চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের অবস্থিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘উপশম নার্সিং হোম’ ক্লিনিকে অস্ত্রপচারের সময় জাহানারা খাতুন (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাত ১১টার দিকে অস্ত্রোপচারের টেবিলেই মৃত্যু হয় জাহানারা খাতুনের।
মৃত. জাহানারা খাতুন মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী।
জাহানারা খাতুনের অস্ত্রোপচার করেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. এহসানুল হক তন্ময় এবং অ্যানেসথেসিয়া দেন মেডিকেল অফিসার (অ্যানেসথেসিয়া) ডা. রেজওয়ানুল হক সজিব।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাহানারা বেগম এইউবি (জরায়ুতে রক্ত ধারণক্ষমতা কম) রোগে ভুগছিলেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট ডা. শাপলা খাতুনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত তিন দিন আগে সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময়ের কাছে চিকিৎসা নেন তিনি।
অস্ত্রোপচারের জন্য গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় উপসম নার্সিং হোমে তাকে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। ভর্তির প্রায় ১২ ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে জরায়ুর অস্ত্রোপচারের জন্য সাহানারাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। রাত ১১টার দিকে অপারেশন থিয়েটার থেকে জানানো হয় অস্ত্রোপচারের সময় হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা গেছেন।
জাহানারা খাতুনের বোন নাসরিন খাতুন বলেন, ‘অপারেশনের আগে বোন অনেক ভয় পাচ্ছিলো। কিন্তু জানতাম না সে মারা যাবে। জানলে বোনের অপারেশন করাতাম না।’
ভাই মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার পরে আমার আরেক বোন মোবাইলে আমাকে বোনের অপারেশনের জন্য ১ ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ করতে বলে। রক্ত ম্যানেজ করে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গায় এসে জানতে পারি বোন মারা গেছে। ডাক্তার জানান, অপারেশনের সময় আমার বোনের হার্ট ফেল হওয়ায় মৃত্যু হয়। অনেক চেষ্টা করেও ডাক্তাররা তাকে বাঁচাতে পারেনি।’
তবে এ ঘটনায় রোগীর স্বজনদের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ নেই বলে জানান তারা।
অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ডা. রেজওয়ানুল হক বলেন, অস্ত্রোপচার শুরুর কিছুক্ষণ পর তার হার্ট ফেইলিউর হয়। এসময় আমাদের পক্ষ থেকে সিপআর, মাউথ টু মাউথ ব্রেথসহ সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. এহসানুল হক তন্ময় বলেন, রোগীর জরায়ুতে রক্ত ধারণক্ষমতা কম ছিল। এ জন্য রোগীকে অস্ত্রোপরারের করা হচ্ছিল। অপারেশন টেবিলে রোগীকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার পর কমপ্লিকেশন দেখা দেয়। এসময় হার্ট ফেইলিউর-এর কারণে তিনি মারা যান।
সুত্র – দৈনিক সময়ের সমীকরণ
এএইচ