০৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামীলীগ নেতার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ভিডিও ভাইরাল, বিএনপির ২ নেতাকে শোকজ

আওয়ামী লীগ নেতার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির বিএনপির দুই নেতা কল রেকর্ডের অডিও-ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই রেকর্ড ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপরই ওই দুজনকে শোকজ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন খুলনা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রিয়াজ শাহেদ।

জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘আমি যুগ্ম-আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রিয়াজ শাহেদের কল রেকর্ডটি শুনেছি। বুধবার রাতেই তাদের শোকজ (কারণ দর্শানো) করা হয়েছে।’ তাদের জবাব সন্তোষজনক না হলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি।

অডিও-ভিডিও ক্লিপে বিএনপি নেতা চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের মেইন লোক হলো রিয়াজ, হয়তো জানেন। এখন যে পজিশন, সেই পজিশানের মধ্যে ওই এলাকায় কী পরিমাণ ক্ষতি করেছে, আমাদের ওই এলাকায় অনেক ক্ষতি করেছে সে। যাই হোক লোকাল পলিটিকসে আপনি (শেখ খালিদ আহমেদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক), বারবার বলতিছে যে, সে আমার ছোট বেলার বন্ধু, সে যেন না আসে। তার ব্যাপারটি একটু দেখতি হবে নে, যেন না ফাঁসে। ওর দিকে একটু খেয়াল-টেয়াল রাইখেন। তারপরও ওর জন্যি একটু করতি হবে।

প্রতি উত্তরে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, ভাই কী করতে হবে, বলেন না? ও তো আমার ভাই, বন্ধু সমস্যা নেই। কী করতে হবে বললি, আমার জন্য একটু সুবিধা হয়। তখন হোসেনকে বলতে শোনা যায়, কিছু হেল্পটেল্প করা লাগবে। পাশ থেকে ফিসফিসিয়ে আরেকজন বলে দুই লাখ টাকা দিতে হবে।

এ সময় হোসেনকে বলেন, এখন তো কম-বেশি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ম্যানেজ করা লাগবে। অপর ফোন থেকে বলা হয়, আপনি বলেন, আপনি বললে আমার মনটা ঠান্ডা হয়ে যায়।

হোসেন বলেন, লাখ দুই টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েন। উত্তরে সে বলে, আমি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি ভাই, কোনো সমস্যা নেই।

এরপর হোসেন যার সঙ্গে কথা বলছিলেন তার আরেকটি ফোনে শোনা যায়, ভাইকে অনেক কষ্টে ম্যানেজ করেছি। তুই ওইটা ম্যানেজ কর বন্ধু। তখন সে জানতে চায়, তোকে কে ফোন দিয়েছিল। সে উত্তরে বলে উনি হলেন, আমাদের মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক হোসেন ভাই। খবরদার কারও কাছে নাম বলবি না। বললে অসুবিধা আছে। তখন সে বলে না কারও কাছে বলব না দোসত।

তবে এটিকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করে বিএনপির রিয়াজ শাহেদ বলেন, ‘কল রেকর্ডটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। যারা আমাকে হত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। তারাই এখন আমার রাজনৈতিক ইমেজ নষ্ট করতে বেনামে অপপ্রচারে পোস্টারিং করছে।

তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে অডিও ক্লিপ বানিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। এই রেকর্ড ভয়েস নকল করার অ্যাপস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এতে ৬০/ ৭০ ভাগ মিল থাকলেও বাকি কণ্ঠের মিল নেই।’

একই কথা বলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘অ্যাপসের মাধ্যমে ভয়েস কল নকল করে এখন এগুলো করা হচ্ছে। এই কল রেকর্ডটি একদম ফেক, মিথ্যা, নকল, বানোয়াট। আমরা একটি পরিচ্ছন্ন পরিবার। আমার নিজের ব্যবসা আছে, আর আমি দুই লাখ টাকা চাঁদা এটা কেউ বিশ্বাসও করবে না। আমি প্রতিবাদও দিয়েছি। প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

দর্শনা থানা পুলিশের অভিযানে ৬ কেজি গাজাসহ দুজন আটক

আওয়ামীলীগ নেতার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ভিডিও ভাইরাল, বিএনপির ২ নেতাকে শোকজ

প্রকাশের সময় : ১০:২৬:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আওয়ামী লীগ নেতার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির বিএনপির দুই নেতা কল রেকর্ডের অডিও-ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই রেকর্ড ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপরই ওই দুজনকে শোকজ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন খুলনা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রিয়াজ শাহেদ।

জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘আমি যুগ্ম-আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক রিয়াজ শাহেদের কল রেকর্ডটি শুনেছি। বুধবার রাতেই তাদের শোকজ (কারণ দর্শানো) করা হয়েছে।’ তাদের জবাব সন্তোষজনক না হলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি।

অডিও-ভিডিও ক্লিপে বিএনপি নেতা চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের মেইন লোক হলো রিয়াজ, হয়তো জানেন। এখন যে পজিশন, সেই পজিশানের মধ্যে ওই এলাকায় কী পরিমাণ ক্ষতি করেছে, আমাদের ওই এলাকায় অনেক ক্ষতি করেছে সে। যাই হোক লোকাল পলিটিকসে আপনি (শেখ খালিদ আহমেদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক), বারবার বলতিছে যে, সে আমার ছোট বেলার বন্ধু, সে যেন না আসে। তার ব্যাপারটি একটু দেখতি হবে নে, যেন না ফাঁসে। ওর দিকে একটু খেয়াল-টেয়াল রাইখেন। তারপরও ওর জন্যি একটু করতি হবে।

প্রতি উত্তরে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, ভাই কী করতে হবে, বলেন না? ও তো আমার ভাই, বন্ধু সমস্যা নেই। কী করতে হবে বললি, আমার জন্য একটু সুবিধা হয়। তখন হোসেনকে বলতে শোনা যায়, কিছু হেল্পটেল্প করা লাগবে। পাশ থেকে ফিসফিসিয়ে আরেকজন বলে দুই লাখ টাকা দিতে হবে।

এ সময় হোসেনকে বলেন, এখন তো কম-বেশি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ম্যানেজ করা লাগবে। অপর ফোন থেকে বলা হয়, আপনি বলেন, আপনি বললে আমার মনটা ঠান্ডা হয়ে যায়।

হোসেন বলেন, লাখ দুই টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েন। উত্তরে সে বলে, আমি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি ভাই, কোনো সমস্যা নেই।

এরপর হোসেন যার সঙ্গে কথা বলছিলেন তার আরেকটি ফোনে শোনা যায়, ভাইকে অনেক কষ্টে ম্যানেজ করেছি। তুই ওইটা ম্যানেজ কর বন্ধু। তখন সে জানতে চায়, তোকে কে ফোন দিয়েছিল। সে উত্তরে বলে উনি হলেন, আমাদের মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক হোসেন ভাই। খবরদার কারও কাছে নাম বলবি না। বললে অসুবিধা আছে। তখন সে বলে না কারও কাছে বলব না দোসত।

তবে এটিকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করে বিএনপির রিয়াজ শাহেদ বলেন, ‘কল রেকর্ডটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। যারা আমাকে হত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। তারাই এখন আমার রাজনৈতিক ইমেজ নষ্ট করতে বেনামে অপপ্রচারে পোস্টারিং করছে।

তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে অডিও ক্লিপ বানিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। এই রেকর্ড ভয়েস নকল করার অ্যাপস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এতে ৬০/ ৭০ ভাগ মিল থাকলেও বাকি কণ্ঠের মিল নেই।’

একই কথা বলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘অ্যাপসের মাধ্যমে ভয়েস কল নকল করে এখন এগুলো করা হচ্ছে। এই কল রেকর্ডটি একদম ফেক, মিথ্যা, নকল, বানোয়াট। আমরা একটি পরিচ্ছন্ন পরিবার। আমার নিজের ব্যবসা আছে, আর আমি দুই লাখ টাকা চাঁদা এটা কেউ বিশ্বাসও করবে না। আমি প্রতিবাদও দিয়েছি। প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’