১০:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন চুয়াডাঙ্গার দুই এমপির স্বজন, হতাশায় নেতাকর্মীরা

তবে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান, নিকটাত্মীয় ও স্বজনের মধ্যে ২০ উপজেলায় ২৯ জন এ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। এদের মধ্যে আছেন চুয়াডাঙ্গার- ১ ও ২ আসনের দুই সংসদ সদস্যের দুই স্বজন।

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের সহোদর আলী মুনছুর বাবু। তিনি দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয় বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

দলীয় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝণ্টুকে সে সময় তিনি পরাজিত করেন। তবে সংসদ সদস্যের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম প্রার্থী হয়েও দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে পরবর্তীতে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ভাতিজা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। বাছাইয়ে মনোনয়নপত্রটি বৈধ হয়। তিনি পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন।

আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে এমপির স্বজনরা প্রার্থী হওয়ায় তারা হতাশায় পড়েছেন।

প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায়।

এদিকে, এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের প্রার্থী হওয়া নিয়ে আইনে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির হল রুমে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

আনিছুর রহমান বলেন, আইনে বলা আছে যিনি প্রাপ্তবয়ষ্ক, যিনি ভোটে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা রাখেন এমন যে কেউই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। আমরা জেনেছি অনেক স্থানে এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয় প্রার্থী হয়েছেন। তবে গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী আমরা কোথাও কোনো সমস্যা দেখছি না। তবে যেসব উপজেলায় সমস্যা সৃষ্টি হবে, আমাদের কাছে আইন আছে, আমরা ভোট স্থগিত রাখতে পারি। আইন অমান্য করলে প্রার্থিতা বাতিল করতে পারি।

অপরদিকে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়নি। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়- কোনো সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

২৩ এপ্রিল দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মোতাত্তয়াক্কিল রহমানের স্বাক্ষরিত আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী মুনছুর বাবু।

এদিকে, দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম। তিনি চুয়াডাঙ্গা ২ আসনে সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে।

এ বিষয়ে সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয় নির্দেশনায় আমি সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের স্বজন হওয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি।’

সংসদ সদস্য টগরের ছোট ভাই আলি মুনছুর বাবু জানান, ‘রানিং চেয়ারম্যান আছি বলেই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। গতবার দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলাম। যারা চেয়ারম্যান ছিল, তারা সবাই ভোট করছে, তাই আমিও এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। শুধু নাটোরে একজন নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। সবাইতো ভোটের মাঠে আছে।’

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের আপন ভাতিজা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘গতবার উপজেলা নির্বাচনে ভোট করেছিলাম, সেবার এমপি সাহেব আমার বিপক্ষে ছিল। এবারও আমার বিপক্ষে রয়েছেন। মাঠের পরিস্থিতি ও জনগণের চাপে ভোট করছি।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত মৌখিক, গণমাধ্যমে এসেছে। ৩০ এপ্রিল কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আহ্বান করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওখানে সিদ্ধান্ত হবে। দলীয় সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বিষয়টি বোঝা যাবে কারা থাকবে আর কারা থাকবে না।’

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আশাদুল হক বিশ্বাস, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান (গরীব রুহানী মাসুম), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মামুন-অর-রশীদ আঙ্গুর, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মিরাজুল ইসলাম কাবা, সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী শামীম হোসেন মিজি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদী মিলি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুন্নাহার কাকলী ও মাসুমা খাতুন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯৯টি ভোট কেন্দ্রের ৭৪০টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২য় ধাপে আগামী ২১ মে। এসব কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৫ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৩৭ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৩২ হাজার ৪০৮ জন নারী ভোটার রয়েছেন।

দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এস এ এম জাকারিয়া আলম ও দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আবু তালেব বিশ্বাস।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে শফিউল কবির ইউসুফ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাহিদা খাতুন ও তানিয়া খাতুন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯৬টি কেন্দ্রের ৭০০টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১ম ধাপে আগামী ৮ মে। এখানে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৭৯ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ২২ হাজার ৯৪১ জন।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

দর্শনা থানা পুলিশের অভিযানে ৬ কেজি গাজাসহ দুজন আটক

দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন চুয়াডাঙ্গার দুই এমপির স্বজন, হতাশায় নেতাকর্মীরা

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৬:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

তবে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান, নিকটাত্মীয় ও স্বজনের মধ্যে ২০ উপজেলায় ২৯ জন এ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। এদের মধ্যে আছেন চুয়াডাঙ্গার- ১ ও ২ আসনের দুই সংসদ সদস্যের দুই স্বজন।

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের সহোদর আলী মুনছুর বাবু। তিনি দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয় বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

দলীয় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝণ্টুকে সে সময় তিনি পরাজিত করেন। তবে সংসদ সদস্যের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম প্রার্থী হয়েও দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে পরবর্তীতে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ভাতিজা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। বাছাইয়ে মনোনয়নপত্রটি বৈধ হয়। তিনি পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন।

আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে এমপির স্বজনরা প্রার্থী হওয়ায় তারা হতাশায় পড়েছেন।

প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায়।

এদিকে, এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের প্রার্থী হওয়া নিয়ে আইনে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির হল রুমে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

আনিছুর রহমান বলেন, আইনে বলা আছে যিনি প্রাপ্তবয়ষ্ক, যিনি ভোটে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা রাখেন এমন যে কেউই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। আমরা জেনেছি অনেক স্থানে এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয় প্রার্থী হয়েছেন। তবে গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী আমরা কোথাও কোনো সমস্যা দেখছি না। তবে যেসব উপজেলায় সমস্যা সৃষ্টি হবে, আমাদের কাছে আইন আছে, আমরা ভোট স্থগিত রাখতে পারি। আইন অমান্য করলে প্রার্থিতা বাতিল করতে পারি।

অপরদিকে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়নি। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়- কোনো সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

২৩ এপ্রিল দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মোতাত্তয়াক্কিল রহমানের স্বাক্ষরিত আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী মুনছুর বাবু।

এদিকে, দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম। তিনি চুয়াডাঙ্গা ২ আসনে সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে।

এ বিষয়ে সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয় নির্দেশনায় আমি সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের স্বজন হওয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি।’

সংসদ সদস্য টগরের ছোট ভাই আলি মুনছুর বাবু জানান, ‘রানিং চেয়ারম্যান আছি বলেই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। গতবার দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলাম। যারা চেয়ারম্যান ছিল, তারা সবাই ভোট করছে, তাই আমিও এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। শুধু নাটোরে একজন নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। সবাইতো ভোটের মাঠে আছে।’

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের আপন ভাতিজা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘গতবার উপজেলা নির্বাচনে ভোট করেছিলাম, সেবার এমপি সাহেব আমার বিপক্ষে ছিল। এবারও আমার বিপক্ষে রয়েছেন। মাঠের পরিস্থিতি ও জনগণের চাপে ভোট করছি।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত মৌখিক, গণমাধ্যমে এসেছে। ৩০ এপ্রিল কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আহ্বান করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওখানে সিদ্ধান্ত হবে। দলীয় সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বিষয়টি বোঝা যাবে কারা থাকবে আর কারা থাকবে না।’

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আশাদুল হক বিশ্বাস, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান (গরীব রুহানী মাসুম), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মামুন-অর-রশীদ আঙ্গুর, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মিরাজুল ইসলাম কাবা, সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী শামীম হোসেন মিজি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদী মিলি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুন্নাহার কাকলী ও মাসুমা খাতুন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯৯টি ভোট কেন্দ্রের ৭৪০টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২য় ধাপে আগামী ২১ মে। এসব কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৫ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৩৭ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৩২ হাজার ৪০৮ জন নারী ভোটার রয়েছেন।

দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এস এ এম জাকারিয়া আলম ও দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আবু তালেব বিশ্বাস।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে শফিউল কবির ইউসুফ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাহিদা খাতুন ও তানিয়া খাতুন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯৬টি কেন্দ্রের ৭০০টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১ম ধাপে আগামী ৮ মে। এখানে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৭৯ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ২২ হাজার ৯৪১ জন।