বানভাসীদের পাশে দাঁড়াতে চুয়াডাঙ্গা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। টানা ৮ দিনে নগদ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৬১৬ টাকাসহ সংগ্রহ করেন শিক্ষার্থীরা। এই টাকা দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী পন্য ক্রয় করেন বানভাসীদের জন্য।
এ সকল ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ১০ সদস্যের একটি দল সোমবার (২ সেপ্টম্বর) মধ্যরাতে বন্যা দুর্গত এলাকা খুলনার পাইকগাছার উদ্দেশ্যে চুয়াডাঙ্গা ত্যাগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সোমবার বিকেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, পাঁচ’শ প্যাকেট স্যানিটারি ন্যাপকিন, শিশু খাদ্য, প্রয়োজনিও ওষুধ, বানবাসীদের পুনর্বাসনের জন্য ৮৪টি ত্রিপল, ১৫০০ স্কয়ার ফিট রোল ত্রিপল, ৪০ বস্তা পোশাকসহ ৫৬ বস্তা চাল ও অন্যান্য সামগ্রী ক্রয় করেছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আল মুতাকাব্বির সাকিব বলেন, সোমবার মধ্যরাতে খুলনার পাইকগাছার উদ্দেশে চুয়াডাঙ্গা ত্যাগ করবে আমাদের টিম। আমরা পুনর্বাসনের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের সংগৃহীত টাকা ও ত্রাণের সামান্য কোনো অংশও কারো ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার হবে না। ত্রাণসামগ্রী নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যে ১০ জন শিক্ষার্থী যাচ্ছেন, তারা ২—৩ দিন সেখানে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। তাদের যাতায়াত থেকে খাওয়া খরচ তারা নিজেরাই বহন করবেন। আমাদের টিমের একজন সদস্য তার ব্যক্তি উদ্যোগে একটি ট্রাক সরবরাহ করেছেন। যার জ্বালানি খরচ বহন করছেন অন্য আরেকজন। আমরা কারো নাম উল্লেখ করছি না।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, তরুণ প্রজন্মের ত্যাগ ও রক্তে গড়া এই নতুন বাংলাদেশের যাত্রার শুরুতেই একটি বড় বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হলো এই প্রকৃতিক-রাজনৈতিক বন্যা। অতিসাম্প্রতিক বিপ্লবে তরুণ প্রজন্ম যে ঐক্য দেখিয়েছে, বন্যার ক্ষেত্রেও সারা দেশজুড়ে ঠিক একই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দৃশ্যমান। আমরা চুয়াডাঙ্গার তরুণ প্রজন্মও ঐক্যবদ্ধ আছি যেকোনো বিপদ মোকাবিলায় ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার কার্যক্রমে। সুতরাং এই বন্যায় চুয়াডাঙ্গাবাসীর মানবিক সহায়তা কার্যক্রম নতুন বাংলাদেশের পথচলায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ফেনী-নোয়াখালী অঞ্চলের বন্যা যতটা লাইমলাইটে এসেছে খুলনা পাইকগাছা অঞ্চলের বন্যা ততটা আসেনি। আমারা যেহেতু খুলনা বিভাগের বাসিন্দা, সুতরাং খুলনা বিভাগের বন্যার্তদের সহায়তা করা আমাদের বিবেচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। তাই ত্রাণসামগ্রী ও অর্থ সহায়তা নিয়ে আমাদের টিম আগামীকাল দিবাগত রাত তিনটায় একটি ট্রাকে করে খুলনা পাইকগাছার দেলুটি কালিনগর অঞ্চলে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যেই আজ দুপুর একটায় চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে স্বাক্ষাৎ করে সামগ্রিক কার্যক্রম অবহিত করেছি। আপনাদের মাধ্যমে আমরা চুয়াডাঙ্গা বাসীর নিকট দোয়া চাইছি যেন এই ‘ত্রাণ ও পূনর্বাসন কার্যক্রম’ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারি তথা আপনাদের আমানতের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারি।
এএইচ