ঢাকা-খুলনাগামী ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও ঢাকা-বেনাপোলগামী ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ এই দুটি ট্রেনের রুট আপাতত পরিবর্তন হচ্ছে না। ট্রেন দুটি আগের মত সব স্টেশন হয়েই চলাচল করবে।
আজ সোমবার (৪ নভেম্বর) নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান রাজবাড়ীর নবাগত জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমি রাজবাড়ী জেলায় যোগদান করার পরই জানতে পেরেছি এ জেলার মানুষ সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং রাজবাড়ী স্টেশন হয়ে চলাচলের দাবিতে আন্দোলন করছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহাদাত আলী সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। এখানকার রাজনৈতিক অবস্থা ও মানুষের চাহিদার কথা আমি তার কাছে তুলে ধরেছি। আমি বলেছি, যেহেতু এই ট্রেন এই রুটে চালু করা হয়েছে। এই ট্রেনের সুবিধায় মানুষ অভ্যস্ত হয়ে গেছে, মানুষ এই সুবিধাকে উপভোগ করছে। একই ধরনের বিকল্প সুবিধার ব্যবস্থা না করে এই ট্রেন কীভাবে বন্ধ করা হচ্ছে। তিনি আমাকে কথা দিয়েছেন যে, আপাতত তারা এই ট্রেন দুটি বন্ধ করবেন না। অবশ্যই বিকল্প সুবিধার ব্যবস্থা করে তারা ট্রেনের রুট পরিবর্তনের পরিকল্পনা করবেন।

উল্লেখ্য, সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং রাজবাড়ী স্টেশন হয়ে চলাচলের দাবিতে শনিবার (২ নভেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া থেকে ছেড়ে আসা ফরিদপুরের ভাঙ্গাগামী ‘রাজবাড়ী এক্সপ্রেস’ ট্রেন রাজবাড়ী রেলস্টেশনে আটকে রেলপথে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করে সাধারণ জনতা।
এছাড়া আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা।
একই দাবিতে রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ‘মধুমতী এক্সপ্রেস’ ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ট্রেন রাজবাড়ী রেলস্টেশনে আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া আজ সোমবার (৪ নভেম্বর) সকালে একই দাবিতে রাজবাড়ী রেলস্টেশনে জেলার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা জানান, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ও বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেন দুটি আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে অন্য রুটে চলাচল করবে- এমন খবর জানতে পারেন তারা। ট্রেনের রুট পরিবর্তন হলে রাজবাড়ীসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ রেলসেবা থেকে বঞ্চিত হবে। যে কারণে সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল ও রাজবাড়ী স্টেশন হয়ে চলাচলের দাবি তাদের। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বেনাপোল ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ না করে এ রুটে আরও নতুন ট্রেন দেওয়ার দাবি জানান। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারীরা।
রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বলেন, সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে এখনও আসেনি। রেল মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আমাদের এখনো লিখিত বা মৌখিক কোনো কিছু জানানো হয়নি।

চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় ট্রেন যাত্রী সালমান হোসেন বলেন , ১৫ নভেম্বর থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে প্রত্যাহার করে যশোর-খুলনা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাবে বলে জেনেছি। এটি কোনোভাবেই আমরা হতে দেব না। এমন সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আমার চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে মানববন্ধন করছি।
বিক্ষোভকারীদের একজন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাকিব বিশ্বাস বলেন , চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে ট্রেন কেন, একটি পাথর আমরা সরাতে দেব না। ট্রেন দুটি তো থাকবেই, অনেক আগে থেকে আরও নতুন ট্রেন স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছি। সেই দাবি না মানলে আমরা কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
সুত্র – ঢাকা পোস্ট
এএইচ