০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেলায় পদদলিত হয়ে প্রায় ৪০ জন নিহত

ভারতের উত্তরপ্রদেশে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ জমায়েত কুম্ভমেলায় মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে পদদলনের ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশের তিনটি সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, পদদলনের ঘটনার পর নিকটবর্তী হাসপাতালের মর্গে প্রায় ৪০টি মরদেহ নিয়ে আসা হয়।

এরআগে বেসরকারি সূত্র জানায়, সেখানে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অনেকে।

তবে ভারত সরকার আহত-নিহতের সংখ্যা লুকানোর চেষ্টা করছে। তারা বিকেল পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আহত ও নিহতদের সংখ্যা প্রকাশ করেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

শ্বেতা ত্রিপাঠী নামের এক নারী বলেছেন, “আমরা মানুষকে পড়ে যেতে দেখেছি। আমরা সামনে গিয়ে দেখি চারদিকে কাপড়, মানুষের দেহ, তাদের ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিস পড়ে আছে। বিষয়টি এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেলো, আমি আর এটি নিতে না পেরে কান্না শুরু করি। সৌভাগ্যক্রমে আমার দলের কেউ আহত হননি। আমরা সবাই নিরাপদ আছি। কিন্তু আমি আর কখনো কুম্ভমেলায় আসব না।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা শিশু ও আত্মীয়দের তাদের প্রিয় মানুষদের মরদেহের পাশে কাঁদতে দেখেছেন।
কুম্ভমেলায় পুরো ভারত থেকে কোটি কোটি মানুষ অংশ নেন। সেখানে পবিত্র পানিতে ডুব দেন তারা। এই মেলায় হাজার হাজার হিন্দু সন্যাসী অবস্থান করেন। বলা হয়ে থাকে, হিন্দুদের সবচেয়ে বড় গণজমায়েত এটি।

সহস্রাব্দ প্রাচীন এই কুম্ভ মেলা গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর মোহনায় অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে পূণ্য লাভের আশায় হাজার হাজার মানুষ একসাথে স্নান করেন। হিন্দু ধর্মালম্বীরা মনে করেন গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতীর পবিত্র জলে স্নান করে মানুষ পাপ থেকে মুক্ত হয়। তীর্থযাত্রীরা সূর্যোদয়ের আগে পবিত্র ঠান্ডা পানিতে স্নান শুরু করেন। এবারের মেলায় ৪০ কোটি মানুষ অংশ নেবেন বলে ধারণা আয়োজকদের।

প্রতি ১২ বছর পরপর পর কুম্ভমেলা হয়ে থাকে। আর ১৪৪ বছর অন্তর হয় মহাকুম্ভ মেলা। ধারণা করা হয়, এটি প্রায় ৮০০ বছরের পুরোনো একটি ঐতিহ্য।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জনপ্রিয়

গণ–অভ্যুত্থানের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ

মেলায় পদদলিত হয়ে প্রায় ৪০ জন নিহত

প্রকাশের সময় : ০৬:৫৫:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

ভারতের উত্তরপ্রদেশে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ জমায়েত কুম্ভমেলায় মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে পদদলনের ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশের তিনটি সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, পদদলনের ঘটনার পর নিকটবর্তী হাসপাতালের মর্গে প্রায় ৪০টি মরদেহ নিয়ে আসা হয়।

এরআগে বেসরকারি সূত্র জানায়, সেখানে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অনেকে।

তবে ভারত সরকার আহত-নিহতের সংখ্যা লুকানোর চেষ্টা করছে। তারা বিকেল পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আহত ও নিহতদের সংখ্যা প্রকাশ করেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

শ্বেতা ত্রিপাঠী নামের এক নারী বলেছেন, “আমরা মানুষকে পড়ে যেতে দেখেছি। আমরা সামনে গিয়ে দেখি চারদিকে কাপড়, মানুষের দেহ, তাদের ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিস পড়ে আছে। বিষয়টি এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেলো, আমি আর এটি নিতে না পেরে কান্না শুরু করি। সৌভাগ্যক্রমে আমার দলের কেউ আহত হননি। আমরা সবাই নিরাপদ আছি। কিন্তু আমি আর কখনো কুম্ভমেলায় আসব না।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা শিশু ও আত্মীয়দের তাদের প্রিয় মানুষদের মরদেহের পাশে কাঁদতে দেখেছেন।
কুম্ভমেলায় পুরো ভারত থেকে কোটি কোটি মানুষ অংশ নেন। সেখানে পবিত্র পানিতে ডুব দেন তারা। এই মেলায় হাজার হাজার হিন্দু সন্যাসী অবস্থান করেন। বলা হয়ে থাকে, হিন্দুদের সবচেয়ে বড় গণজমায়েত এটি।

সহস্রাব্দ প্রাচীন এই কুম্ভ মেলা গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর মোহনায় অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে পূণ্য লাভের আশায় হাজার হাজার মানুষ একসাথে স্নান করেন। হিন্দু ধর্মালম্বীরা মনে করেন গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতীর পবিত্র জলে স্নান করে মানুষ পাপ থেকে মুক্ত হয়। তীর্থযাত্রীরা সূর্যোদয়ের আগে পবিত্র ঠান্ডা পানিতে স্নান শুরু করেন। এবারের মেলায় ৪০ কোটি মানুষ অংশ নেবেন বলে ধারণা আয়োজকদের।

প্রতি ১২ বছর পরপর পর কুম্ভমেলা হয়ে থাকে। আর ১৪৪ বছর অন্তর হয় মহাকুম্ভ মেলা। ধারণা করা হয়, এটি প্রায় ৮০০ বছরের পুরোনো একটি ঐতিহ্য।