০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সঙ্গে কানামাছি খেলছে : রিজভী

রোববার (৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকাস্থ নীলফামারী জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরামের উদ্যোগে সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিনের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আউয়াল প্রমুখ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে রিজভী বলেন, আজকে মানুষ কিন্তু নানা কথা ভাবছে যে দোসরদের দুধ-কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে। তারা হয়ত আপনার সরকারকে বিএনপির বিরুদ্ধে নানাভাবে বুঝাচ্ছে। তারা বুঝাচ্ছে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হবে। বিএনপির প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে আপনার সরকারের ভূমিকা এমন মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আপনার সরকারের ভেতরে হয়ত কয়েকজন নির্বাচন চায় না। একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন তারা। ডিসেম্বরে, না হলে ফেব্রুয়ারিতে বা জুনে এরকম নানা কথা বলছেন। কিন্তু, কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলছেন না অমুক মাসেই নির্বাচন হবে।

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে রিজভী আরও বলেন, আজকে মানবিক করিডোরের কথা বলছেন। এই মানবিক করিডোরের কথা আপনাকে লুকিয়ে লুকিয়ে বলতে হচ্ছে। আপনার জনগণের মেন্ডেট নেই, আপনি নির্বাচিত নন। আজকে সব দিক থেকে এই কথা ধ্বনিত হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়া কি হবে, আমাদের সার্বভৌমত্বের অবস্থা কি হবে, এটা জনগণের কাছে কোনোভাবেই খোলাসা করেননি। অনির্বাচিত সরকার অনেক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু, আপনার সরকারের প্রতি প্রত্যেকটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু সেই সমর্থনের মধ্যে আপনাদের যে বলীয়ান হওয়ার কথা, সেই বলীয়ান আপনারা হতে পারেননি। কারণ জনগণের সঙ্গে আপনারা কানামাছি খেলা খেলছেন। এত লুকোচুরি করছেন যে, কানামাছি খেলতে গিয়ে জনগণের কাছে আপনারা সন্দেহের মধ্যে পড়ছেন।

তিনি বলেন, আজকে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করে দিয়েছে। আমাদের মালামাল ভারতের পোর্ট দিয়ে অন্য দেশে যেত। কেন করেছে? আমাদের সঙ্গে তো কোনো বৈরিতা নেই। আজকে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সংকট তৈরি হয়েছে। সেটা তাদের দুই দেশের মধ্যকার বিষয়। তাহলে আজকে যে দিল্লি একের পর এক বাংলাদেশ বিরোধী ভূমিকা রাখছে, আমরা তো সেই শেখ হাসিনার মতই দেখছি। আপনাদের কোনো প্রতিবাদ নেই, কোনো উচ্চকণ্ঠ নেই, এবং এটা করলে আমাদের বিকল্প কি- এটাও তো জনগণের কাছে খোলাসা করা উচিত। তাদের মালামাল যাবে আমাদের দেশের ওপর দিয়ে, আমাদের নৌপথ সড়ক পথ ব্যবহার করবে। কিন্তু আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট যে ব্যবস্থা ভারতের সঙ্গে ছিল, সেটা তারা বন্ধ করে দিল।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসল যে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন, সে যে অবৈধভাবে ক্ষমতা নিয়েছিল সেটা প্রমাণ করার জন্য বিএনপির সমর্থক কিছু নেতাদের জনগণের সামনে কলঙ্কিত করার জন্য তারা নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। তার মধ্যে ছিল মিথ্যা মামলা। সেই মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছিল শাহরিন ইসলাম তুহিনের নামে। রাজনৈতিক কারণে তুহিনকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। একইরকম ঘটনায় অন্যরা রেহাই পেলে তুহিন কেন পাবে না? আইন মন্ত্রণালয় যেখানে বলেছে যে কোনো অসুবিধা নেই, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে এটি আটকে থাকার কথা নয়।

তিনি বলেন, আমরা তো বারবার বলছি আওয়ামী দোসররা বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। যারা বিএনপি বিরোধী, বেগম খালেদা জিয়া বিরোধী। তারা প্রশাসনে আছে এবং তারা গিরগিটির মতো রং পরিবর্তন করছে। রং পরিবর্তন করে ওরা নিজেদের উদ্দেশ্য সাধন করছে এবং ওরা গণতন্ত্র, নির্বাচন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে দিতে চায় না। আমরা বলেছি যারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙেছে, যারা সংবিধান থেকে মুছে দিয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, তারা তো আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে, আজও চাকরি করছে। যে বিচারপতি আক্তারুজ্জামান বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে, সে এখনো কীভাবে বিচারপতি থাকে?

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

ঋণের দায়ে গাভি কেড়ে নিলেন বিএনপি নেতা, বাছুর নিয়ে আদালতে নারগিস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সঙ্গে কানামাছি খেলছে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৪:০১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

রোববার (৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকাস্থ নীলফামারী জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরামের উদ্যোগে সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিনের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আউয়াল প্রমুখ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে রিজভী বলেন, আজকে মানুষ কিন্তু নানা কথা ভাবছে যে দোসরদের দুধ-কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে। তারা হয়ত আপনার সরকারকে বিএনপির বিরুদ্ধে নানাভাবে বুঝাচ্ছে। তারা বুঝাচ্ছে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হবে। বিএনপির প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে আপনার সরকারের ভূমিকা এমন মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আপনার সরকারের ভেতরে হয়ত কয়েকজন নির্বাচন চায় না। একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন তারা। ডিসেম্বরে, না হলে ফেব্রুয়ারিতে বা জুনে এরকম নানা কথা বলছেন। কিন্তু, কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলছেন না অমুক মাসেই নির্বাচন হবে।

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে রিজভী আরও বলেন, আজকে মানবিক করিডোরের কথা বলছেন। এই মানবিক করিডোরের কথা আপনাকে লুকিয়ে লুকিয়ে বলতে হচ্ছে। আপনার জনগণের মেন্ডেট নেই, আপনি নির্বাচিত নন। আজকে সব দিক থেকে এই কথা ধ্বনিত হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়া কি হবে, আমাদের সার্বভৌমত্বের অবস্থা কি হবে, এটা জনগণের কাছে কোনোভাবেই খোলাসা করেননি। অনির্বাচিত সরকার অনেক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু, আপনার সরকারের প্রতি প্রত্যেকটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু সেই সমর্থনের মধ্যে আপনাদের যে বলীয়ান হওয়ার কথা, সেই বলীয়ান আপনারা হতে পারেননি। কারণ জনগণের সঙ্গে আপনারা কানামাছি খেলা খেলছেন। এত লুকোচুরি করছেন যে, কানামাছি খেলতে গিয়ে জনগণের কাছে আপনারা সন্দেহের মধ্যে পড়ছেন।

তিনি বলেন, আজকে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করে দিয়েছে। আমাদের মালামাল ভারতের পোর্ট দিয়ে অন্য দেশে যেত। কেন করেছে? আমাদের সঙ্গে তো কোনো বৈরিতা নেই। আজকে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সংকট তৈরি হয়েছে। সেটা তাদের দুই দেশের মধ্যকার বিষয়। তাহলে আজকে যে দিল্লি একের পর এক বাংলাদেশ বিরোধী ভূমিকা রাখছে, আমরা তো সেই শেখ হাসিনার মতই দেখছি। আপনাদের কোনো প্রতিবাদ নেই, কোনো উচ্চকণ্ঠ নেই, এবং এটা করলে আমাদের বিকল্প কি- এটাও তো জনগণের কাছে খোলাসা করা উচিত। তাদের মালামাল যাবে আমাদের দেশের ওপর দিয়ে, আমাদের নৌপথ সড়ক পথ ব্যবহার করবে। কিন্তু আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট যে ব্যবস্থা ভারতের সঙ্গে ছিল, সেটা তারা বন্ধ করে দিল।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসল যে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন, সে যে অবৈধভাবে ক্ষমতা নিয়েছিল সেটা প্রমাণ করার জন্য বিএনপির সমর্থক কিছু নেতাদের জনগণের সামনে কলঙ্কিত করার জন্য তারা নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। তার মধ্যে ছিল মিথ্যা মামলা। সেই মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছিল শাহরিন ইসলাম তুহিনের নামে। রাজনৈতিক কারণে তুহিনকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। একইরকম ঘটনায় অন্যরা রেহাই পেলে তুহিন কেন পাবে না? আইন মন্ত্রণালয় যেখানে বলেছে যে কোনো অসুবিধা নেই, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে এটি আটকে থাকার কথা নয়।

তিনি বলেন, আমরা তো বারবার বলছি আওয়ামী দোসররা বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। যারা বিএনপি বিরোধী, বেগম খালেদা জিয়া বিরোধী। তারা প্রশাসনে আছে এবং তারা গিরগিটির মতো রং পরিবর্তন করছে। রং পরিবর্তন করে ওরা নিজেদের উদ্দেশ্য সাধন করছে এবং ওরা গণতন্ত্র, নির্বাচন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে দিতে চায় না। আমরা বলেছি যারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙেছে, যারা সংবিধান থেকে মুছে দিয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, তারা তো আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে, আজও চাকরি করছে। যে বিচারপতি আক্তারুজ্জামান বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে, সে এখনো কীভাবে বিচারপতি থাকে?