এস এম সাইফুল ইসলাম
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান গাওহারীর মা ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তবে অত্যন্ত বেদনাদায়ক বিষয় হলো, ইন্তেকালের সময় তিনি ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে অবস্থান করছিলেন। ফলে মমতাময়ী মায়ের শেষবারের মতো দর্শন, স্পর্শ কিংবা জানাজায় অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি তাঁর। দাফন কার্যেও অনুপস্থিত থাকতে হয়েছে তাঁকে, যা তাঁর ও পরিবারের জন্য গভীর শোকের বিষয়।
আজ (১৬ মার্চ) রবিবার দুপুর ২টায় জীবননগরের সদরপাড়া গোরস্তান সংলগ্ন ময়দানে মরহুমার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শত শত আলেম, ছাত্র ও সাধারণ মুসল্লির অংশগ্রহণে জানাজা সম্পন্ন হয়। এতে ইমামতি করেন মরহুমার ছোট ছেলে মাওলানা সাজিদুর রহমান।
পরিবারের পক্ষ থেকে মাওলানা গাওহারীর ভাগ্নী জামাই জাহিদ বিন ইউসুফ রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে জানান, মাওলানা গাওহারীর মা মরহুমা ত্বহুরা বেগম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। হঠাৎ আজ (১৬ মার্চ) রবিবার সাহরির সময় শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাঁকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে (সাড়ে ৭ টার দিকে) মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
মায়ের ইন্তেকালের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে মাওলানা গাওহারী লিখেন, “আমার সবচেয়ে দরদের জিনিস আমার মমতাময়ী মা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। শেষ দেখার সুযোগটাও আমার হলো না। আমার সাথে শেষ কথা হলো ফোনে। আমি মক্কা থেকে ফোন দিলাম, মা বললেন, ‘খোকা, আমার শরীরটা ভালো না; তবে তুমি টেনশন করো না, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ আমি বললাম, ‘তুমি ও চিন্তা করো না, আমি তোমার জন্য কা’বার হেরেমে, রাসুলের রওজার সামনে বসে দোয়া করব।’ এর মধ্যে তুমি আর থাকতে পারলে না, আমার আসার আগেই চলে গেলে। আমি এখন কার সাথে দেখা করতে যাব? আমার দুনিয়া যে অন্ধকার হয়ে গেল!”
মায়ের ইন্তেকালের বিষয়ে জানতে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করলে মাওলানা গাওহারী রেডিও চুয়াডাঙ্গাকে জানান, মায়ের ইন্তেকালের সংবাদ শুনার মুহূর্তে তিনি মসজিদে নববীতে অবস্থান করছিলেন। একথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এরপর আর কথা বলতে পারেননি। আগামীকাল দেশে ফেরার কথা রয়েছে এই হেফাজত নেতার।
মাওলানা গাওহারীর মায়ের ইন্তেকালে শোক জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুস সামাদ, চুয়াডাঙ্গা জেলা উলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি জুনাইদ আল হাবিবী, সম্মিলিত উলামা কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাওলানা বশির আহমাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা জুবায়ের খাঁন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারি তুষার ইমরান সরকারসহ আরও অনেকে।