চুয়াডাঙ্গা সদরের জাফরপুরে তেলবাহী ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের মুখোমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইজিবাইক চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুসহ আরও ৪ জন ইজিবাইকের যাত্রী। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (০৪ জুলাই) সন্ধার আগে চুয়াডাঙ্গা সদরের জাফরপুরে বিজিবি-৬ ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের অদূরে বন বিভাগের সামনে এ দূর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের কলোনীপাড়ার নূর মোহাম্মদের ছেলে ইজিবাইকচালক আরিফুল ইসলাম (২৪), সদর উপজেলার হিজলগাড়ি গ্রামের মাঝেরপাড়ার মৃত. ইরাদ শেখের মেয়ে হোটেল কর্মচারি মাছুরা খাতুন (৫০) ও চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুসলিমপাড়ার মৃত. রহম আলী মুন্সির ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী আবু তালেব মুন্সি (৬৫)।

আহতরা হলেন, চাদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার সামসুল হক গাজীর ছেলে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের কোয়ালিটি কন্টোল অফিসার দেলোয়ার গাজী (২৬), চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ছোটদুধপাতিলা গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে পিএসপি পাইপ কোম্পানির কর্মচারি মামুন হোসেন (২২), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নের হায়দারপুর গ্রামের তালবাগানপাড়ার মৃত. সোনা মিয়ার ছেলে সার ব্যবসায়ী ফাহাদ আহমেদ (২৩), ফাহাদের স্ত্রী প্রিয়া খাতুন (২০) ও তার ছয় মাসের শিশু সন্তান সাইম।

প্রত্যক্ষদর্শী রাকিব নামের এক যুবক রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে জানান, বিজিবি ক্যাম্পের অদূরে বন বিভাগের সামনে এ দূর্ঘটনা ঘটে। মূলত সেখানে রাস্তায় গাছের ডাল পড়ে থাকার কারণেই এ দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর ট্রাক চালক পালিয়ে যায়। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছে ট্রাক ও দূর্ঘটনাকবলিত ইজিবাইকটি জব্দ করে থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ট্রাকটি মেহেরপুরের। চালক কে ছিলেন তা সন্ধান করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহত মাছুরা খাতুনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ইজিবাইকটি বন বিভাগের সামনে পৌছালে চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা ঝিনাইদহমুখী তেলবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের যাত্রী মাসুরা খাতুন ও আবু তালেব মারা যান। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ইজিবাইকচালকসহ বাকি যাত্রীদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইজিবাইকচালক আরিফুল ইসলাম মারা যায়।
এদিকে, ঘটনাস্থলে নিহত দুজনের পরিচয় তাৎক্ষনিকভাবে জানা সম্ভব হয়েছিল না। প্রায় ৩ থেকে ৫ ঘন্টা পর নিহত দুজনের পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে আসেন। এরপরই তারা মরদেহ দেখে পরিচয় সনাক্ত করেন। এ সময় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের কান্নায় সদর হাসপাতাল চত্ত্বর ভারি হয়ে উঠে। নিহত তিনজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল রাত ১১টার দিকে রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, আমার ডিউটির আগে দুজনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। আমার ডিউটি শুরুর পর আহত ইজিবাইকচালক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বর্তমানে শিশুসহ আহত ৫ জন ভর্তি আছেন। তারা সবাই শঙ্কামুক্ত।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, তেলবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখী সংঘর্ষের ইজিবাইকচালক, দুই যাত্রীসহ মোট ৩ জন মারা গেছেন। ট্রাকটি ও দূর্ঘটনায়কবলিত ইজিবাইক জব্দ করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এএইচ
অর্ণব আহমেদ আশিক 






















