিসি বলছে, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে কোনো বয়সী মানুষের ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়ার মত অসুখ হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এটি শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল তাদের মধ্যেই বেশি দেখা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, ২০০১ সালে বিশ্বে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হয়ত আরো অনেক যুগ আগে থেকেই এই ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল পৃথিবীতে। কেউ কেউ বলছেন, ১৯৫৮ সাল থেকেই রোগটা আছে বলেও যোগসূত্র পাওয়া যায়।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

দর্শনা থানা পুলিশের অভিযানে ৬ কেজি গাজাসহ দুজন আটক

দেশে একজনের শরীরে সনাক্ত হলো চীনে আতঙ্ক ছড়ানো এইচএমপিভি ভাইরাস

প্রকাশের সময় : ০২:৫০:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

ভারত, জাপান ও মালেশিয়ার পর এবার বাংলাদেশেও শনাক্ত হলো চীনে আতঙ্ক ছড়ানো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত রোগী।

বাংলাদেশে একজন আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি নারী। যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায়।

রোববার (১২ জানুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, শনিবার (১১ জানুয়ারি) আমরা নতুন করে একজনের দেহে এইচএমপিভি সংক্রমণের একটা রিপোর্ট পেয়েছি। তিনি এইচএমপিভিতে আক্রান্তের পাশাপাশি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত। তিনি রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শারীরিক অবস্থা যতটুকু জেনেছি আগের চেয়ে খানিকটা ভালো।

তিনি বলেন, তিনি দেশেই আক্রান্ত হয়েছেন, কারণ তার কোনো বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। এটা খুবই স্বাভাবিক। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই আছে। সুতরাং এটা নিয়ে নতুন করে আতঙ্কের কিছু নেই।

নতুন করে ২০২৫ সালে এসে আতঙ্ক ছড়ালেও এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন।

তিনি বলেন, হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এটা শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আরও আগে থেকেই আমরা পেয়েছি। কাজেই এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়।

তাহমিনা শিরীন আরও বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন সর্বপ্রথম এই পরীক্ষাটি করেছি, তখনই কয়েকজন শনাক্ত পেয়েছিলাম। হয়তো এর আগেই যদি পরীক্ষা করা হতো, তাহলে আগেই শনাক্ত হতো। সুতরাং ঠিক কবে এই ভাইরাসটি দেশে এসেছে, সেটি বলা সম্ভব নয়। তবে প্রতিবছরই কমবেশি শনাক্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে এইচএমপিভির চিকিৎসার জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি নেই এবং এইচএমপিভি প্রতিরোধ করার জন্য কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই রোগের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এখন এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে।

ভয় ছড়ানো ‘এইচএমপিভি’ আক্রান্ত আছে দেশেও
বিশেষজ্ঞদের দাবি,এইচএমপিভি ২০০১ সাল থেকেই বাংলাদেশে আছে। এমনকি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে যথেষ্ট অ্যান্টিবডিও তৈরি হয়েছে। যে কারণে করোনাভাইরাসের মতো এই ভাইরাস নিয়ে এতো ভয়ের কিছু নেই।

সিডিসি বলছে, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে কোনো বয়সী মানুষের ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়ার মত অসুখ হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এটি শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল তাদের মধ্যেই বেশি দেখা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, ২০০১ সালে বিশ্বে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হয়ত আরো অনেক যুগ আগে থেকেই এই ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল পৃথিবীতে। কেউ কেউ বলছেন, ১৯৫৮ সাল থেকেই রোগটা আছে বলেও যোগসূত্র পাওয়া যায়।