১০:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় স্বামী-স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা: ৩ জনের ফাঁসির আদেশ

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের বিচারক মাসুদ আলী এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আলমডাঙ্গা উপজেলার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (৪২), একই গ্রামের শেখপাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫) ও মাঝেরপাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুৎ আলী (২৩)।

এছাড়া দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শাকিল হোসেন (২৩) একই গ্রামের স্কুলপাড়ার তাহাজ উদ্দীনের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিয়ে রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের স্বজনদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতন বাজারপাড়ায় চাল ব্যবসায়ী বৃদ্ধ নজির মিয়া ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন বসবাস করতেন। ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে যেকোনো সময় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা চুরির উদ্দেশ্যে বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে প্রবেশ করেন। প্রথমে বৃদ্ধ নজির মিয়াকে হাত-পা বেঁধে জবাই ও কুপিয়ে হত্যা করেন তারা। পরে তার স্ত্রীকে ঘরের ভেতর জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এরপর দম্পতির মেয়ে-জামাই অহিদুলসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের ফোন করে না পেয়ে বাড়িতে এসে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান।

পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা তালা ভেঙে দুজনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেন। ঘটনার দুদিন পর ২৫ সেপ্টম্বর নিহতের মেয়ে ডালিয়া পারভীন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শিহাব উদ্দীন নিহত দম্পতির চুরি হওয়া মোবাইলের সূত্র ধরে আসামি শাকিলকে গ্রেপ্তার করেন। সেই মোবাইলের কল লিস্ট ধরে হত্যায় সরাসরি জড়িত তিন আসামিদের গ্রেপ্তার করেন। এরপর ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আজ মঙ্গলবার এই রায় প্রদান করেন।

অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, হত্যায় সরাসরি জড়িত তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। এছাড়া নিহত দম্পতির মোবাইল চুরির অভিযোগে শাকিল হোসেনকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ওই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

One thought on “আলমডাঙ্গায় স্বামী-স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা: ৩ জনের ফাঁসির আদেশ

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

দর্শনা থানা পুলিশের অভিযানে ৬ কেজি গাজাসহ দুজন আটক

আলমডাঙ্গায় স্বামী-স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা: ৩ জনের ফাঁসির আদেশ

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৮:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের বিচারক মাসুদ আলী এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আলমডাঙ্গা উপজেলার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (৪২), একই গ্রামের শেখপাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫) ও মাঝেরপাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুৎ আলী (২৩)।

এছাড়া দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শাকিল হোসেন (২৩) একই গ্রামের স্কুলপাড়ার তাহাজ উদ্দীনের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিয়ে রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের স্বজনদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতন বাজারপাড়ায় চাল ব্যবসায়ী বৃদ্ধ নজির মিয়া ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন বসবাস করতেন। ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে যেকোনো সময় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা চুরির উদ্দেশ্যে বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে প্রবেশ করেন। প্রথমে বৃদ্ধ নজির মিয়াকে হাত-পা বেঁধে জবাই ও কুপিয়ে হত্যা করেন তারা। পরে তার স্ত্রীকে ঘরের ভেতর জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এরপর দম্পতির মেয়ে-জামাই অহিদুলসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের ফোন করে না পেয়ে বাড়িতে এসে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান।

পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা তালা ভেঙে দুজনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেন। ঘটনার দুদিন পর ২৫ সেপ্টম্বর নিহতের মেয়ে ডালিয়া পারভীন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শিহাব উদ্দীন নিহত দম্পতির চুরি হওয়া মোবাইলের সূত্র ধরে আসামি শাকিলকে গ্রেপ্তার করেন। সেই মোবাইলের কল লিস্ট ধরে হত্যায় সরাসরি জড়িত তিন আসামিদের গ্রেপ্তার করেন। এরপর ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আজ মঙ্গলবার এই রায় প্রদান করেন।

অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, হত্যায় সরাসরি জড়িত তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। এছাড়া নিহত দম্পতির মোবাইল চুরির অভিযোগে শাকিল হোসেনকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ওই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।