চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুরে স্বপন মালিতার বিরুদ্ধে দলকা বিলের সরকারি রাস্তায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে গভীর গর্ত করার অভিযোগ করেছে গ্রামবাসী। গ্রামবাসীদের পক্ষে ওসমান গণি বাদী হয়ে স্বপন মালিতার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগও করেছেন।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!বুধবার (১ মে) স্বপন মালিতা উপস্থিত থেকে গ্রামবাসীদের উপেক্ষা করে রাস্তায় গর্ত করেন। নিস্তার পেতে পরদিন দুপুরে গ্রামবাসী একত্র হয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিনে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের মৃত খোকন মালিতার ছেলে স্বপন মালিতা গ্রামবাসীর ভোগান্তির কথা চিন্তা না করে সরকারি রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে তিন থেকে চার ফুট গভীর গর্ত খনন করেছেন।
এতে বৃষ্টির সময় স্রোতে চলাচলের রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাটি দিয়ে গ্রামের দুইশর অধিক পরিবার চলাচল করে। মাঠের ফসল ঘরে তোলার পথও এ রাস্তাটি। স্বপন মালিতা গ্রামের কারো কথাও তোয়াক্কা করে না।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক বাবর আলী বলেন, ‘আমি হয়ে পর্যন্ত দেখছি এই রাস্তা দিয়ে আমার বাপ-দাদারা মাঠের ফসল নিয়ে আসে। এমন তো কখনও দেখিনি রাস্তায় পর্গার দিতে এবার দেখলাম। ক্ষমতার জোরে এমন কাজ করছে। রাস্তাটি যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে আমরা মাঠের ফসল ঘরে তুলব কী করে আর গ্রামের সবাই চলাচল করতে কোথা দিয়ে। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
বৃদ্ধ কৃষক নাজির উদ্দীন বলেন, ‘এই রাস্তাটি পাকিস্তান আমল থেকে আছে। এত দিন কেউ সহস পেল না, আর স্বপন মালিতা এসে গর্ত কেটেছে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এমন কাজ করায় তার শাস্তি হওয়া উচিত।’ আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমরা স্বপন মালিতাকে বারবার নিষেধ করার পরও তিনি কোনো কথা না শুনে রাস্তায় পর্গার কেটেছে। গ্রামবাসী নিজেদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দারস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসক স্যার এই ভোগান্তি থেকে গ্রামবাসীকে উদ্ধার করবেন এই আশা ব্যক্ত করছি।’
এ বিষয়ে জানতে স্বপন মালিতার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনে রিসিভ করেননি।
জুড়ানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, স্বপন মালিতার এমন কাজ করা ঠিক হয়নি। রাস্তার পাশে পর্গার কাটলে রাস্তা থাকে না। বৃষ্টি হলেই রাস্তা ভেঙে চলে যাবে গর্তে।
জুড়ানপুর ইউনিয়ন (ভূমি) কর্মকর্তা সাদ আহাম্মেদ বলেন, ‘দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা স্বপন মালিতার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে গ্রামে যেয়েও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস বলেন, ‘এমন ঘটনা শুনার পর স্বপন মালিতা পালিয়েছে। উপজেলা নির্বাচনের পর ভূমি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জমি মাপা হবে। তিনি দোষী হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে সহকারী কমিশনারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এএইচ