০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল

অনুরোধের পরও আসেননি চিকিৎসক, অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলায় আব্দুল মোমিন মালিতা পানু (৮০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্বজনদের অভিযোগ, রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে একাধিকবার চিকিৎসক আব্দুল কাদেরকে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। তিনি না গিয়ে ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসককে পাঠানো হয়। পরে প্রায় ২০ মিনিট পর চিকিৎসক আব্দুল কাদের ওয়ার্ডে এসে পরিক্ষা-নিরিক্ষার পর রোগী মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী রোগী ও স্বজনরা জানান, ঘটনার পর কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। চিকিৎসককের উপর চড়াও হন রোগীর স্বজনরা। পরে হাসপাতালে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বৃদ্ধ আব্দুল মোমিন মালিতা পানু চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মৃত হায়দার মালিতার ছেলে।

সোমবার (০৫ মে) রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসারত অবস্থায় বৃদ্ধ আব্দুল মোমিন মালিতার মৃত্যু হয়।

জরুরি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, অ্যাজমাজনিত শ্বাসকষ্ট ও স্টোকে আক্রান্ত হয়ে গত চারদিন আগে সদর হাসপাতালের মেডিসিন পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হন বৃদ্ধ আব্দুল মোমিন মালিতা পানু।

মৃতের বড় ছেলে মাসুদ আল মাহমুদ তুষার রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গত চারদিন যাবত বাবা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রাতে নিজে পায়ে হেটেই বাথরুমে যান। এরপর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপরই আমরা জরুরি বিভাগে এসে চিকিৎসক আব্দুল কাদেরকে একাধিবার অনুরোধ করেছি। তিনি না এসে ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসককে পাঠান। বাবার মৃত্যুর প্রায় ২০ মিনিট পর তিনি এসে মৃত ঘোষনা করেন। চিকিৎসকের অবহেলা না হলে হয়তো বাবা আজ বেঁচে থাকতেন।

চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, জরুরি বিভাগে সব সময়ই রোগীর চাপ থাকে। সব সময় ওয়ার্ডে যাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না। প্রথমে ইন্টার্ন চিকিৎসককে পাঠানো হয়, তারা রোগীর প্রাথমিক পরিস্থিতি জানালে আমরা সেই মোতাবেক চিকিৎসা দিই।

তিনি আরও বলেন, রোগীর স্বজনরা জরুরি বিভাগে এসে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন, গালিগালাজ করেছেন, এমনকি মারধরের চেষ্টা করেন। এতে আমি পুলিশ সদস্যদের সহায়তা নিতে বাধ্য হই।

এদিকে, রাত প্রায় ১১টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে আব্দুল মোমিন মালিতার মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি গোপালপুরের উদ্দেশ্যে সদর হাসপাতাল ত্যাগ করেন পরিবারের সদস্যরা।

এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা কর্মকর্তাকে (আরএমও) একাধিবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

চুয়াডাঙ্গায় মেছো বিড়াল সংরক্ষণে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল

অনুরোধের পরও আসেননি চিকিৎসক, অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১২:৪৯:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলায় আব্দুল মোমিন মালিতা পানু (৮০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্বজনদের অভিযোগ, রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে একাধিকবার চিকিৎসক আব্দুল কাদেরকে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। তিনি না গিয়ে ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসককে পাঠানো হয়। পরে প্রায় ২০ মিনিট পর চিকিৎসক আব্দুল কাদের ওয়ার্ডে এসে পরিক্ষা-নিরিক্ষার পর রোগী মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী রোগী ও স্বজনরা জানান, ঘটনার পর কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। চিকিৎসককের উপর চড়াও হন রোগীর স্বজনরা। পরে হাসপাতালে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বৃদ্ধ আব্দুল মোমিন মালিতা পানু চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মৃত হায়দার মালিতার ছেলে।

সোমবার (০৫ মে) রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসারত অবস্থায় বৃদ্ধ আব্দুল মোমিন মালিতার মৃত্যু হয়।

জরুরি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, অ্যাজমাজনিত শ্বাসকষ্ট ও স্টোকে আক্রান্ত হয়ে গত চারদিন আগে সদর হাসপাতালের মেডিসিন পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হন বৃদ্ধ আব্দুল মোমিন মালিতা পানু।

মৃতের বড় ছেলে মাসুদ আল মাহমুদ তুষার রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, গত চারদিন যাবত বাবা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রাতে নিজে পায়ে হেটেই বাথরুমে যান। এরপর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপরই আমরা জরুরি বিভাগে এসে চিকিৎসক আব্দুল কাদেরকে একাধিবার অনুরোধ করেছি। তিনি না এসে ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসককে পাঠান। বাবার মৃত্যুর প্রায় ২০ মিনিট পর তিনি এসে মৃত ঘোষনা করেন। চিকিৎসকের অবহেলা না হলে হয়তো বাবা আজ বেঁচে থাকতেন।

চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, জরুরি বিভাগে সব সময়ই রোগীর চাপ থাকে। সব সময় ওয়ার্ডে যাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না। প্রথমে ইন্টার্ন চিকিৎসককে পাঠানো হয়, তারা রোগীর প্রাথমিক পরিস্থিতি জানালে আমরা সেই মোতাবেক চিকিৎসা দিই।

তিনি আরও বলেন, রোগীর স্বজনরা জরুরি বিভাগে এসে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন, গালিগালাজ করেছেন, এমনকি মারধরের চেষ্টা করেন। এতে আমি পুলিশ সদস্যদের সহায়তা নিতে বাধ্য হই।

এদিকে, রাত প্রায় ১১টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে আব্দুল মোমিন মালিতার মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি গোপালপুরের উদ্দেশ্যে সদর হাসপাতাল ত্যাগ করেন পরিবারের সদস্যরা।

এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা কর্মকর্তাকে (আরএমও) একাধিবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।