অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের করায় দামুড়হুদার নাস্তিপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ছররা গুলিতে নবিউল ইসলাম (৩০) নামের এক চোরাকারবারি আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার (২৮ মে) দিবাগত রাত ৩টার দিকে আহত অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
নবিউল ইসলাম চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামেরব মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। তার শরীরে অসংখ্য ক্ষতের চিহৃ দেখা গেছে। তবে বিষয়টি ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে আহত নবিউল ইসলাম সহ তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে নবিউল ইসলাম সীমান্তে বোমা বিস্ফোরণে আহত হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এরপরই রেডিও চুয়াডাঙ্গার অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিএসএফের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন বলে জেনেছি। হতে পারে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিলেন তিনি। তার নামে তিনটি মামলা রয়েছে। দুটি মাদক মামলা ও একটি বিজিবি সদস্যদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দামুড়হুদার বাড়াদি সীমান্তের ৭৯/৮০ পিলারের কাছ দিয়ে চোরাইপথে ভারতে প্রবেশ করেন নবিউল ইসলাম। কাজ শেষে ফেরার সময় ভারতের নদিয়া জেলার বিজয়পুর ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফের সামনে পড়লে ছররা গুলি বর্ষন করেন। এতে নবিউল ইসলামের শরীরে অসংখ্য ছররা গুলির আঘাতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। সেই অবস্থায় সীমান্তপার হয়ে বাড়িতে চলে আসে নবিউল ইসলাম। পরে পরিবারের সদস্যরা রাত ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, শুনেছি বিএসএফের ছোড়া ছরর গুলিতে এক যুবক আহত হয়েছেন। হয়তো অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। তিনি চোরাকারবারির সঙ্গে যুক্ত আছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
এদিকে, সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নবিউল ইসলামের রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, রাতে বাড়ির পাশে মাথাভাঙ্গা নদীর পাড়ে বসে ছিলাম। এরমধ্যেই হঠাৎ করেই আমার শরীরে কিছু একটা পড়ার শব্দ হয়। এরপর তার শরীর জখম হয়।
নবিউলের ভাই গোলাম মোস্তফা রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আমার ভাই মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে বসে ফুফুর বাড়ির ব্রডব্যান্ড (ওয়াইফাই) ব্যবহার করছিলেন। আশপাশের মানুষ বিকট শব্দ শুনে নদীর তীরে গেলে আমার ভাইকে জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে আমরা দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনস্যান্টেন্ট (সার্জারি) ডা. এহসানুল হক তন্ময় রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, তার শরীরে কিছুর একটা আঘাত হয়েছে। তার চিকিৎসা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই হবে। কিসের আঘাত জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা জানতে হলে আমাকে শুরু থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করতে হবে বলে। এখনি বলা সম্ভব নয়। সময় লাগবে।
এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়কের সরকারি নাম্বারে একাধিবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এএইচ