পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায়। এখন থেকে আর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার জন্য থানায় যেতে হবে না, বরং ঘরে বসেই অনলাইনে সকল প্রকার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারবেন চুয়াডাঙ্গা জেলার পাঁচ থানার নাগরিকরা।
রোববার (২১ জুলাই) রাত ১২টা ১ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় উপস্থিত হয়ে একযোগে জেলার পাঁচটি থানায় ‘অনলাইন জিডি কার্যক্রম’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার গোলাম মওলা ( বিপিএম-সেবা)।
এই কার্যক্রমের মাধ্যমে জেলার পাঁচ থানায় এখন থেকে যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে অনলাইনের মাধ্যমে সকল প্রকার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা যাবে। পূর্বে শুধু হারানো সংক্রান্ত জিডির সুবিধা থাকলেও, এখন পূর্ণাঙ্গ জিডি সেবা ঘরে বসেই পাওয়া যাবে যার ফলে নাগরিক ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসবে।
পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার ৫টি থানায় অনলাইন জিডি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এখন সকল ধরনের জিডি অনলাইনে করা যাবে। নাগরিকরা নিজেদের বাড়িতে বসেই এই সেবা নিতে পারবেন, যা সময় ও ঝক্কি-ঝামেলা দুটোই বাঁচাবে। অনলাইন জিডি চালুর মাধ্যমে পুলিশি সেবাকে আরো আধুনিক ও সহজলভ্য করা হলো। এখন থেকে নাগরিকরা মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে সহজেই অভিযোগ জানাতে পারবেন। তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথেও সরাসরি অনলাইনে যোগাযোগ করা যাবে এবং জিডির সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
পুলিশ সুপার বলেন, অনলাইন জিডি করার প্রক্রিয়া খুবই সহজ প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে ‘অনলাইন জিডি’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর অ্যাপটিতে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন শেষ হলেই অ্যাপ থেকে কাঙ্ক্ষিত সকল জিডি সেবা পাওয়া যাবে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, “একজন নাগরিকের একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্ম নিবন্ধন, একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং ওয়াইফাই সংযোগ থাকলেই যেকোনো জায়গা থেকে এই অনলাইন সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, পুলিশের সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের নির্দেশনায়, আইজিপি মহোদয় এবং রেঞ্জ ডিআইজি খুলনা মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় এই কার্যক্রমগুলো চলমান থাকবে।
পুলিশ সুপার বলেন, অনেক সময় থানায় গিয়ে ঝুঁকি ঝামেলা পোহাতে হয়। এখন যার যার বাড়ি থেকে বাড়িতে বসে এই কাজটি সে করতে পারবে। হুমকি সহ বিভিন্ন ধরনের জিডি ঘরে বসেই অনলাইনে করা যাবে। তবে কেউ চাইলে বরাবরের মতো থানায় এসেও জিডি করার সুযোগ পাবেন। প্রতিটি থানায় কম্পিউটার অপারেটরসহ প্রয়োজনীয় সকল লজিস্টিক সাপোর্ট প্রস্তুত রয়েছে, যাতে জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দেওয়া যায়।
পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা জেলার নাগরিকদের উদ্দেশ্য বলেন, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, অসম্পূর্ণ তথ্য সম্বলিত জিডির ক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে প্রকৃত সত্য ঘটনা ও তথ্য সমৃদ্ধ সাক্ষ্য প্রমাণ সাপেক্ষে জিডি করার অনুরোধ জানান। এই অনলাইন জিডি কার্যক্রম জনগণের জন্য পুলিশি সেবা ডিজিটাল ও অধিকতর স্বচ্ছ করার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অ্যপস) কনক কুমার দাস, সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজিব হাসান কচি প্রমুখ।
এএইচ
নিজস্ব প্রতিবেদক 






















