০৯:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পায়ে হেঁটে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করছেন চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার্থী আকাশ

আকাশ আলী চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার রামদিয়া গ্রামের মো. শরীফুল ইসলামের ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার খাসকররা ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী।

দেশ ভ্রমণের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা জানতে কথা হয় আকাশ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, অনেকে সাইকেলে, মোটরসাইকেলে দেশ ভ্রমণ করেন। কিন্তু আমি ব্যতিক্রম হিসেবে হেঁটে দেশ ভ্রমণের উদ্দেশে বের হয়। সাইকেল বা মোটরসাইকেলে ঘুরলে পর্যটন স্পটগুলো দেখা যায় কিন্তু গ্রাম দেখা যেত না। আমি হেঁটে শহরেও যাচ্ছি, গ্রামেও যাচ্ছি। গ্রামের মানুষদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথাও হচ্ছে।

আকাশ আলী বলেন, আমি গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর নিজ জেলা চুয়াডাঙ্গা থেকে ৬৪ জেলা ভ্রমণের উদ্দেশে বের হই মাত্র ৩ হাজার টাকা নিয়ে। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর মাত্র ১২ দিনে ৯ জেলা ঘুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে আমি আবার চুয়াডাঙ্গায় ফিরে যায়। কিন্তু তিনি মৌখিক অনুমতি দিলেও লিখিত কোনো অনুমতি দেননি। পরে পুনরায় আবার ১ ডিসেম্বর থেকে ৬৪ জেলা ভ্রমণের উদ্দেশে যাত্রা করি রংপুর জেলা থেকে। আজ শুক্রবার ৬৩ নাম্বার জেলা রাজবাড়ীতে এসেছি। এই ৬৩ জেলা ঘুরতে আমার ৯৩ দিন সময় লেগেছে। আজ শনিবার মাগুরা শ্রীপুর উপজেলায় থাকবো। পরের দিন ঝিনাইদহ জেলা ভ্রমণ দিয়ে আমার ৬৪ জেলা ভ্রমণ শেষ হবে।

তিনি আরও বলেন, এই ৬৩ জেলা ভ্রমণের জন্য আমাকে ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি হাঁটতে হয়েছে। পায়ে হেঁটে চলার মুহূর্তে আমার সঙ্গে অনেকেরই দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। তারা আমাকে সাদরে গ্রহণ করছেন। বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। আমি চলার মুহূর্তে সবাইকে মাদক থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। কারণ আমি ‘মাদক ছাড়ো দক্ষ হও, সমৃদ্ধির পথে আগাও’ এই স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করি।

ট্রাভেলার আকাশ আলী বলেন, ৬৪ জেলা ভ্রমণে চলার পথে আমাকে প্রত্যেক জেলার জেলা প্রশাসন সাপোর্ট করেছে। চলতি পথে অনেকেই আমাকে একবেলা খাইয়িছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক আমাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন, থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাদের সহযোগিতার মাধ্যমেই আমি আজ এতদূরে আসতে পেরেছি।

তিনি বলেন, প্রথমত আমি যখন বের হই তখন পরিবারের কাউকে জানাইনি। ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হই। কারণ পরিবার তো চাইবে না এতদিন বাড়ির বাইরে থাকা। তাই আমি কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি। পরে আস্তে আস্তে সবাই জেনেছে। জানার পর পরিবার থেকে আমাকে সাপোর্ট করেছে। আমার বাংলাদেশ ঘোরা প্রায় শেষের দিকে। এখন আমার ইচ্ছা বাইরের দেশ ভ্রমণের।

যাত্রার শেষ পর্যায়ে এসে কেমন লাগছে জানতে চাইলে আকাশ আলী বলেন, এটি তার জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা। চলার পথে সবার সহযোগিতাকে স্মরণ করে তিনি বলেন, মানুষের কাছে যে পরিমাণ সহযোগিতা আশা করেছি, তার চেয়ে অনেক বেশি সহযোগিতা পেয়েছি। এজন্য সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

এদিকে ট্রাভেলার মো. আকাশ আলী রাজবাড়ী জেলার দৈনিক মাতৃকণ্ঠ কার্যালয়ে আসলে পত্রিকার সম্পাদক খোন্দকার আব্দুল মতিন, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী আব্দুল কুদ্দুস বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম হিরন তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে উৎসাহ দেন।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

চুয়াডাঙ্গায় মা ক্লিনিকের নার্স বিপাশার লা শ উদ্ধার

পায়ে হেঁটে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করছেন চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার্থী আকাশ

প্রকাশের সময় : ০৪:৫১:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আকাশ আলী চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার রামদিয়া গ্রামের মো. শরীফুল ইসলামের ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার খাসকররা ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী।

দেশ ভ্রমণের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা জানতে কথা হয় আকাশ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, অনেকে সাইকেলে, মোটরসাইকেলে দেশ ভ্রমণ করেন। কিন্তু আমি ব্যতিক্রম হিসেবে হেঁটে দেশ ভ্রমণের উদ্দেশে বের হয়। সাইকেল বা মোটরসাইকেলে ঘুরলে পর্যটন স্পটগুলো দেখা যায় কিন্তু গ্রাম দেখা যেত না। আমি হেঁটে শহরেও যাচ্ছি, গ্রামেও যাচ্ছি। গ্রামের মানুষদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথাও হচ্ছে।

আকাশ আলী বলেন, আমি গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর নিজ জেলা চুয়াডাঙ্গা থেকে ৬৪ জেলা ভ্রমণের উদ্দেশে বের হই মাত্র ৩ হাজার টাকা নিয়ে। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর মাত্র ১২ দিনে ৯ জেলা ঘুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে আমি আবার চুয়াডাঙ্গায় ফিরে যায়। কিন্তু তিনি মৌখিক অনুমতি দিলেও লিখিত কোনো অনুমতি দেননি। পরে পুনরায় আবার ১ ডিসেম্বর থেকে ৬৪ জেলা ভ্রমণের উদ্দেশে যাত্রা করি রংপুর জেলা থেকে। আজ শুক্রবার ৬৩ নাম্বার জেলা রাজবাড়ীতে এসেছি। এই ৬৩ জেলা ঘুরতে আমার ৯৩ দিন সময় লেগেছে। আজ শনিবার মাগুরা শ্রীপুর উপজেলায় থাকবো। পরের দিন ঝিনাইদহ জেলা ভ্রমণ দিয়ে আমার ৬৪ জেলা ভ্রমণ শেষ হবে।

তিনি আরও বলেন, এই ৬৩ জেলা ভ্রমণের জন্য আমাকে ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি হাঁটতে হয়েছে। পায়ে হেঁটে চলার মুহূর্তে আমার সঙ্গে অনেকেরই দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। তারা আমাকে সাদরে গ্রহণ করছেন। বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। আমি চলার মুহূর্তে সবাইকে মাদক থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। কারণ আমি ‘মাদক ছাড়ো দক্ষ হও, সমৃদ্ধির পথে আগাও’ এই স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করি।

ট্রাভেলার আকাশ আলী বলেন, ৬৪ জেলা ভ্রমণে চলার পথে আমাকে প্রত্যেক জেলার জেলা প্রশাসন সাপোর্ট করেছে। চলতি পথে অনেকেই আমাকে একবেলা খাইয়িছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক আমাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন, থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাদের সহযোগিতার মাধ্যমেই আমি আজ এতদূরে আসতে পেরেছি।

তিনি বলেন, প্রথমত আমি যখন বের হই তখন পরিবারের কাউকে জানাইনি। ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হই। কারণ পরিবার তো চাইবে না এতদিন বাড়ির বাইরে থাকা। তাই আমি কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি। পরে আস্তে আস্তে সবাই জেনেছে। জানার পর পরিবার থেকে আমাকে সাপোর্ট করেছে। আমার বাংলাদেশ ঘোরা প্রায় শেষের দিকে। এখন আমার ইচ্ছা বাইরের দেশ ভ্রমণের।

যাত্রার শেষ পর্যায়ে এসে কেমন লাগছে জানতে চাইলে আকাশ আলী বলেন, এটি তার জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা। চলার পথে সবার সহযোগিতাকে স্মরণ করে তিনি বলেন, মানুষের কাছে যে পরিমাণ সহযোগিতা আশা করেছি, তার চেয়ে অনেক বেশি সহযোগিতা পেয়েছি। এজন্য সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

এদিকে ট্রাভেলার মো. আকাশ আলী রাজবাড়ী জেলার দৈনিক মাতৃকণ্ঠ কার্যালয়ে আসলে পত্রিকার সম্পাদক খোন্দকার আব্দুল মতিন, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী আব্দুল কুদ্দুস বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম হিরন তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে উৎসাহ দেন।