চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে বাবা-মায়ের উপর অভিমান করে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে মিথি খাতুন (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী। গত দুদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা পড়ে আজ বুধবার (৫ জুন) সকাল ১০ টার দিকে মারা যায়। একমাত্র মেয়ে মিথিকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন কৃষক বাবা। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে নিয়ে যান। অবশেষে একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মিথি খাতুন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নের কাটাপোল গ্রামের দক্ষিনপাড়ার কৃষক মামুনের মেয়ে। সে পাশ্ববর্তী মাধবপুর গ্রামের বি.সি.কে.এম.পি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। দুই ভাই-বোনের মধ্যে মিথি ছিল ছোট।

এর আগে, গত ৩ জুন বকাঝকা করার কারণে বাবা-মায়ের উপর অভিমান করে ঘাসপোড়া বিষপান করে মিথি খাতুন। পরে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শারিরীক অবস্থার উন্নতি না হলে ওইদিনই যশোর জেনারেল হাসপাতালের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও উন্নতি না হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন৷ অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

আজ বুধবার সকালে পরিবারের সদস্যরা মিথিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসছিলেন৷ ফরিদপুর জেলার মধুখালি এলাকায় পৌছালে নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায় তার৷ পরে স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। মরদেহ বর্তমানে জীবননগর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুজ্জামান সেন্টু রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আমি মেয়েটির পরিবারের সাথে কথা বলে জেনেছি, মেয়েটির অতিরিক্ত মোবাইলে আসক্ত ছিল। গত ২ জুন রাতে পড়ার সময় মেয়েটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করার বাবা-মা বকাঝকা করেন। এতে অভিমান করে পরদিন সকালে বাড়িতে থাকা ঘাসপোড়া বিষপান করে মেয়েটি। এরপরই বমি শুরু হলে মেয়েটির তার পরিবারকে বিষপানের বিষয়টি জানায়। পরে দ্রুত পরিবারের সদস্যরা জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে পর্যায়ক্রমে যশোর, খুলনা ও সব শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেও অবস্থার অবনতি হতে থাকলে আজ বুধবার মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসছিলেন তারা। পরে ফরিদপুরের মধুখালিতে পৌছালে মেয়েটির মৃত্যু হয়।

মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারি কর্মকর্তা জীবননগর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামাল হোসেন পরিবারের সদস্যরা বরাত দিয়ে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, মোবাইলের প্রতি মেয়েটি আসক্ত হয়ে পড়েছিল। পড়াশোনা না করে মোবাইল ব্যবহার করতো। এ কারণে মেয়েকে বকাঝকা করে বাবা-মা। এতেই মান অভিমানে মেয়েটির বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।

এএইচ