চুয়াডাঙ্গার কৃষক সমাজের আস্থা ও জীবন-জীবিকার সঙ্গে প্রতারণা করে আবারও আলোচনায় এসেছে সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া গ্রামের বটতলায় অবস্থিত মেসার্স কামরুল ট্রেডার্স। ভেজাল সার বিক্রির দায়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. কামরুল হাসানকে এবার এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়।
এর আগে গত ২৪ আগস্ট একই প্রতিষ্ঠানের গুদামে অভিযান চালিয়ে আট বস্তা বাংলা টিএসপি সার নকল সন্দেহে জব্দ করা হয় এবং পরীক্ষার জন্য সদর উপজেলা কৃষি অফিসে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় ভেজালের প্রমাণ মেলায় আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আবারও অভিযান চালানো হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত চলা এ অভিযানে ভেজাল সার বিক্রির অপরাধে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এর আগে গত ২৪ আগস্ট কামরুল ট্রেডার্স প্রতিষ্ঠানে টিএসপি সার ১ হাজার ৩৫০ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার ৮৫০ টাকা এবং টিএসপি (বাংলা) ১ হাজার ৩৫০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল। একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ কীটনাশকও মজুত রাখা হয়েছিল। এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইনে প্রতিষ্ঠানটির মালিককে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সময় প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ বস্তা বাংলা টিএসপি সার নকল সন্দেহে জব্দ করা হয়েছিল এবং পরীক্ষার জন্য সদর উপজেলা কৃষি অফিসে পাঠানো হয়েছিল। তা নকল সার বলে প্রমানিত হয়েছে৷
অভিযানের সময় বাজারের অন্যান্য সার-বীজ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়—কোনো প্রতিষ্ঠানই সারের মূল্য তালিকা হালনাগাদ ছাড়া বিক্রি করতে পারবে না, নির্ধারিত মূল্যের বেশি নিতে পারবে না এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ও মানহীন সার বা কীটনাশক বিক্রির মতো অপরাধ করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান। তার সঙ্গে ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল, ক্যাব প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি টিম।
অভিযান শেষে সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান বলেন, “ভেজাল সার শুধু কৃষকের ক্ষতি নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অবস্থান স্পষ্ট—জিরো টলারেন্স। কৃষকের স্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
স্থানীয় কৃষকরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে জানান, নকল সার ব্যবহার করলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়, ফসল কমে যায় এবং কৃষক চরম ক্ষতির মুখে পড়ে। তাই প্রশাসনের এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ কৃষকদের সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। এ ধরনের অভিযান নিয়মিত হলে বাজারে সারের অনিয়ম, ভেজাল এবং অতিরিক্ত দামের দৌরাত্ম্য অনেকটাই কমে যাবে।
এএইচ
নিজস্ব প্রতিবেদক 






















