চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চাকরি প্রার্থীরা।
আজ রোববার (৬ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন তারা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা জানায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, গত ২০ জুন চুয়াডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য সহকারী পদের নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে। পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস, অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ দেখিয়ে চূড়ান্ত করা ও এক এলাকার প্রার্থীকে আরেক এলাকায় মনোনীত করার মতো অনিয়ম দেখা গেছে। অতিলম্বে নিয়োগ পরিক্ষা বাতিল করার দাবি জানান তারা।
তামান্না নামের এক প্রার্থী বলেন, আমরা বিগত দিন দেখেছি পরীক্ষা কেন্দ্রে অনুপস্থিত থাকা প্রার্থী চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে। আমরা চাই সুস্থ তদন্ত হোক, নিয়োগ বাতিল হোক ও পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হোক। নিয়োগ স্থগিত না হলে আমরা আমরণ অনশন করবো। প্রয়োজনে হাইকোর্টে রিট করবো।
সবুজ নামের আরেক প্রার্থী বলেন, গত ২০ শে জুন চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগের যে লিখিত পরীক্ষা হয়েছিল, এই প্রশ্নপত্র আগের রাতেই ফাঁস হয়েছিল। সেই রাতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের কার্যালয় রাত তিনটা পর্যন্ত খোলা ছিল। আমরা দেখেছি বিভিন্ন কেন্দ্রে যারা অনুপস্থিত ছিল তাদেরকেও চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়েছে।। একান্তই ভাইভা পরিক্ষা নেয়া হয়ে এক প্রার্থীর। আগামীকাল সোমবার তাদের যোগদানের তারিখ, আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক। এই নিয়োগ স্থগিত করে আবার নতুন নিয়োগ দেয়া হোক।
রাকিবুল ইসলাম নামের আরেক প্রার্থী বলেন ২০ জুন যে পরীক্ষা হয়েছিল সেটার দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছেল। এই পরীক্ষার যে চূড়ান্ত নিয়োগ সেটা স্থগিত রেখে এর সুষ্ঠু তদন্ত করার দাবী জানাচ্ছি। জুলাইয়ে আমরা যে আন্দোলন করেছি সেটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে করেছিলাম। পরবর্তীতে এখনো পর্যন্ত দুর্নীতি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এখানে যারা মেধাবী তারা চাকরি পাচ্ছে না। যারা অনুপস্থিত ছিল, পরিক্ষা দেয়নি তারা চাকরি পাচ্ছে। তারা টাকার মাধ্যমে চাকরি পেয়ে যাচ্ছে। আমরা এই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল চাই, সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দীনের প্রত্যাহার চাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
জানা গেছে, গত ২০ জুন চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে স্বাস্থ্য সহকারী পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৩৯টি পদের বিপরীতে আবেদন করেন ১৩ হাজার ৬৬৮ জন। তবে পরীক্ষায় অংশ নেন চার হাজার ৮৭৪ জন।
প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, পরীক্ষার আগের দিন ১৯ জুন রাতভর খোলা ছিল সিভিল সার্জনের কার্যালয়। এ সময় কিছু পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়। শুধু তাই নয়, ২২ জুন লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও পরিবর্তন আনা হয় পরদিন। এতে দেখা যায়, পরীক্ষায় অনুপস্থিত কিছু পরীক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হয়েছেন।
নিয়োগ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাদী জিয়া উদ্দীন আহমেদের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার হয়। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য-সচিব ডা. হাদী জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, দূর্নীতির কোন সুযোগ নেই। প্রশ্ন ফাঁসের যে অভিযোগ এতো দিন পর কেন করছে তারা? আমার জানামতে প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। শতভাগ স্বচ্ছভাবে নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এএইচ
নিজস্ব প্রতিবেদক 























