০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীক্ষা

অনুত্তীর্ণ প্রার্থীকে উত্তীর্ণ করে বিজ্ঞপ্তি, ফের বিতর্কে নিয়োগ কমিটি

চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে ঘিরে অনিয়ম ও স্বচ্ছতা নিয়ে বিতর্ক যেন কাটছেই না। প্রতিদিন তা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।

শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জেলার সদর ও দামুড়হুদা উপজেলার ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হওয়া পরীক্ষার আগের রাত থেকে।

রোববার (২২ জুন) রাতে পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের ঝড় উঠতে শুরু হয়। এর মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ১০টা থেকে ২০৫ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়।

পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা প্রকাশিত ফলফল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন।

এদিন নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয় জেলা সিভিল সার্জন ও জনবল নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সংশোধিত নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসার পর। ২৩/০৬/২০২৪ তারিখে প্রকাশিত ‘সিএস/চুয়া/শা-১/স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ/লিখিত পরীক্ষার ফলাফল/২০২৫/১০৭২’ স্মারক নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২২/০৬/২০২৫ তারিখে প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রাথীদের ফলাফল বিজ্ঞপ্তিতে মুদ্রণজনিত ত্রুটির কারণে রোল নম্বর ১৮১৯৩৪০৩২৬৭ এর স্থলে রোল নম্বর ১৮১৯৩৪০৩২৭৬ লিপিবদ্ধ হয়েছে। তদপ্রেক্ষিতে ১৮১৯৩৪০৩২৭৬ রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থীর পরিবর্তে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৮১৯৩৪০৩২৬৭ রোল নম্বর প্রার্থীকে ২৫/০৬/২০২৫ তারিখে বিকেল ২টা ৩০ মিনিটে মৌখিক পরীক্ষার জন্য চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

এদিকে, একজন অনুত্তীর্ণ প্রার্থীর নাম মুদ্রণজনিত ক্রটিতে বাদ পড়েছে দেখিয়ে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এই নিয়োগ পরীক্ষাকে আরও বিতর্কের মধ্যে ফেলেছে। লিখিত পরীক্ষার দিন থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই পরীক্ষা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। যা এখন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনুত্তীর্ণ প্রার্থীরাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে এই পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দাবি তুলেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৬তম গ্রেডে ‘স্বাস্থ্য সহকারী’ পদে মোট ৩৯টি শূন্য পদের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন ১৩ হাজার ৬৬৮ জন চাকরিপ্রার্থী। প্রতি পদের বিপরীতে প্রতিযোগিতা করেছেন প্রায় ৩৫০ জন। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর ৮০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। গত রোববার পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় ২০৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। যারা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

এদিকে, পরীক্ষার আগের রাতে থেকেই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রশ্ন ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরীক্ষার আগে রাতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিস খোলা রেখে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তোলা হয়, সাধারণত সন্ধ্যার পর এই কার্যালয় বন্ধ থাকার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত কেন অফিস খোলা ছিল? এছাড়া অনেক প্রার্থী অভিযোগ করেন, তাদের পরীক্ষার কেন্দ্র ও সিট প্লান দুই দফা পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। কিছু প্রার্থী অভিযোগ করেন, কেন্দ্র পরিবর্তনের বিষয়টি এসএমএসের মাধ্যমে জানানোর পরও পরীক্ষার দিন তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।

বিষয়টি নিয়ে তদন্ত দাবি করে সাধারণ নাগরিক ও ছাত্র সংগঠনগুলো। চুয়াডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র তামান্না খাতুন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তদন্তের দাবিও  জানিয়েছেন।

এসকল বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসচিব ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় বিষয়টি নিয়ে তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

জনপ্রিয়

চুয়াডাঙ্গায় মেছো বিড়াল সংরক্ষণে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা

চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীক্ষা

অনুত্তীর্ণ প্রার্থীকে উত্তীর্ণ করে বিজ্ঞপ্তি, ফের বিতর্কে নিয়োগ কমিটি

প্রকাশের সময় : ১১:৩৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে ঘিরে অনিয়ম ও স্বচ্ছতা নিয়ে বিতর্ক যেন কাটছেই না। প্রতিদিন তা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।

শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জেলার সদর ও দামুড়হুদা উপজেলার ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হওয়া পরীক্ষার আগের রাত থেকে।

রোববার (২২ জুন) রাতে পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের ঝড় উঠতে শুরু হয়। এর মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ১০টা থেকে ২০৫ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়।

পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা প্রকাশিত ফলফল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন।

এদিন নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয় জেলা সিভিল সার্জন ও জনবল নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সংশোধিত নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসার পর। ২৩/০৬/২০২৪ তারিখে প্রকাশিত ‘সিএস/চুয়া/শা-১/স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ/লিখিত পরীক্ষার ফলাফল/২০২৫/১০৭২’ স্মারক নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২২/০৬/২০২৫ তারিখে প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রাথীদের ফলাফল বিজ্ঞপ্তিতে মুদ্রণজনিত ত্রুটির কারণে রোল নম্বর ১৮১৯৩৪০৩২৬৭ এর স্থলে রোল নম্বর ১৮১৯৩৪০৩২৭৬ লিপিবদ্ধ হয়েছে। তদপ্রেক্ষিতে ১৮১৯৩৪০৩২৭৬ রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থীর পরিবর্তে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৮১৯৩৪০৩২৬৭ রোল নম্বর প্রার্থীকে ২৫/০৬/২০২৫ তারিখে বিকেল ২টা ৩০ মিনিটে মৌখিক পরীক্ষার জন্য চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

এদিকে, একজন অনুত্তীর্ণ প্রার্থীর নাম মুদ্রণজনিত ক্রটিতে বাদ পড়েছে দেখিয়ে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এই নিয়োগ পরীক্ষাকে আরও বিতর্কের মধ্যে ফেলেছে। লিখিত পরীক্ষার দিন থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই পরীক্ষা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। যা এখন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনুত্তীর্ণ প্রার্থীরাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে এই পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দাবি তুলেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৬তম গ্রেডে ‘স্বাস্থ্য সহকারী’ পদে মোট ৩৯টি শূন্য পদের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন ১৩ হাজার ৬৬৮ জন চাকরিপ্রার্থী। প্রতি পদের বিপরীতে প্রতিযোগিতা করেছেন প্রায় ৩৫০ জন। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর ৮০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। গত রোববার পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় ২০৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। যারা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

এদিকে, পরীক্ষার আগের রাতে থেকেই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রশ্ন ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরীক্ষার আগে রাতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিস খোলা রেখে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তোলা হয়, সাধারণত সন্ধ্যার পর এই কার্যালয় বন্ধ থাকার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত কেন অফিস খোলা ছিল? এছাড়া অনেক প্রার্থী অভিযোগ করেন, তাদের পরীক্ষার কেন্দ্র ও সিট প্লান দুই দফা পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। কিছু প্রার্থী অভিযোগ করেন, কেন্দ্র পরিবর্তনের বিষয়টি এসএমএসের মাধ্যমে জানানোর পরও পরীক্ষার দিন তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।

বিষয়টি নিয়ে তদন্ত দাবি করে সাধারণ নাগরিক ও ছাত্র সংগঠনগুলো। চুয়াডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র তামান্না খাতুন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তদন্তের দাবিও  জানিয়েছেন।

এসকল বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসচিব ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় বিষয়টি নিয়ে তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।