১১:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৯ বছর আগে জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক হাবিবুরকে হত্যাচেষ্টা :

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক হাবিবুর রহমান সাদিদকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনার ৯ বছর পর হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) মধ্যরাতে হাবিবুর রহমান সাদিদি বাদি হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনকে প্রধান আসামী করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১০/১২ জনকে আজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামীরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অনিক জোয়াদ্দার (৩৫), শহরের গুলশান পাড়ার মৃত সুন্নার ছেলে গালিব (৪০), মসজিদ পাড়ার ইদু শেখের ছেলে রেজু, হাসপাতালপাড়ার (কলেজপাড়া) মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শুভ (৩৫), সহ ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদ (৪৫) চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা কাউন্সিল পাড়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবসা করেন। এই ব্যবসা শুরু করার সময় থেকেই তৎকালীন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। চাঁদা দাবি করছিলেন।

২০১৫ সালের ১০ই আগস্ট সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা শহরে ব্যবসা করতে হলে প্রতি বছরে এক লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা। ওই দিন আমি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে হাত পা ধরে মাফ চাই। ওই টাকায় আসামীরা সন্তুষ্ট না হয়ে আরো ৫০ হাজার টাকার দাবী করে আমার উপরে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।

টাকা দিতে অস্বীকার করায় আসামীরা ২০১৫ সালের ১৭ তারিখ রাত সাড়ে নয়টার দিকে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের নির্দেশে বাড়িয়ে এসে সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি অনিক জোয়ার্দ্দারের হাতে থাকা পিস্তল উচিয়ে গুলি করতে উদ্যত হয়।

আসামী গালিব চাইনিজ হাত কুড়াল দিয়া আমাকে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার মাথা লক্ষ করিয়া স্বজোরে কোপ মারে। গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, যাতে ৩০টি সেলাই লাগে। আসামী রেজু খুন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র চাপাতি দিয়ে আমার মাথা লক্ষ করে আঘাত করে। আঘাতটি ডান হাত দিয়া ঠেকালে ডান হাতে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। যাতে ২৫টি সেলাই দিতে হয়।

উক্ত আঘাতে মাটিতে পড়ে গেলে শুভ ও লিয়াকত তাদের কাছে থাকা চাইনিজ হাত কুড়াল দিয়ে দুই পায়ে আঘাত করে। গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, যাতে ৫০টির উপর সেলাই দেন চিকিৎসক।

ভুক্তভোগী জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক হাবিবুর রহমান সাদিদ রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, ঘটনার পর আমার আঘাত গুরুতর হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চিকিৎসা শেষে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ১নং আসামী রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন তৎকালীন পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তাহার প্রভাবে থানা কর্তৃপক্ষ এজাহার নিতে অস্বীকার করেন। এবং আমি সন্ত্রাসীদের হুমকিতে দীর্ঘদিন এজাহার দায়ের করিতে পারিনি। বর্তমানে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করলাম।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে মামলা দায়ের করেছেন হাবিবুর রহমান সাদিদ৷ শনিবার বিকেল পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করা যায়নি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

দর্শনা থানা পুলিশের অভিযানে ৬ কেজি গাজাসহ দুজন আটক

৯ বছর আগে জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক হাবিবুরকে হত্যাচেষ্টা :

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশের সময় : ০৬:৩১:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক হাবিবুর রহমান সাদিদকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনার ৯ বছর পর হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) মধ্যরাতে হাবিবুর রহমান সাদিদি বাদি হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনকে প্রধান আসামী করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১০/১২ জনকে আজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামীরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অনিক জোয়াদ্দার (৩৫), শহরের গুলশান পাড়ার মৃত সুন্নার ছেলে গালিব (৪০), মসজিদ পাড়ার ইদু শেখের ছেলে রেজু, হাসপাতালপাড়ার (কলেজপাড়া) মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শুভ (৩৫), সহ ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদ (৪৫) চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা কাউন্সিল পাড়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবসা করেন। এই ব্যবসা শুরু করার সময় থেকেই তৎকালীন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। চাঁদা দাবি করছিলেন।

২০১৫ সালের ১০ই আগস্ট সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা শহরে ব্যবসা করতে হলে প্রতি বছরে এক লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা। ওই দিন আমি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে হাত পা ধরে মাফ চাই। ওই টাকায় আসামীরা সন্তুষ্ট না হয়ে আরো ৫০ হাজার টাকার দাবী করে আমার উপরে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।

টাকা দিতে অস্বীকার করায় আসামীরা ২০১৫ সালের ১৭ তারিখ রাত সাড়ে নয়টার দিকে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের নির্দেশে বাড়িয়ে এসে সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি অনিক জোয়ার্দ্দারের হাতে থাকা পিস্তল উচিয়ে গুলি করতে উদ্যত হয়।

আসামী গালিব চাইনিজ হাত কুড়াল দিয়া আমাকে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার মাথা লক্ষ করিয়া স্বজোরে কোপ মারে। গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, যাতে ৩০টি সেলাই লাগে। আসামী রেজু খুন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র চাপাতি দিয়ে আমার মাথা লক্ষ করে আঘাত করে। আঘাতটি ডান হাত দিয়া ঠেকালে ডান হাতে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। যাতে ২৫টি সেলাই দিতে হয়।

উক্ত আঘাতে মাটিতে পড়ে গেলে শুভ ও লিয়াকত তাদের কাছে থাকা চাইনিজ হাত কুড়াল দিয়ে দুই পায়ে আঘাত করে। গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, যাতে ৫০টির উপর সেলাই দেন চিকিৎসক।

ভুক্তভোগী জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক হাবিবুর রহমান সাদিদ রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, ঘটনার পর আমার আঘাত গুরুতর হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চিকিৎসা শেষে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ১নং আসামী রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন তৎকালীন পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তাহার প্রভাবে থানা কর্তৃপক্ষ এজাহার নিতে অস্বীকার করেন। এবং আমি সন্ত্রাসীদের হুমকিতে দীর্ঘদিন এজাহার দায়ের করিতে পারিনি। বর্তমানে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করলাম।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে মামলা দায়ের করেছেন হাবিবুর রহমান সাদিদ৷ শনিবার বিকেল পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করা যায়নি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।