চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অসহায় রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল রাসেদ (২৬) নামের এক যুবক। কখনো রক্ত পরীক্ষা, কখনো ভিন্ন রোগ নির্ণয়ের অজুহাত দেখিয়ে সাধারণ রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিত টাকা।
অবশেষে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের ভেতর থেকে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতায় স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
আটক প্রতারক রাসেদ চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানাধীন দলকা লক্ষীপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।

অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে রোগীর ভিড়কে কাজে লাগিয়ে সে নিরীহ ও অসহায় রোগীদের টার্গেট বানাত। হাসপাতালের ভেতরে অবাধে ঘোরাফেরা করে নিজেকে স্টাফ বা পরীক্ষাকর্মী পরিচয় দিয়ে রোগীদের কাছে বিভিন্ন পরীক্ষার কথা বলে টাকা আদায় করত। টাকা নেওয়ার পর আর তাকে খুঁজে পাওয়া যেত না।

ভুক্তভোগী সাইদ নামের এক ব্যক্তি জানান, “গত পরশুদিন আমার মা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। তখন রাসেদ আমার মায়ের কাছে গিয়ে বলে, আমার সঙ্গে চলেন কম খরচে পরীক্ষা করে দেব। বিশ্বাস করে মা তাকে ৫০০ টাকা দেন। এরপর সে উধাও হয়ে যায়। অনেক খুঁজেও আর তাকে পাওয়া যায়নি।” তিনি আরও বলেন, “শুধু আমার মা নন, আরও কয়েকজন রোগীর সঙ্গেও একইভাবে প্রতারণা করেছে। তাই আমরা কয়েকদিন ধরে নজর রাখছিলাম এবং অবশেষে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলতে সক্ষম হই।”

ভুক্তভোগীরা জানান, কয়েকদিন আগেও একই কৌশলে একাধিক রোগীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় রাসেদ। বিশেষ করে গরিব ও অসহায় রোগীদেরকে ফাঁদে ফেলে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল সে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, “আটককৃত রাসেদ বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করেননি, তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে এমন প্রকাশ্য প্রতারণার ঘটনায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের মতে, হাসপাতালে প্রতিদিন কয়েক’শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। অথচ এর ভেতরেই প্রতারণার এ ঘটনা ঘটায় রোগীদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতন মহলের দাবি করেছেন, শুধু রাসেদ নয়—এ ধরনের প্রতারক চক্র সক্রিয় থাকতে পারে। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে আর কোনো রোগী প্রতারণার শিকার না হয়।
এএইচ
অর্ণব আহমেদ আশিক 






















