চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হুদাপাড়া সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে আলী আকবর (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৬ জুলাই) ভোরে স্থানীয় এক যুবক বৃদ্ধকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন এবং পরিবারের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে গ্রাম্য চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং হাত-পায়ে ক্ষতস্থানগুলোতে একাধিক সেলাই দেয়া হয়।
আজ রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে আলী আকবরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তার পরিবারের সদস্যরা।
বৃদ্ধ আলী আকবর চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের মাজপাড়ার মৃত: নুর ইসলামের ছেলে।
আহত বৃদ্ধ আলী আকবর রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, খুব সকালে চা পান শেষে হুদাপাড়া সীমান্তের কাছাকাছি গেলে তিনজন বিএসএফের সদস্যরা আমাকে ধরে বেধড়ক পেটাতে থাকে। তাদেরকে বলি, আমি সীমান্ত অতিক্রম করেনি আমাকে ছেড়ে দেন, তবুও তারা আমাকে রাইফেলের সামনের অংশ দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্নস্থানে খোচাতে থাকে এবং পেটাতে থাকে। এরপর আমাকে ফেলে রেখে তারা চলে যায়।
স্ত্রী ময়না খাতুন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাতে আমার স্বামী বাড়িতে না আসলে রাতভর খোজাখুজি করেও পাওয়া যায়নি। ভোর বেলা স্থানীয় এক যুবক হুদাপাড়া সীমান্তের পাশে একটি কৃষি জমিতে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে নিয়ে এসে আমাদেরকে কাছে নিয়ে আসে। তার শরীরের পায়ে ও হাতসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। কিছুক্ষন পর স্থানীয় কুড়ুলগাছি গ্রামের হাসপাতালপাড়ার পারভিন ড্রাগ হাউজ ফার্মেসিতে ডা. আকরাম হোসেনের ( সাবেক উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার) মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়। এক হাত ও পায়ে ক্ষতস্থানে একাধিক সেলাই প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আজ রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃদ্ধ আলী আকবরের ভাইরা ভাইয়ের ছেলে তাহাজুল হোসেন বলেন, বৃদ্ধ আলী আকবর মানসিকভাবে অসুস্থ। মাঝেমধ্যেই তিনি বাড়িতে আসেন না। গতকাল শনিবার সকালে জানতে পারি হুদাপাড়া সীমান্তের কাছাকাছি চলে যাওয়ার বিএসএফ সদস্যরা রাইফেলের বাট দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছেন। পরে তাকে একটি মাঠের মধ্যে ফেলে চলে যায় তারা। স্থানীয় এক যুবক তাকে উদ্ধার করেন এবং স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। আজ উন্নত চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সিদ্দীক রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে নিশ্চিত করে বলেন, আমিও ঘটনাটি শুনেছি, বিএসএফের সদস্যরা বৃদ্ধ আলী আকবরকে বেধড়ক মারধর করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইসরাত জেরিন জেসি রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আহত অবস্থায় বৃদ্ধকে তার পরিবারের সদস্যরা জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। তার এক হাত-পায়ে ক্ষতস্থানে আগে থেকেই একাধিক সেলাই করা ছিল। স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে সেলাই করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত।
এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) অধিনায়ক নাজমুল হাসান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, তিনি মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন বলে তার পরিবারের মাধ্যমে জেনেছি। সীমান্তের কোন পিলার এবং কোন স্থানে ঘটনাটি ঘটেছে তা বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, যদিও এমন কোন ঘটনা ঘটে থাকে এটা ঠিক হয়নি। অন্যায়ভাবে কেউ কাউকে মারধর করতে পারেনা। কোন কিছু ঘটলে আইনের মাধ্যমে সমাধানে যাওয়া উচিত।
এএইচ
অর্ণব আহমেদ আশিক ও আব্দুল্লাহ আল মামুন 






















