০৭:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুরে আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় এএসআইসহ ২ পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত

রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের একজন সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) ২ পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

দুজনকে সাময়িক বরখাস্তের তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান

এ দুজন হলেন—রংপুর পুলিশ লাইনের এএসআই আমির হোসেন ও তাজহাট থানার কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।

পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সাময়িক বরখাস্তের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তাঁরা ‘অপেশাদারি আচরণস্বরূপ’ শটগান থেকে ফায়ার করেন। আবু সাঈদ নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৮ জুলাই পুলিশের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১ আগস্টে আংশিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্তে আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় এই দুই পুলিশ সদস্যের ‘অপেশাদারি আচরণ’ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ওই দিনই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের নিহত হওয়ার দুই দিন পর পুলিশের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সায়ফুজ্জামান ফারুকী।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন দায়িত্ব পালনের সময় এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় অপেশাদার আচরণ করেন, যা সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনীর ‍শৃঙ্খলা পরিপন্থী। তাঁরা কর্তব্যে অবহেলা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করেছেন। তাদের সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

গত ১৬ জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত : ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আর আবু সাঈদ এক হাতে ক্রিকেট খেলার একটি স্ট্যাম্প নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সাঈদের মৃত্যু হয়। তার শরীরে রাবার বুলেটের একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে রংপুরসহ পুরো দেশজুড়ে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

এক চাকা নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করলো বিমানের ফ্লাইট, নিরাপদে ৭১ যাত্রী

রংপুরে আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় এএসআইসহ ২ পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত

প্রকাশের সময় : ০৩:২৩:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের একজন সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) ২ পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

দুজনকে সাময়িক বরখাস্তের তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান

এ দুজন হলেন—রংপুর পুলিশ লাইনের এএসআই আমির হোসেন ও তাজহাট থানার কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।

পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সাময়িক বরখাস্তের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তাঁরা ‘অপেশাদারি আচরণস্বরূপ’ শটগান থেকে ফায়ার করেন। আবু সাঈদ নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৮ জুলাই পুলিশের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১ আগস্টে আংশিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্তে আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় এই দুই পুলিশ সদস্যের ‘অপেশাদারি আচরণ’ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ওই দিনই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের নিহত হওয়ার দুই দিন পর পুলিশের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সায়ফুজ্জামান ফারুকী।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন দায়িত্ব পালনের সময় এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় অপেশাদার আচরণ করেন, যা সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনীর ‍শৃঙ্খলা পরিপন্থী। তাঁরা কর্তব্যে অবহেলা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করেছেন। তাদের সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

গত ১৬ জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত : ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আর আবু সাঈদ এক হাতে ক্রিকেট খেলার একটি স্ট্যাম্প নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সাঈদের মৃত্যু হয়। তার শরীরে রাবার বুলেটের একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে রংপুরসহ পুরো দেশজুড়ে।